বরেণ্য ব্যক্তির জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে: ফরিদ মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বাংলা সাহিত্যের অগ্রপথিক, বহুভাষাবিদ, শক্তিমান লেখক, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র জীবন ও সাহিত্যের কর্মের উপর এক আলোচনা সভায় আলহাজ্ব ফরিদ মাহমুদ বলেন, ‘বরেণ্য ব্যক্তির জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। শিল্প, সাহিত্যে আমাদের যে একটি গৌরবময় স্বর্ণালী দিন ছিল তা আমরা ভুলে যেতে বসেছি। ষাট, আশি এবং নব্বই দশক বাঙালী সাহিত্য ও সংস্কৃতির এবং চিত্রকলায় শ্রেষ্ঠ সময় অতিবাহিত করেছে। সেই সময় বহুকালী জয়ী সৃষ্টি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে হয়েছিল। পাঠ অভ্যাস কমে যাওয়ার কারণে আমাদের নতুন প্রজন্ম আমাদের বরণ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে না। প্রযুক্তির প্রতি আসক্তির কারণে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ পুড়িয়ে যাচ্ছে। এক একজন শক্তিমান সাহিত্যিক হতে পারে আমাদের মনের জানালা খুলে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম। যা আমাদেরকে সমাজের অবক্ষয় হতে দূরে রাখবে। খাঁটি পরিপূর্ণ, সৎ ও মেধাবী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়ক হবে।’
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও সাহিত্য চর্চা পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র ৫০তম মৃত্যুদিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সভাপতিত্ব করেন মোঃ সালাউদ্দিন লিটন। এম. নুরুল হুদার চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উক্ত জেলা শিক্ষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শান্তি রঞ্জন চক্রবর্ত্তী, দৈনিক সমকাল চট্টগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার সাংবাদিক সুদীপ কুমার দাশ, জাতীয় চার নেতার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লেখক আবদুর রহিম, নগর যুবলীগের সদস্য শেখ নাছির আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন দেলু, কবি সজল চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন, তিমির বরণ চৌধুরী, যুবনেতা রাশেদ চৌধুরী, নগর ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান রুমি, আবৃত্তিকার শবনম ফেরদৌসী, আসিফ ইকবাল, যুবনেতা ইয়াছিন ভূঁইয়া, সমীর পাল, নারী নেত্রী রোজী চৌধুরী, কামাল হোসেন, চন্দন পালিত, নোমান উল্লাহ বাহার, সজল দাশ, ইঞ্জিনিয়ার মো. নাছির, রতন দাশগুপ্ত, অজিত দাশ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ একজন মুক্ত চিন্তার অধিকারী মানুষের পাশাপাশি ধার্মিকও ছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশে পিছিয়ে থাকা মুসলমানদের শিক্ষা সংস্কৃতি অধিকার আদায়ে আলোক বর্তিকা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি একটি বৈষ্ণম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে হিন্দু-মুসলমান সমভাবে এগিয়ে যাবে। বাঙালীর ভাষা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি নারী পুরুষের সমমর্যাদার নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। নিয়মিত ধর্মীয় চর্চা করলেও তিনি ছিলেন মন-মাসিকতায় অসম্প্রদায়। মুসলমান হওয়ার কারণে তিনি বার বার বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষা জীবনে শীর্ষ পদে অধিষ্টিত হতে পারেন নি নীতির প্রতি অবিচল থাকার কারণে।