চন্দনাইশে দুটি স্থগিত ভোট কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত-হাইকোর্ট

0

নিজস্ব সংবাদদাতা,চন্দনাইশ : চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনে গত ২৪ মার্চ দুটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত হলে আজ ১৭ এপ্রিল ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। এদিকে গতকাল ১৬ এপ্রিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একেএম নাজিম উদ্দীন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে আজ ১৭ এপ্রিল ২টি কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত চেয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও মোহাম্মদ খাইরুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চে রিট আবেদন দায়ের করেন।

রিট আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, সচিব নির্বাচন কশিমনার, অতিরিক্ত নির্বাচন অপারেশন-২, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরী, ডেপুটি কমিশনার এন্ড আপিল অথরিটি, রিটার্নিং অফিসার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং অফিসারসহ ৯ জনকে প্রতিপক্ষ করা হয়।

একেএম নাজিম উদ্দীনের পক্ষে রিট পিটিশন শুনানী করেন সাবেক বিচারপতি এড. ছৈয়দ সাইদুর রহমান। ৫নং প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরীর পক্ষে রিট আবেদন শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন ব্যারিষ্টার রোকন উদ্দীন মাহামুদ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য প্রতিপক্ষদ্বয়ের পক্ষে রিট আবেদন শুনানীতে অংশ নেন ব্যারিষ্টার তৌহিদুল আলম। রাষ্টপক্ষে শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এড. মোতাহের হোসেন সাজু ও সহকারী এটর্নি জেনারেল এড. মাসুদ আলম চৌধুরী। শুনানীকালে একেএম নাজিম উদ্দীনের পক্ষে বিজ্ঞ কৌশলী বলেন, নির্বাচন কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

তদন্ত কার্যক্রম শেষ হওয়ার পূর্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তাছাড়া প্রার্থীর এবং প্রধান নির্বাচন এজেন্টসহ নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে পুলিশ তাড়া করছেন। ফলে তারা নির্বাচনী এলাকায় পুলিশের ভয়ে প্রচার প্রচারনা চালাতে পারছেন না বিধায় আজকের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন জানান।

পরবর্তীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরীর পক্ষে ব্যারিষ্টার রোকন উদ্দীন মাহামুদ বলেছেন সারাদেশে সুষ্ট অবাধ নির্বাচনী পরিবেশ অব্যাহত থাকায় নির্বাচনে কোন রকম বাঁধা নেই। ভোট গ্রহণের পরিবেশ অনুকুলে থাকায় নির্বাচন হওয়া বাঞ্চনীয়। কিন্তু বিচারকদ্বয় উভয় পক্ষ এবং রাষ্ট্রপক্ষের শুনানীন্তে চন্দনাইশ উপজেলার স্থগিত ২টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ আজ ১৭ এপ্রিল স্থগিত করে ২ সপ্তাহের জন্য সময় দিয়ে রুল জারি করেন। সেই সাথে স্থগিত ২টি কেন্দ্রের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দেন। এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবি সহকারী এটর্নি জেনারেল এড. মাসুদ আলম চৌধুরী।

জানা যায়, গত ২৪ মার্চ চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনে পূর্ব চন্দনাইশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর বরকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট চলাকালীন বিক্ষপ্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। গত ৯এপ্রিল আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান এই ২টি কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তা, পুলিশ, ২ প্রার্থী, অফিসার ইনচার্জ এর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য গ্রহণ করেন। পরদিন ১০ এপ্রিল ২টি কেন্দ্রে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় একেএম নাজিম উদ্দীন এই রিট পিটিশন দাখিল করেন বলে জানান।

এব্যাপারে সহকারী রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম বদরুদ্দোজা নির্বাচন স্থগিতের আদেশ পেয়েছেন বলে জানান। সেই সাথে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা করেছেন বলেও জানিয়েছেন। এদিকে এই ২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভোটগ্রহণ সুষ্টভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে সাড়ে ৩শ পুলিশের মধ্যে প্রায় ৩শ পুলিশ সদস্য ও ২ প্লাটুন বিজিবি, ৪০ জনের অধিক আনসার ভিডিপি উপজেলা সদরে ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। একইভাবে এ দুটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার, নির্বাচনী সরঞ্জামসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। অবশেষে আজ ১৭ এপ্রিল চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনের স্থগিত ২টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ২ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.