চন্দনাইশে মামলা আতঙ্কে নৌকার সমর্থকরা

0

সিটি নিউজ, চন্দনাইশ : চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পৃথক পৃথক ঘটনায় ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২টি মামলায় ১৯ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আসামী করে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এজাহার নামীয় আসামী ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামী হিসেবে নৌকার সমর্থকেরা গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছে বলে জানা যায়।

গত ২৪ মার্চ চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচন চলাকালে পূর্ব চন্দনাইশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দূর্বৃত্তের গুলিতে ২ পুলিশ সদস্যসহ আহত হওয়ার ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন মোবাইল টিম-২০ এর দায়িত্বরত কর্মকর্তা লোহাগাড়া থানার পিএসআই আবু বক্কর ছিদ্দিক। অপরদিকে উত্তর বরকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ব্যালট ছিনতাই করায় ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। সে ঘটনায় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার, গাছবাড়ীয়া সরকারি কলেজের প্রদর্শক নুর-উন-নবী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে গত ২৫ মার্চ চন্দনাইশ থানায় ১টি মামলা দায়ের করেন। গত ২১ মার্চ রাতে চন্দনাইশ পৌরসভা সদর হাজীরপাড়ায় দুর্বৃত্তরা মান্নানের বাড়িতে গোলাগুলির ঘটনায় ছৈয়দাবাদের আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৫ মার্চ ৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ উপজেলা নির্বাচন চলাকালীন পূর্ব চন্দনাইশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, নির্বাচনী সরঞ্জামাদী ছিনতাই, ব্যালটে সীল মেরে জাল ভোট প্রদানের লক্ষ্যে ৫০/৬০ জন অস্ত্রধারী কেন্দ্রে আক্রমণ করে। এ সময় তাদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে নিজামপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক নি. মো. শাহ আলম আহত হয়। অপরদিকে মোবাইল কোর্টের কনস্টেবল ফরহাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। তাকে প্রথমে চন্দনাইশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ ৪৩ রাউন্ড রাবার, ১২ রাউন্ড সিসা কার্তুজসহ ৫৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। অভিযোগে আরো বলা হয় আসামীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, শর্ট গান, পিস্তল, এলজি, কিরিচ, লোহার রড ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। মোবাইল কোর্ট এর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা পিএসআই আবু বক্কর ছিদ্দিক বাদী হয়ে যুবলীগ নেতা চৌধুরীপাড়ার ইয়াছিন আরাফাত (৩৫), আবদুল নুর তুষার (২৮), শিক্ষক মো.আলী (২৫), মাহামুদুর রহমান নয়ন (৩২), মাহাবুব চৌধুরী (৩৮), মো. রিয়াদ (২০), ছৈয়দাবাদের মো. ফারুক (২৭), হারলার মো. লোকমান (৩২), মো. হোসেন (৩২), আজিজুল ইসলাম খোকা (২৮), মো. রবিউল (২৪), নয়াহাটের মো. টিটু (২৮) সহ ৩০/৩৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। সে মামলার এজাহার নামীয় আসামী শিক্ষক মোহাম্মদ আলীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গত ২১ মার্চ চন্দনাইশ পৌরসভার হাজীর পাড়ার সাবেক ছাত্রদল নেতা শাখাওয়াত হোসেন মান্নানের বাড়ীতে ‘দোয়াত-কলম’ প্রতীকের প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরীর সমর্থনে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে হঠাৎ করে তাদের প্রতিপক্ষের লোকজন ২টি সিএনজি টেক্সি যোগে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করে গত ২৫ মার্চ থানায় মামলা দায়ের করেন ছৈয়দাবাদের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে আজিজুল ইসলাম আজিজ (২৮)। এ মামলায় চৌধুরী পাড়ার আবদুল নুর তুষার (৩০), হৃদয় (২৪), গাছবাড়ীয়ার মো. ফারুক (২০), পূর্ব চন্দনাইশের মো. ইউনুছ (২৮), উত্তর হাশিমপুরের মো. রফিক (৩৫), ছৈয়দাবাদের আবদুল মান্নান (২৯), ফয়সাল (২২) সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামী করা হয়। এ সকল মামলার এজাহার নামীয় আসামীগণ নৌকার সমর্থক। তাছাড়া নৌকার অন্যান্য সমর্থকেরা অজ্ঞাতনামা আসামীদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়া ও গ্রেফতার এড়াতে অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছে বলে জানা যায়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.