এ যাত্রায় টিকে গেলেন থেরেসা মে

0

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ এ যাত্রায় টিকে গেলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে পার্লামেন্টে বিপুল ব্যবধানে পরাজয়ের পর বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে কোনোমতে টিকে গেছে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সরকার।

গত মঙ্গলবার ব্রেক্সিট ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর আনা একটি প্রস্তাব ২৩০ ভোটের ব্যবধানে নাকচ করে দেন পার্লামেন্টের সদস্যরা। এতে থেরেসা মের কনজারভেটিভ পার্টির ১১৮ সংসদ সদস্যও তাঁর প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন।

এর মধ্যে বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন থেরেসা মের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) সেই ভোটে পার্লামেন্টের ৩২৫ জন সংসদ সদস্য থেরেসা মের সরকারকে টিকিয়ে রাখার পক্ষে আর ৩০৬ জন বিপক্ষে ভোট দেন। মাত্র ১৯ ভোটে কনজারভেটিভদের সরকার এবার উতরে গেল।

সরকারে টিকে থাকার পর ‘ব্রিটেনের স্বার্থ রক্ষায়’ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে ব্রিটিশ জনগণ যে রায় দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য সব দলের সংসদ সদস্যদের ‘একত্রে গঠনমূলকভাবে’ পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল বুধবার রাত থেকেই থেরেসা মে বিরোধী পক্ষ লিবারেল ডেমোক্রেট, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (এসএনপি) ও প্লেড সাইমরু নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে আমন্ত্রণ সত্ত্বেও বৈঠকে যাননি লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে নিজের কাজ অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘লেবার নেতা বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় আমি খুব দুঃখ পেয়েছি, হতাশ হয়েছি। তবে আলোচনার জন্য আমাদের দরজা সব সময়ই খোলা রয়েছে।’

বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, যেকোনো ‘ইতিবাচক আলোচনার’ আগে প্রধানমন্ত্রীকে ব্রেক্সিট প্রশ্নে চুক্তিবিহীন সম্ভাবনার বিষয়টি নাকচ করতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি দেশের মানুষ একে অন্যের দেশে যেতে পারে। একসঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। তা ছাড়া এই ইউনিয়নভুক্ত দেশের মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে বসবাসও করতে পারে।

২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা ব্রেক্সিট হবে কি হবে না, তা নিয়ে গণভোটে অংশ নেয়। ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ ভোটার ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় আর ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার এর বিপক্ষে ভোট দেয়। এতে যুক্তরাজ্যের তিন কোটি ভোটারের ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়ে। এই ভোটের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান ডেভিড ক্যামেরন। তার পরই দায়িত্বে আসেন থেরেসা মে।

ব্রেক্সিটের পক্ষে যারা, তাদের দাবি ছিল—ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দরিদ্র দেশের অর্থনীতিকে টানতে গিয়ে তাদের মোটা অঙ্কের গচ্চা দিতে হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিকে খারাপ অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, ভোটে হেরে যাওয়া পক্ষ আবারও এই ইস্যুতে গণভোটের দাবি জানিয়েছিল। যদিও সেই দাবি কার্যকর হয়নি।

আগামী ২৯ মার্চ মধ্যরাতে ২৭টি ইউরোপীয় দেশ থেকে একযোগে বেরিয়ে যাবে ব্রিটেন। এ অবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে চুক্তির খসড়া দাঁড় করান। সোমবার রাতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে ৩২১ জন চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন আর পক্ষে দেন মাত্র ১৫২ জন। পরদিন নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সেও শোচনীয় পরাজয় হয় প্রধানমন্ত্রীর।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.