মাকে বের করে শিক্ষক এখন ঘর হারানোর মুখে

0

মাকে মারধর করে হেনস্থা করে কোয়ার্টার থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এই ঘটনার জেরে এ বার তাঁকেই কোয়ার্টার ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সমীর দাসের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করলেন কর্তৃপক্ষ। সমীরকে ১৫ দিনের মধ্যে অধ্যাপকদের জন্য বরাদ্দ কোয়ার্টার ফাঁকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহ-উপাচার্য প্রদীপ ঘোষ। পাশাপাশি তাঁকে এমন আচরণের কারণ দর্শাতেও বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়।

এর আগেও নানা সরকারি অফিসার, বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদে আসীন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একই ভাবে বৃদ্ধ মা-বাবাকে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে তা শেয়ার হয়েছে। খবর হয়েছে সংবাদমাধ্যমেও।

তাতে কোনও কোনও ক্ষেত্রে মানুষের চাপে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে যে সংস্থায় অভিযুক্তরা কর্মরত, তাদের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এমন নজির খুব কমই আছে। এই পরিস্থিতিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশেষ করে সহ-উপাচার্যের ভূমিকাকে বাহবা দিয়েছেন অনেকেই।

তাঁদের বক্তব্য, এ ধরনের আচরণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে নজির তৈরি করল যাদবপুর। যদিও আর পাঁচটা ঘটনার মতোই এ ক্ষেত্রে ছেলের বিরুদ্ধে মা কোনও অভিযোগ করেননি। তার পরেও আবাসিক পড়ুয়াদের অভিযোগ এবং সংবাদমাধ্যমে বিষয় দেখে কঠোর হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

গত ২৮ ডিসেম্বর কনকনে শীতের রাতে মাকে হেনস্থা করে কোয়ার্টার থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যেই ওই প্রবীণা বসে কাঁদতে থাকেন। তাঁকে দেখে সাহায্যে এগিয়ে আসেন কিছু পড়ুয়া।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য ছিল, ঘটনা জানার পরে তাঁরা অধ্যাপকদের কোয়ার্টারে গিয়ে সমীরকে ডাকাডাকি করলেও তিনি কোনও রকম সাড়াশব্দ করেননি। ঘরের দরজাও খোলেননি। অসহায় বৃদ্ধাকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন প্রদীপ ঘোষ। সহ-উপাচার্যের নির্দেশে তাঁকে আশ্রয় দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজে।

পরদিন সকালে আবাসিক ছাত্ররা ওই বৃদ্ধাকে ট্রেনে তুলে দেন। তিনি দাদার বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়ে যান পড়ুয়াদের।

এই সমীরের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুপারিশ করেছেন কেউ কেউ। সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি সমীর দুর্ঘটনায় আহত হন। আহত ছেলের দেখভাল করতে আদতে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা ওই প্রবীণা এসেছিলেন ছেলের কাছে। সেখানে তাঁকে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। সমীরের ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.