চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র মহাপ্রস্থান একটি নক্ষত্রের পতন

0

আবছার উদ্দিন অলি,সিটি নিউজ : ও আমার বন্ধুগো চির সাথী পথ চলার, এইখানে দু’জনে নিরজনে, তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই, আমি পাথরে ফুল ফোটাবো শুধু ভালবাসা দিয়ে, কালতো ছিলাম ভালো আজ আমার কি হলো, তুমি চাঁদের জোছনা নও, তুমি আমার এমনি একজন, বাবা বলেছে ছেলে নাম করবে, ও দাদী ও দাদী তুমি আমার দেওয়ানা, সাত সখিরে পার করিতে নিবো আনা আনা, ও সাথীরে যেওনা কখনও ভুলে, চিঠি এলো জেল খানাতে অনেক দিনের পর, এইদিন সেইদিন প্রতিদিন ইত্যাদি জনপ্রিয় গানগুলো সালামান শাহ অভিনীত ছবিতে লিপসিং করা হয়েছে। বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ।

তিনি চলচ্চিত্রে এসে একটি বিপ্লব সাধন করেছেন। গতানুগতিক ধারার বাহিরে ছবি উপহার দিয়ে দর্শকদের মনের মনিকোটায় পৌঁছেছেন। তার প্রত্যেকটি ছবি ব্যবসা সফল হয়েছে। কিয়ামত থেকে কিয়ামত ছবি দিয়ে শুরু হওয়া ক্যারিয়ারের সর্বশেষ ছবি স্বপ্নের পৃথিবী পর্যন্ত সবকটি ছবিতে দর্শকদের ভালবাসা পেয়েছেন। নায়িকা হিসেবে মৌসুমী, শাবনুর, সোনিয়া, শাহনাজ, শাবনাজ সহ সব নায়িকার সাথে সাবলীল অভিনয় করে দর্শকদের বুঝিয়ে দিয়েছেন অভিনয় গুণে তিনি পারদর্শী। তার মৃত্যুর পর দেশীয় চলচ্চিত্রে তার শুন্যতা পূরণে এখনও কোনো নায়ক পাওয়া যায়নি। রোমান্টিক চরিত্র ছাড়াও এ্যাকশন ছবিতেও সালমান শাহ ছিলেন সমান পারদর্শী।

সত্যের মৃত্যু নাই ছবিটি যখন সিনেমা হলে চলছে তখনই সালমান শাহ মৃত্যু বরণ করেন। আর এই ছবিটি সর্বাধিক ব্যবসা সফল হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখালো। অন্যদিকে কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। নির্মানাধীন ছবিগুলো প্রযোজকরা পড়লেন বিপাকে। অনেকেই সালমান শাহ’র মৃত্যুর পরে তার নির্মাণাধীন ছবিগুলোতে ডামি হিসেবে অন্য নায়ককে দিয়ে কাজ করানো, কিন্তু এতে কেউ সফল হননি। সালমান শাহ’র অনুপস্থিতি দর্শকরা সহজে উপলব্ধি করেছেন। এই কারণেই অনেক ছবির প্রযোজক শেষ পর্যন্ত ছবির কাজ শেষ করেননি।

চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র মহাপ্রস্থান একটি নক্ষত্রের পতন। দশজন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছেলে মেয়ের কাছে জিজ্ঞেস করা হলে তাদের প্রিয় নায়ক কে সহজেই উত্তর আসবে সালমান শাহ। নব প্রজন্মের শীর্ষ তারকা ও জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল প্রায় ১১টা নাগাদ চলে গেলেন চিরদিনের জন্য। স্বপ্নের নায়ক, জাতীয় সম্পদ সালমান শাহ’র মৃত্যু ভূমিকম্পের মতোই কোটি ভক্তের হৃদয়কে ওলটপালট করে দিয়ে গেল। সালমানের মৃত্যু নিয়ে আজ এতদিন পরেও রহস্যের শেষ নেই।

ব্যক্তি হিসাবে আবেগপ্রবণ বলে আত্মহত্যা করার পথে সালমান যেতেও পারেন তাই বলে খ্যাতির শীর্ষে থেকে চলচ্চিত্র শিল্পের এত অর্থকে নষ্ট করে এ পথে যাবার মতো অবিবেচক কি সালমান সত্যিই হতে পারেন? কোন মৃত্যুকে হালকা ভাবে নেয়া যায়না। সালমানের মৃত্যুতে অপূরনীয় ক্ষতি হয় আমাদের, আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের। যে গুজবের উপর ভিত্তি করে তাকে আত্মহত্যা করতে হলো বা হত্যা করা হলো সেই ধরনের গুজব আমাদের চলচ্চিত্রের আর সব তারকাদের সম্পর্কেও শোনা যায়।

তাই নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অন্য কোন সালমান যাতে বলি না হন সেই উদ্দেশ্যেই সালমান শাহ’র মৃত্যু নিয়ে সঠিক তদন্ত প্রয়োজন। সালমান শাহ’র পেশাগত জীবনে বিচরণ ছিল মাত্র চার বছর। খুব একটা বেশি সময় বলা যায় না এরই মধ্যে মৃত্যুও আগ পর্যন্ত তার ছবি মুক্তি পেয়েছিল ২০টি নির্মাণাধীন ছিল প্রায় ২৪টি এই অল্প সময়ের শীর্ষস্থান দখল করা সহজ হয়েছে একমাত্র সালমানের পক্ষেই। সালমান ফিল্মে আসার পর ভালবেসে বিয়ে করেন সামিরাকে।

আগামীতে আর কেউ সালমানের মতো মৃত্যুকে আলিঙ্গন না করেন। দীর্ঘ ২১ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও তার মৃত্যুর সঠিক বিচার হয়নি। এতে সালমান ভক্তরা হতাশ। ৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র ২১তম মৃত্যু বার্ষিকীতে রুহের মাগফেরাত কামনা করি। বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ’র জনপ্রিয়তা মৃত্যুর ২১ বছর পরেও এখনও সমান ভাবে বিরাজমান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.