ওমানে পড়ে থাকছে প্রবাসীর লাশ দেশে আনছে না বিমান

0

গোলাম শরীফ টিটুঃ  বাংলাদেশি প্রায় ৮ লাখ প্রবাসী ভাতৃপ্রতীম দেশ ওমানে। দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে অবদান রাখছে তাদের পাঠানো রেমিটেন্স। কিন্তু তাদের কেউ যখন সেখানে মারা যান, তখন আত্বীয়-স্বজনের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ বিমান লাশ পরিবহন করছে না। প্রবাসীদের লাশ বিনা খরচে দেশে নিয়ে আসে বাংলাদেশ বিমান।

কিন্তু ওমান থেকে লাশ পরিবহন বন্ধ প্রায় ৪ মাস ধরে। কেবল লাশ নয়, দুর্ঘটনায় আহত প্রবাসীদেরও আনছে না। মাসকাট রুটে বিমানের বড় ফ্লাইট চালু ছিল। বিগত হজ মওসুমে হাজিদের পরিবহনের জন্য বড় ফ্লাইট এই রুট থেকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়। চালু করা হয় ছোট ফ্লাইট। সেই থেকে বন্ধ প্রবাসীদের লাশ পরিবহন।

বাংলাদেশি বেসরকারী যেসব এয়ারলাইন মাসকাট পথে চলাচল করে সেগুলোও লাশ পরিহন করে না। একমাত্র উপায় বিদেশি যেসব এয়ারলাইন্স রয়েছে সেগুলো। লাশ পৌঁছে দেয় শাহজালাল বিমান বন্দর পর্যন্ত। চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রবাসীদের মৃতদেহ হলে দুর্গতির শেষ থাকে না শোকাবহ পরিবার পরিজনের। বিমান যখন পরিবহন করতো তখন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে নিয়ে যেতে পারতো স্বল্প সময়ে। মাসকাট থেকে বিমানে লাশ পাঠানো যেত সহজে। বিদেশী বিমান সংস্থাগুলোতে পাঠাতে খরচ প্রায় লাখ টাকা। এর আগে ডকুমেন্টের জটিল নানা আনুষ্ঠানিকতা।

ওমান প্রবাসীদের সংগঠন বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাবের সভাপতি সিরাজুল হক জানান, বিপুল বাংলাদেশি এখানে। তাই কিছু স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আবার দুর্ঘটনা এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও মারা যান কিছু কিছু। যেসব দেশে ২ লাখের বেশি প্রবাসী নেই সেসব দেশের সাথে বিমান বড় আকারের ফ্লাইট চালু রেখেছে। কিন্তু প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশি ওমানে। তারপরও ছোট ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করছে এখান থেকে। এটাকে কারণ হিসেবে ওমান থেকে প্রবাসীদের মৃতদেহ বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য দেশের এয়ারলাইন্সে পাঠাতে হচ্ছে প্রচুর খরচে।

সংসারের হয়তো একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে শোকে বিহবল পরিবারবর্গ। এ অবস্থার মধ্যে বড় অংকের টাকা খরচ করে লাশ দেশে নেয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এখানে যেসব বাংলাদেশি রয়েছেন তাদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে এই খরচ নির্বাহ করতে হচ্ছে।

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাব সমস্যাটির ব্যাপারে বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার এবং দূতাবাসের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। সিরাজুল হক আশা করেন যে, বাংলাদেশ বিমান গুরুত্ব সহকারে অনুধাবন করবে সমস্যাটি এবং অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.