বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচন সরগরম হয়ে উঠছে পৌর এলাকা

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী :   পৌরসভা নির্বাচনের তপশীল ঘোষনার পর থেকে প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠছে বাঁশখালী পৌর এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গতকাল শনিবার পর্যন্ত মেয়র পদে কোন প্রার্থী বাঁশখালী নির্বাচন অফিস থেকে কোন ফরম সংগ্রহ করেনি। অপরদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৭ জন সাধারণ আসনে ২৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছে বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়। বাঁশখালী পৌরসভায় নির্বাচনে এবার ১১টি ভোট কেন্দ্রে ১২ হাজার ১শ ৪৭ জন পুরুষ ভোটার এবং ১১ হাজার ৬শ ৪৬ জন মহিলা ভোটার ভোট প্রদান করছেন। নির্বাচনকে ঘিরে বিশেষ করে আওয়ামীলীগ বিএনপি এখনো পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে না পারলেও অপরাপর দল গুলো তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় নিজেদের মত করে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে।

তবে বাঁশখালী পৌরসভার নির্বাচনে বিগত দিনের ন্যায় প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র প্রার্থীর মধ্যে। বাঁশখালী পৌরএলাকা আওয়ামীলীগ অধ্যুষিত হলেও আওয়ামীলীগ তাদের প্রার্থী নির্বাচনে জনপ্রিয় এবং জনবান্ধব প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেয় তাহলে বিজয় নিয়ে নানা ধরনের সংশয় প্রকাশ করছে কর্মী সমর্থকরা। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামসুজ্জামানকে নির্বাচন অফিসার এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসার জাহিদুল ইসলামকে সহকারী নির্বাচন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে মেয়র প্রার্থীরা দলীয় নেতাদের কাছে নিজেদের প্রার্থীতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করলেও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নেমে পড়েছে নিজ নিজ এলাকায়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী নানা ভাবে ভোটারদের মন জয় করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

বাঁশখালী পৌরসভার ১১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে জলদী ভাদালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭টি বুথে ২ হাজার ৭শ ২০ জন, জলদী কেয়াং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪টি বুথে ১ হাজার ২শ ৬৯ জন , উত্তর জলদী হলস্যা পাড়া রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩টি বুথে ১ হাজার ৩৪ জন, বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭টি বুথে ২ হাজার ৭শ ৩৬ জন, পূর্ব জলদী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬টি বুথে ২ হাজার ৩শ ২৯ জন, রুহুল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭টি বুথে ২ হাজার ৬শ ৫৮ জন, উত্তর জলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭টি বুথে ২ হাজার ৪শ ৭৮ জন, দক্ষিণ জলদী আস্করিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮টি বুথে ২ হাজার ৯শ ৪৯ জন, দক্ষিণ জলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮টি বুথে ৩ হাজার ৪৪ জন, রংগিয়াঘোনা মনছুরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪টি বুথে ১ হাজার ২শ ২০ জন, দোসারী পাড়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪টি বুথে ১ হাজার ৩শ ৫৬ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ব্যয় ১০ হাজার এবং নির্বাচনী ব্যয় ২ লক্ষ এবং জামানত হিসেবে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে। সংরক্ষিত আসন ১নং ওয়ার্ডে মনোনয়নপত্র সংরক্ষণ করেন সারবান তাহেরা ফেরদৌস, ফাতেমা বেগম, রুজিনা আক্তার, হামিদা বেগম, ২নং ওয়ার্ডে নিলুফা আক্তার, ৩নং ওয়ার্ডে সাদেকা নুর খানম ও তছলিমা বেগম, সাধারণ আসনে ১নং ওয়ার্ডে মাহফুজুর রহমান, ২নং ওয়ার্ডে মিলন বড়ুয়া, তপন কান্তি বড়ুয়া, সনজিত বড়ুয়া, হারুনুর রশিদ, ৩নং ওয়ার্ডে মানিকুল আলম, আবদুল অদুদ লেদু, আনছুর আলী, ফিরোজ শাহী, জমশেদ আলম, এইচএম মিজানুর রহমান, নুর মোহাম্মদ, মৌলভী ছাবের আহমদ, ৪নং ওয়ার্ডে মোঃ শামশুল ইসলাম হেলাল, নুরুল আবছার, ছৈয়দ আহমদ, ৫নং ওয়ার্ডে রেজাউল করিম কালু, মোঃ ইছহাক, ৬নং ওয়ার্ডে আক্তার হোসেন, সুদেব চন্দ্র সুশীল, ৭নং ওয়ার্ডে মোঃ হারুন, মোঃ কিবরিয়া আজম, ৮নং ওয়ার্ডে কোন কাউন্সিলর এখনো ফরম সংগ্রহ করেনি, ৯নং ওয়ার্ডে মোঃ জসিম উদ্দিন, বদিউল আলম, মহিবুল্লাহ, দেলোয়ার হোসেন, দীপন কান্তি বড়ুয়া মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। বাঁশখালীর প্রাণকেন্দ্র জলদী ইউনিয়নকে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়।

পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ১৫ই জানুয়ারী প্রথম পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম হোছাইনী। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ৫ মে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে প্রথম পৌর মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম হোছাইনী। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১৮ ই জানুয়ারী নির্বাচনে পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের সমর্থন নিয়ে বর্তমান মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী। বাঁশখালী পৌরসভা সি গ্রেড থেকে স¤প্রতি এ গ্রেডে উন্নীত হলেও আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। বাঁশখালীতে আওয়ামীলীগের প্রার্থী কে হচ্ছে তা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি দলটি।

তবে দলের মনোনয়ন পেতে বর্তমান মেয়র শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল দাশ, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী রেহানা আক্তার কাজেমী ও পৌরসভা আওয়ামীলীগের আহবায়ক শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী মনোনয়ন পেতে সকল ধরনের রাজনৈতিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আজ রবিবার নির্ধারন হবে তাদের মনোনয়ন পাওয়ার সিদ্ধান্ত। আওয়ামীলীগ যদি গ্রহণ যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে না পারে তাহলে পৌরসভা তাদের বিজয় নিশ্চিত করতে অনেক বেগ পোহাতে হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.