নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোটি টাকা !

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোটি টাকা ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টার করা হচ্ছে।দুবাই থেকে হুন্ডির মাধমে কোটি টাকা দেশে আনা হয়েছে বলে দাবি করেছে র‌্যাব। সম্প্রতি এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই অবৈধ লেনদেন ঠেকাতে এখন নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মতিঝিল সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় অভিযান চালিয়ে আমদানি-রফতানি ও ঠিকাদারি কোম্পানি ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী হায়দারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

আটক অন্য দুজন হলেন- আলমগীর হোসেন (৩৮) ও জয়নাল আবেদীন (৪৫)। আলমগীর আমেনা এন্টারপ্রাইজ ঝালকাঠির অফিস ব্যবস্থাপক। জয়নাল ওই গ্রুপের জিএম (অ্যাডমিন)।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকের সাবেক এপিএস মিয়া নূরুদ্দীন আহম্মেদ অপু একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ-গোসাইরহাট) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে লড়ছেন।

মঙ্গলবার তার প্রতিষ্ঠান আমেনা এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালিয়ে কোম্পানির এক কর্মকর্তাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তাদের একজন হাওয়া ভবনের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন বলে দাবি করেছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।
এর আগে গত সোমবার ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চাইতে গিয়ে টাকার লেনদেনের সময় হাতেনাতে বিএনপির দুই কর্মীকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

র‌্যাব সদর দফতরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ভোটারদের প্রভাবিত করতে ভোটের মাঠে কোটি টাকা ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে।তাই এ সময়ে অবৈধ লেনদের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন,ভোটে মাঠে টাকা ছড়িয়ে বেশকিছু চক্র নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য এখনো সক্রিয় রয়েছে।তাদের গ্রেফতার করতে সক্রিয় রয়েছে র‌্যাব সদস্যরা।

তিনি বলেন, হায়দারের কাছে প্রায় আট কোটি টাকা এবং ১০ কোটি টাকার চেক পাওয়া গেছে।

সেখানে অপুর নির্বাচনী পোস্টার পাওয়ার পর দুপুরে গুলশানে তার কোম্পানি আমেনা এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জয়নাল আবেদীন ও অফিস সহকারী আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার মতিঝিল থেকে আট কোটি টাকা উদ্ধারের পর এমন কোটি কোটি টাকার সঙ্গে তারেক রহমানের সাবেক এক ব্যক্তিগত কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দিয়েছে র‌্যাব।

এরপর মতিঝিল সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় সংবাদ সম্মেলনে এসে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের চার দিন আগে ‘ভয়াবহ ষড়যন্ত্র বানচাল করা হয়েছে’।

দুবাই থেকে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা আনা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, দুবাই থেকে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা আনা হয়েছে এর অধিকাংশই হুন্ডির মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে।

এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ইউনাইটেড করপোরেশন, ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ ও আমেনা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আনা হয়েছে বলে র‌্যাবের দাবি।

সিটি সেন্টারের ইউনাইটেড করপোরেশনের মালিক দুবাই প্রবাসী মাহমুদুল হাসান। ওই ভবনের একই ফ্লোরে থাকা ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজের মালিক আতিকুর রহমান ঝালকাঠি উপজেলার ছাত্রদলের সহসভাপতি। আমেনা এন্টারপ্রাইজের মালিক অপু।

বেনজীর দাবি করেন, ইতিমধ্যে শরীয়তপুর-৩ আসনের মিয়া নূরুদ্দীন অপুকে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা অপু একসময় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। দণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকা তারেক কয়েক বছর আগে লন্ডন থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনে গেলে তার সঙ্গে তখনও অপুকে দেখা গিয়েছিল।

এবার অপুকে শরীয়তপুরে ধানের শীষের প্রার্থী করার পর স্থানীয় বিএনপি আপত্তি তোলে। ডামুড্যা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল করিম মিয়ার নেতৃত্বে মিছিল করে প্রার্থী বদলানোর দাবিও জানানো হয়েছিল।

সোমবার গোসাইরহাটে নির্বাচনী প্রচারের সময় সংঘর্ষে আহত হন অপু। তার দাবি, আওয়ামী লীগের সমর্থকরা তার ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দাবি, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সংঘর্ষ বাধে।

তবে ঢাকায় উদ্ধার অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়ে নূরুদ্দীন অপুর কোনো প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.