কোন চোখ রাঙ্গানিকে ভয় করিনাঃ আবু সুফিয়ান
কারেন্ট টাইমসঃ চট্টগ্রাম ৮ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান বলেছেন কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় করি না।
আজ ২৩ ডিসেম্বর (রবিবার) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, সহ সাধারণ সম্পাদক জি এম আইয়ুব খান, সহ দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইদ্রিস আলী, সদস্য জসিম উদ্দীন, শরীফ মো. কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে আবু সুফিয়ান বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষের গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়াতে প্রতিপক্ষ বারংবার আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করেছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোন অপশক্তির চোখ রাঙ্গানি ও হুমকিতে আমি নির্বাচন থেকে দূরে সরে যাবো না। আমরা কোন অপকৌশলে নয় বরং ব্যলটের মাধ্যমে হামলা-মামলার জবাব দেবো।
সংবাদ সম্মেলনে আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে, দেশের মানুষকে তাদের ভোটের অধিকার ও দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমরা মনে করেছিলাম, একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আজকে সরকারি দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নির্বাচনকে একটি আতংকের জায়গায় নিয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, আমি বিগত দিনে আমার সংসদীয় আসনে যেখানেই গণসংযোগে গিয়েছি সেখানেই ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমি মানুষরে ভালবাসা পেয়েছি, আস্থা পেয়েছি তাই আমি পুরো নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছি। বিগত ১০ দিনে চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকা থেকে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে ছিলো গায়েবী মামলা এখন তার সাথে কিছু অনুষঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে জাল টাকা ও অস্ত্র আইনের মামলা। এটি সবচেয়ে দূর্ভগ্যজনক ব্যাপার রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির মামলা হচ্ছে।
গত সাপ্তাহে বায়েজিদ থানা যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান রুবেলকে বায়েজিদ থানায় নিয়ে গিয়ে তাকে জাল টাকার মামলা দেয়া হয়েছে। তার দুই দিন পর ৬ নং ষোলশহর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইস্কান্দারকে আমার ব্যানার লাগানোর সময় গ্রেফতার করে জাল টাকার মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার নির্বাচনী অফিসে তিন বার হামলা হয়েছে। সবশেষ গতকাল (শনিবার) রাতে বোমা হামলা হয়েছে।
গতকালের হামলা ছিলো পরিকল্পিত ও নৃশংস। দুই শতাধিক সন্ত্রাসী মুখ বেঁধে আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ১টি পিকআপ, ১টি কার, ১০টি মোটর সাইকেল ও দুইটি সিএনজি, অফিসের আসবাবপত্র ও অন্যান্য সারঞ্জামাদি ভাংচুর করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী অফিসে ভাংচুরের পর আমি সাথে সাথে নির্বাচন কমিশন সচিব ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ কমিশনারকে অবহিত করেছি। উপর থেকে তাৎক্ষণিক সাড়া পেলেও আমরা দেখেছি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আসকারা দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
আবু সুফিয়ান সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, আমি রাতেই এই ঘটনা জানিয়ে চান্দগাঁও থানায় এজহার দিয়ে, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি। হামলার পর রাত ১১টার সময় নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত আমার দুই ড্রাইভার ও একজন ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা যখন বাসা থেকে যাচ্ছিলো তখন তাদের রাস্তা থেকে গ্রেফতার করে জাল টাকায় মামলা দিয়েছে। পুলিশ প্রশাসানের নির্লজ্জ আচরণ নির্বাচনী পরিবেশকে কলুষিত করছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসন, নির্বাচন কর্মকর্তা ও দেশবাসীকে জানাতে চাই আমাদের উপর কি পরিমাণ অন্যায়, জুলুম ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
আমি এখনো প্রশাসনকে অনুরোধ করবো আপনারা নিরপেক্ষভাবে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করুন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করুন। মানুষ যেন অবাধে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করুন। আর যদি সেটা করতে ব্যর্থ হন ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতে হবে।