প্রতিবাদ ও কালো ব্যাজ ধারণ নয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেছেন প্রতিবাদ ও কালো ব্যাজ ধারণ নয়, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নেতারা খালেদা জিয়াসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছে ।

আজ বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত ৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধনে এ হুঁশিয়া উচ্চারণ করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

বিকাল ৩ টা থেকে ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম।

আব্দুর রব বলেন, এখন আর অন্য কোন আন্দোলন নয়। আমরা দাবি করেছি, ভোট প্রত্যাখান করার জন্য। ভোট তো হয়নি, প্রত্যাখান কিসের? রাষ্ট্র, জাতি ও জনগণকে রক্ষা করতে হবে। অন্যায়কারীদের আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার করতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষদেরকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ লাখ লাখ নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে হবে। তাদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এ জন্য মাঠের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। শুধু ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। প্রতিবাদ ও কালো ব্যাজ ধারণ নয়, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকে শুধু কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতিবাদ করছি। আমরা অপেক্ষা করে আছি, জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ হবে। আমরা প্রতিবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবো না। ৩০ তারিখে কি কি অপকর্ম করছেন, কি কি ডাকাতি করছেন, সবকিছু উলঙ্গ করে দেওয়া হবে।

৩০ তারিখে নির্বাচনে ১ শত ১৭ পয়েন্ট ৩ শতাংশ ভোট পড়েছে মন্তব্য করে রব বলেন, ৯৭ পয়েন্ট ৩ শতাংশ ভোট জালিয়াতি, ৯৭ পয়েন্ট ৩ শতাংশ হচ্ছে ব্যালটের ডাকাতি, ৫ শতাংশ হচ্ছে যারা ব্যস্ত ছিল ভোট দিতে পারে নাই, ৫ শতাংশ হলো যারা বিদেশ ছিল এবং মারা গেয়েছে, আর ১০ শতাংশ হলো গার্মেন্টস ও যারা নির্বাচনে যেতে পারে নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম জালিয়াতি, ১০০ এর ওপরে ১১৭! ঠকের ওপর বাটপার। আর বাটপারের ওপরে বাটপারি।

তিনি বলেন, ৩০ তারিখে কোন নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে। গণতন্ত্র নিহত ও জাতি আহত হয়েছে। মানুষ বাকরুদ্ধ। মানুষ কথা বলতে পারে না। সন্তান জন্মের পূর্বের রাতে সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ ৩০ তারিখে ভোট হওয়া কথা, কিন্তু ২৯ তারিখ রাতে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে।

৩০ তারিখের নির্বাচন প্রসঙ্গে জেএসডির সভাপতি বলেন, উপজেলা ও শিক্ষক ঘুষ দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিজাইডিং ও রিটার্নিং অফিসারদের- এদের সবাইকে ঘুষ দেওয়া হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা বলেন, গণতন্ত্রের চেতনা ও মানুষের বিবেককে হত্যা করে ৩০ তারিখে ভোটেরর ফলাফলের নামে নাটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু লোক যে ডাকাতি করেছে, গণভবনে তার উৎসব করছে- পিঠার মেলা বসেছে! এখন পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ভোট ডাকাতির জন্য।

তিনি বলেন, আমরা আছি, ঐক্যফ্রন্ট ছিল, ফ্রন্ট আছে এবং ঐক্যফ্রন্ট থাকবে। ঐক্যফ্রন্ট অটুট থাকবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ২৯ ও ৩০ তারিখে যে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, দেশের ১৬ কোটি মানুষ সেটা প্রত্যাখান করেছে। তখন আমরা বলেছি, অবিলম্বে নির্বাচন দিতে হবে। আর সেই নির্বাচন হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে।

একাদশ নির্বানের মধ্যে দিয়ে সরকার রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাতে দেশের মানুষের অধিকার লুণ্ঠন হয়েছে। বিনা জানাযায় ৩০ ডিসেম্বর তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। এই কবর যারা দিয়েছে, আমলাদের সাথে পুলিশ বাহিনী- তাদের পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে। গত দুই দিন ধরে পুলিশরা তাদের পুরস্কার গ্রহণ করছেন। তারা দুটি পুরস্কারের কথা বলতে ভুলে গেছেন, একটা হচ্ছে, তাদের কতজনকে অ্যাম্বাসেডর বানাতে হবে এবং কতজনকে মন্ত্রী বানাতে হবে- এই দাবি করেন নাই।

মানববন্ধনে নেতাকর্মীদের মুখ ও চোখে কালো কাপড় বেঁধে অংশগ্রহণ করেন এবং বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করতে দেখা গেছে। এদিকে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুপুর আড়াইটা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নেতাকর্মীদেরকে জোড়ো হতে দেখা গেছে।

অপরদিকে ঐক্যফ্রন্টের মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাবের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলেন।

মানববন্ধনে ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, যুুুুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, গণফোরাম রফিকুল ইসলাম পথিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.