নুসরাত হত্যায় অর্থ যোগানদাতাদের সন্ধানে সিআইডি

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনা চাপা দিতে অর্থ লেনদেনের তথ্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট (সিআইডি)। এ হত্যায় অর্থের যোগানদাতাদের সন্ধানে মাঠে নেমেছে তারা। ইতোমধ্যে অর্থ যোগানদাতা হিসেবে বেশ কয়েকজনের নাম সিআইডির হাতে এসেও পৌঁছেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে সম্মেলনে সিআইডির সিনিয়র সহকারী বিশেষ পুলিশ সুপার শারমিন জাহান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে অর্থের লেনদেন করা হয়েছে। আমরা সেই অভিযোগেরই তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। অর্থ লেনদেনে জড়িত ও অর্থ যোগানদাতাদের খুঁজে বের করতে এরইমধ্যে অভিযান চলছে।

তবে নুসরাত হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে, সিআইডি তাদের নাম প্রকাশ করেনি। এরইমধ্যে এসব লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সেসব ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করছে সিআইডি। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের গ্রেফতার করা হবে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারের ৮ জন গ্রেফতারসহ মোট ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৪ জন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই। রুহুল আমিন নুসরাতের প্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। এই কমিটি অবশ্য শুক্রবারই বাতিল হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তাকে যৌন নিপীড়ন করে বলে অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদি হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল।

গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যায় নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেয়া হয়। এ সময় তাকে মামলা তুলে নেয়ার কথা বলে ভয় দেখানো হয়। পরে সেখানে বোরকা পরিহিত ৪/৫ ব্যক্তি নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১০ এপ্রিল তিনি মারা যান নুসরাত। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন করা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.