লিভারপুলকে উড়িয়ে দিল বার্সেলোনা

0

স্পোর্টস ডেস্কঃ নিজেদের মাঠে প্রথম লেগে ৩-০ গোলের জয়। সত্যিকার অর্থেই ফাইনালে এক পা দিয়ে ফেলল বার্সেলোনা।মেসির অনবদ্য জোড়া গোল ও অন্য গোলটি করেছেন লুইস সুয়ারেজ।  নিজেদের মাঠে প্রথম লেগ খেলতে নেমেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু অধিকাংশ সময় মাঝ মাঠের দখল ছিল সফরকারী লিভারপুলেরই। দারুণ সব আক্রমণও করে দলটি। কিন্তু ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন সেই লিওনেল মেসি। এ ক্ষুদে জাদুকরকে আটকাতে না পারার খেসারৎ দিতে হয়েছে ইংলিশ দলটিকে। জোড়া গোল করেছেন তিনি। তাতে লিভারপুলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল গেল স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

সফরকারীদের বুকে প্রথম পেরেকটা ঠুকে দেন তাদেরই একসময়ের ঘরের ছেলে লুইস সুয়ারেজ। এরপর আরও একটি গোল পেতে পেতেও পাননি। অন্যদিকে লিভারপুলও একটি অ্যাওয়ে গোলের জন্য হন্যে হয়েই খেলেছে। কিন্তু বার্সেলোনার জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি দলটি। অবশ্য ভাগ্যও সঙ্গে ছিলনা তাদের। ফাঁকায় থেকে নেওয়া মোহাম্মদ সালাহর শট ফিরে আসে বারপোস্টে লেগে।

তবে তিন গোলে পিছিয়ে থাকলেও একেবারে এখনই সব শেষ নয় লিভারপুলের। সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের মাঠে দুর্দান্ত ফুটবল খেলছে দলটি। তাই অ্যানফিল্ডে দারুণ কিছু আশা করতেই পারে তারা। এছাড়া গত আসরে বার্সেলোনা বিপক্ষে এস রোমার গড়া ইতিহাস থেকেও অনুপ্রেরণা পেতে পারে দলটি। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে ঘরের মাঠে গিয়ে থেকেও রোমার মাঠে তিন গোল খেয়ে ছিটকে যায় বার্সা।

এদিন ন্যু ক্যাম্পে বলের দখলে এগিয়ে ছিল লিভারপুলই। ৫২ শতাংশ বল পায়ে ছিল তাদের। শটও বার্সেলোনা থেকে ৩টি বেশি নিয়েছে তারা। যদিও লক্ষ্যে ছিল সমান ৫টি করে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করে নিতে পারেনি দলটি। উল্টো সুয়ারেজ-দেম্বেলেরা সহজ সুযোগ মিস না করলে ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো।

ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন রাকিতিচ। ফাঁকায় বল পেয়েও নিজে শট না নিয়ে আর্তুরু ভিদালকে পাস দিতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন তিনি। ১৫তম মিনিটে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ভিতরে ঢোকার মুখে বাধা পেলে আলগা বল পেয়ে যান কৌতিনহো। ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট সহজেই লুফে নেন লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার।

২৬তম মিনিটে সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। জর্দি আলবার ক্রসে ডি বক্সে ঢুকে আলতো টোকায় দিক বদলে দিয়ে অ্যালিসনকে পরাস্ত করেন এ সাবেক লিভারপুল তারকা। ৩৫তম মিনিটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রসে গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন সাদিও মানে। কিন্তু উড়িয়ে মেরে সে সুযোগ মিস করেন এ সেনেগাল ফরোয়ার্ড। তিন মিনিট পর জেমস মিলনারের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

বিরতির পর গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে লিভারপুল। দ্বিতীয় মিনিটে সমতায় ফিরতেও পারতো তারা। উইনালডামের পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন জেমস মিলনার। ভালো শটও নিয়েছিলেন। কিন্তু তার চেয়েও দারুণ দক্ষতায় সে শট ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক টের স্টেগান।

ছয় মিনিট পর আবারো বার্সাকে বাঁচান গোলরক্ষক টের স্টেগান। ডি বক্সের বাইরে আলগা বল পেয়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন সালাহ। কিন্তু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পরে ঠেকিয়ে দেন এ জার্মান গোলরক্ষক। ৫৮তম মিনিটে সালাহ পাস থেকে মিলনারের নেওয়া শট লুফে নেন তিনি।

পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো বার্সা। মেসির পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন ভিদাল। কিন্তু নিজে শট না নিয়ে সুয়ারেজকে পাস দিতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন তিনি। এর পাঁচ মিনিট পর ফাঁকায় পেয়েছিলেন সুয়ারেজও। কিন্তু প্রথম দফায় শট না নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটাতে গিয়ে সে সুযোগ নষ্ট করেন এ ফরোয়ার্ড।

তবে ৭৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্বাগতিকরা। মেসির পাস থেকে সের্জিও রোবার্তোর পায়ে লেগে বল পেয়ে যান সুয়ারেজ। কিন্তু হাঁটু দিয়ে নেওয়া তার শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলে আলগা বল পেয়ে যান মেসি। আলতো টোকায় বল জালে জড়াতে কোন ভুল করেননি এ আর্জেন্টাইন।

৮২তম মিনিটে আবারও মেসির জাদু। এবার প্রায় ৩০ গজ দূরে ফ্রি কিক থেকে নেয়া এক জাদুকরী শটে লক্ষ্যভেদ করেন পাঁচ বারের ব্যলন ডি’অর জয়ী এ তারকা।

দুই মিনিট পর ব্যবধান কমাতে পারতো লিভারপুল। বদলী খেলোয়াড় রোবার্তো ফিরমিনোর নেওয়া শট গোলমুখ থেকে ফেরান বার্সা ডিফেন্ডার। তবে আলগা বল ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন সালাহ। কিন্তু তার শট বার পোস্টে লেগে ফিরে আসলে হতাশা বাড়ে সফরকারীদের।

যোগ করার সময় ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি খেলোয়াড় দেম্বেলে। গোলরক্ষককে একা পেয়েও বার পোস্টের অনেক উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি। পরের মিনিটে দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেন তিনি। মেসির পাস থেকে আবারো একেবারে ফাঁকায় বল পান দেম্বেলে। কিন্তু দুর্বল শটে বল তুলে দেন অ্যালিসনের হাতে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.