সিটিনিউজবিডি : ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টির দুজন নেতা মুখোমুখি হবেন। সেই দুজন কে? না, তা এখনই বলার উপায় নেই। প্রতিযোগিতায় শামিল হয়েছেন হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন
গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রে দলীয় গণতন্ত্রও মজবুত। যেকোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলে দলীয় নির্বাচনে তাকে জিততেই হবে, পরে অন্য কথা। সেই ধারাবাহিকতায় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে গেলে আগে দলের ভোটে বিজয়ী হতে হবে। এ এক ম্যারাথন প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় প্রাইমারি।
দলের মধ্যে যারা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে চান, তারা প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শামিল হন। দলীয় সমর্থনে যিনি এগিয়ে থাকেন তিনিই হন সেই সৌভাগ্যভান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।
ডেমোক্রেটিক পার্টির ব্যালটে থাকে গাধার ছবি। এই গাধার ছবি ধরে ভোটারদের দরজায় দরজায় ঘুরতে হয় প্রার্থীকে। হিলারি ক্লিনটন অবতীর্ণ হয়েছেন সেই দৌড়ে, যাতে বিজয়ী হলে তার হাতে উঠবে গাধার ছবিওয়ালা প্রচারপত্র, ভোটাররা ভোট দেবেন গাধা দেখে। শর্ত হলো গাধা ধরার দৌড়ে আগে জিততে হবে। বলে রাখা ভালো, ডেমোক্রেটিক পার্টির অফিসিয়াল লোগো গাধা নয়। সব রাজ্যেই যে গাধার ছবি ব্যালটে থাকে, তাও নয়।
শনিবার নিউ ইয়র্ক থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে নির্বাচনী দৌড়ে নামলেন হিলারি। রুজভেল্ট আইল্যান্ডে হাজারো ভক্ত-সমর্থক ও নেতা-কর্মীদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন তিনি।
এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার প্রাথমিক ঘোষণা দিলেও নিউ ইয়র্কের জনসভায় তা চূড়ান্ত হলো। বললেন, তিনি কেন প্রেসিডেন্ট হতে চান, জনগণ তার কাছ থেকে কী পাবে, কীভাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে নেবেন এবং আরো কিছু মূল নীতি।
প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রথম জনসভার বক্তব্যে হিলারি সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির উন্নয়নকে। মধ্যবিত্তকে আরো আধুনিক ও মমনশীল পৃথিবী উপহার দেওয়ার স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করেছেন তিনি।
রুজভেল্ট আইল্যান্ডে হিলারির পাশে ছিলেন তার স্বামী ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং তাদের মেয়ে চেলসি ক্লিনটন।
জনসভাকে সামনে রেখে শুক্রবার একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন হিলারি। এতে তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকানদের প্রতিদিনের চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে নিজেকে সবার সামনে হাজির করছেন।
তিনি বলেন, ‘কারখানা শ্রমিকের ছেলে হয়েও আমার বাবা একটি ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেছিলেন। আমার মা কলেজের গণ্ডি পার হননি কিন্তু তিনি তার মেয়েকে কলেজে যেতে দেখেছেন।’
সংক্ষেপে হিলারির বৃত্তান্ত
জন্ম : ২৬ অক্টোবর, ১৯৪৭। শিকাগো, যুক্তরাষ্ট্র।
বয়স : ৬৭ বছর।
শিক্ষা : ইয়েল ল স্কুল থেকে ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিয়ে : ১৯৭৫ সালে বিল ক্লিনটনের সঙ্গে বিয়ে হয়।
জনপ্রিয় হয়ে ওঠা : ফার্স্ট লেডি হিসেবে ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু করে ২০০১ সাল পর্যন্ত নারীদের জন্য বিমা ও অধিকার নিয়ে কাজ করেন।
সিনেটর : ২০০০ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে সিনেটর নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে পুনরায় সিনেটর নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী : ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে বারাক ওবামার কাছে হেরে যান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী : ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন।