চরম অনিশ্চয়তায় নিবন্ধিত ২ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার

0

শহিদুল ইসলাম,উখিয়া,সিটি নিউজ: কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে রেজিস্টার রোহিঙ্গা পরিবারের শরনার্থীরা রেশন সামগ্রী উত্তোলন থেকে বিরত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । দীর্ঘ ৪ মাস ধরে এসব নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা চরম খাদ্য অভাবে ভোগছে । এমনকি এসব পরিবার গুলোতে নিয়মিত খাদ্য সংকটের পাশাপাশি হাহাকার দেখা দিয়েছে ।

সাধারন রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, নিবন্ধিত প্রায় ১৩ হাজার ১শ ৭৬ জন রেজিস্টার রোহিঙ্গার মধ্যে ২৬শ ৪৭ পরিবার রয়েছে । এসব রেজিস্টার রোহিঙ্গা পরিবারের মধ্যে ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা রেশন সামগ্রী উত্তোলন করে আসলেও অবশিষ্ট রোহিঙ্গা পরিবার গুলো দীর্ঘ ৩/৪ ধরে রেশন সামগ্রী উত্তোলন থেকে বিরত রয়েছে । কারন জাতিসংঘ কর্তৃক সংশোধিত শরনার্থী মর্যাদা আইনের বাস্তবায়ন না করায় তারা রেশন সামগ্রী তুলছেনা ।

সি ব্লকের রেজিস্টার রোহিঙ্গা আব্দু শুক্রর বলেন,বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলকে বিগত ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে শরনার্থী মর্যাদা আইন বাস্তবায়নের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন । কিন্তু এসব আইনের কোন কার্যকারিতা না থাকায় তারা তারা চরম হতাশায় ভোগছে বলে জানা গেছে ।

ডি ব্লকের বাসিন্দা শরনার্থী নুর বেগম ,নবীন সোনা,আয়েশা বেগম বলেন, ১৯৯২ সালে তালিকাভুক্ত জাতিসংঘ কর্তৃক সংশোধিত শরনার্থী আইনের ১৯৬৯,১৯৬৭,১৯৫৪,১৯৫১,১৯৮৪ ও ১৯৬১ ধারা অনুযায়ী গৃহীত আইনের বাস্তবায়ন চান তারা । এসব আইনের বাস্তবায়ন না হওয়ার কারনে প্রায় ২ হাজার রেজিস্টার শরনার্থী তাদের রেশন সামগ্রী তুলছেনা ।

ইব্লকের বাসিন্দা শরনার্থী, রশীদা বেগম, মাবিয়া খাতুন ,আয়েশা খাতুন, সকিনা খাতুন বলেন, প্রায় ১ বছর ধরে ফুট আইটেম এবং নন ফুট আইটেম খাদ্য সামগ্রী তুলছেনা তারা । এছাড়াও বিদেশে যেসব রোহিঙ্গা পরিবার রিসেটেলমেন্ট তথা আমেরিকা,লন্ডন,কানাডা,নিউজল্যান্ড,অষ্ট্রেলিয়া,আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ডে বসবাস করছে তাদেরকে ঐসব দেশ সম্পূর্ণভাবে শরনার্থীর মর্যাদা দিয়ে রাখাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে । একমাত্র বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গারা এ আইনের কার্যকারিতা বা বাস্তবায়ন দেখছেন না বলে তাদের অভিযোগ ।

বাংলাদেশ সরকারকে ও শরনার্থী মর্যাদা আইন বাস্তবায়নের দাবী জানান।এফ ব্লকের বাসিন্দা শরনার্থী সৈয়দ হোছন, আজমা বেগম বলেন, এখানে একটি মহল ক্যাম্প প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভুল তথ্য দিয়ে নিরীহ অসহায় শরনার্থীদের হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগে জানা গেছে । রোহিঙ্গা চেয়ারম্যান লালু ,জি ব্লকের বাসিন্দা শরনার্থী নুরুল আমিন,আবুল আলম,নুরুল হাকিম, সৈয়দ হোসন বলেন, প্রায় ৪মাস ধরে রেশন সামগ্রী উত্তোলন থেকে বিরত থাকে । ফলে তারা চরমভাবে খাদ্য সংকটে ভোগছে । যেকোন মুহূর্তে না খেয়ে অনেক রোহিঙ্গার মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারে ।

১৯৯২ সালের শরনার্থী মর্যাদা আইন সংশোধিত আইনের বাস্তবায়ন হোক না হয় শান্তিপূর্ণভাবে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দাবী জানান ।এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গা এডভোকেসী প্রোগ্রামের কাজে নিয়োজিত জেনেভা প্রোডাক্টশন অফিসার

তৈয়বা শরীফ রোহিঙ্গাদের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শরনার্থী মর্যাদা আইন বাস্তবায়নের জন্য বাংলদেশ সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে । তবে রেশন সামগ্রী উত্তোলনের ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে চাননি । ক্যাম্প কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, হয় আমাদেরকে পুরোপুরিভাবে শরনার্থী মর্যাদা দিতে হবে, না হয় শান্তিপূর্ণ সমাধানের মধ্যে দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে ।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন , বিষয়টি নিয়ে সরকারের একটা পরিকল্পনা রয়েছে । তবে কবে নাগাদ এ আইনের বাস্তবায়ন হবে তার কোন সঠিক জবাব দিতে পারেন নি ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.