নাঈমকে পাঁচ হাজার ডলার প্রদানের ঘোষণা

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সাথে পানির পাইপ ধরে রাখা ছোট্ট একটি শিশুর ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপরই শিশু নাঈমের এমন মানবিক কাজে খুশি হয়ে তাকে উপহার স্বরূপ পাঁচ হাজার ডলার প্রদানের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর ফারুক সামি।

এরপর হঠাৎ গুঞ্জন ওঠে ‘সেই নাঈমকে পুরস্কার দিবেন না প্রবাসী ওমর’। কিন্তু এবার দ্বিতীয়বারের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন ওমর। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন নাঈমকে তিনি পুরস্কার তো দিবেনই পাশাপাশি নাঈমের পুলিশ হওয়ার যে স্বপ্ন আছে তা বাস্তবায়নেও কাজ করবেন তিনি।

আর এ নিয়ে বুধবার (৩ এপ্রিল) তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত সব কর্মকাণ্ড দেখে হতভম্ব’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন।

সিটি নিউজ পাঠকদের জন্য ওমর ফারুক সামির স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘আসসালামু আলাইকুম, আমরা যারা প্রবাসী তারা দেশকে খুবই ভালোবাসি। দেশের কল্যাণে কিছু করার চেষ্টা করি। কিছু করতে না পারলে মহান আল্লাহর কাছে দেশের জন্য দোয়া করি। দেশের আকাশে যখন কালো মেঘ দেখি আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। সেই ধারাবাহিকতায় বনানীর মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে আমরা মর্মাহত হই। সেদিন এক ছোট শিশুর আগুন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতার প্রচেষ্টা দেখে আমার হৃদয়ে নাড়া দেয় এবং আমি তাকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেই। আমি যদি নাঈমকে ব্যাক্তিগত চিনতাম তাহলে ঘোষণা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না নিজেই পাঠিয়ে দিতাম। সুদূর আমেরিকা থেকে পরিচয় পাওয়াটাও কঠিন বলে মিডিয়ার আশ্রয় নেই এবং তাকে খুঁজে যোগাযোগ করি।

সেক্ষেত্রে মিডিয়া আমাকে সহযোগিতা করেছে। মিডিয়ার মাধ্যমে তার মায়ের সাথে আলাপ করে জানতে পারি সে পুলিশ হতে চায় কিন্তু তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না তখনই আমি তার পড়ালেখার দায়িত্ব নেই। কিন্তু এই স্বাভাবিক একটা ইস্যু নিয়ে দেশে তুলকালাম কাণ্ড হচ্ছে। এসব সত্যি খুবই দুঃখজনক। একটি বিভ্রান্ত অনেকটা হতাশার জন্ম দেয়। সুতরাং হতাশা দূর করা আমাদের সবার দায়িত্ব।

ব্যস্ততার প্রবাস থেকে নাঈম ও তার মায়ের সাথে আলাপকালে বলেছিলাম আমি তার পাশে আছি। আজ আবারো বলছি, নাঈমের পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাশে থাকব। বিশ্বের ২ কোটি প্রবাসীদের ভালোবাসা সরূপ নাঈমকে পুরস্কারের টাকা দেব ইনশা আল্লাহ।

পরিশেষে বলব আমাদের সবার উচিৎ দেশ, সমাজ ও দেশের মানুষ নিয়ে ভাবা। দেশের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা এতোই অস্বাভাবিক যে, মানুষের ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতিকে কোন পর্যায়ে পৌছানো হয় কেউ জানেনা। আধুনিক বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের পরিবর্তে আমরা অপ্রয়োজনে বেশি ব্যবহার করি। আধুনিক এই বিশ্বের যুবকরা প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে। বিশ্ব যখন এগিয়ে আমরা তখন পিছিয়ে থাকার মানেই হয় না। আমাদের উচিৎ প্রযুক্তির মাধ্যমে কীভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায় বা উদ্ধার অভিযান সহজ হয় সেইসব নিয়ে পর্যালোচনা করা। অপ্রয়োজনীয় বা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু নিয়ে সময় নষ্ট করার কোন যৌক্তিকতা নেই। দেশ ও দশের উন্নিতির জন্য আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার হবে এই প্রত্যাশা করছি।

নাঈম যেন পড়ালেখা করে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান পুলিশ অফিসার হয়ে দেশের সেবা করতে পারে আপনারা এই দোয়া করবেন।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.