শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ- আবুল মোমেন
সিটি নিউজ : চট্টগ্রামে স্থানীয় ফুলকি এ.কে.খান মিলনায়তনে শুরু হয়ে গেল ১২তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৯। ইতোমধ্যে ঢাকায় বিগত ২ মার্চ হতে ৮ মার্চ ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। বাংলাদেশ চিলড্রেন ফিল্ম সোসাইটি ঢাকা ঐ উৎসবের আয়োজন করেছিল। চট্টগ্রামে এই উৎসবের দায়িত্ব পালন করছে চিলড্রেন ফিল্ম সোসাইটি চট্টগ্রাম।
৫ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য কবি-সাহিত্যিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক আবুল মোমেন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নারীনেত্রী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিক্ষানুরাগী, সংগীতশিল্পী শীলা মোমেন। চট্টগ্রাম উৎসবের সচিব মো: কামাল উপস্থিত সবাইকে শুভে”ছা জানিয়ে এবারের উৎসবকে সফল করার জন্য আহবান জানান।
উৎসব আয়োজনের উপর আলোকপাত করে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব কমিটির পরিচালক লায়ন লোকপ্রিয় বড়ুয়া। তিনি সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এবারের উৎসবে বিশ্বের ৩২টি দেশের প্রায় ৬০টির মত শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিজের মাতৃভাষার পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের ভাষা সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হবার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি ভালো ভালো শিশুতোষ সিনেমা দেখার আহবান জানান।
এ বিষয়ে তিনি শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী এবং অভিভাবকমন্ডলীর সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বিশিষ্ট নারীনেত্রী শীলা মোমেন তার বক্তব্যে বলেন, শিশুরা আগামীর কান্ডারী এবং তারা আজ সারাবিশ্বে যেভাবে তাদের মেধার বিকাশ ঘটিয়ে চলেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।
আমাদের বাংলাদেশের শিশুরাও পিছিয়ে নেই। তারাও বেশ সুন্দর সুন্দর শিশুতোষ ছবি নির্মাণ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। তিনি শিশুদের মেধা ও বুদ্ধি বিকাশের জন্য শিশুদের জন্য নির্মিত ভালো ভালো সিনেমাগুলো দেখার আহবান জানান। তিনি ১২তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করে উৎসবের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনী ঘোষণার সাথে সাথে চট্টগ্রাম ভায়োলিনিস্ট এর শিল্পীরা সুরের মূর্ছনায় বাজিয়ে তোলে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ যা উপস্থিত সবাইকে অনেক বিমোহিত করে। প্রধান অতিথি রাষ্ট্রীয় একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে বলেন, শিশুদের জন্য আজ অনেক অনেক সুন্দর সুন্দর সিনেমা নির্মিত হচ্ছে যা আমাদের সময়ে খুব একটা পাওয়া যেত না। আমি নিজে একজন চলচিত্র হিসেবে গর্ববোধ করি বাংলাদেশে চিলড্রেন ফিল্ম সোসাইটি ঢাকাতে এবং চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম চিলড্রেন ফিল্ম সোসাইটি বিগত ১২ বছর ধরে নিয়মিতভাবে শিশুদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও তথ্যনির্ভর শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে যে উৎসব আয়োজন করে যাচ্ছে তার জন্য তাদের সবাইকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। তিনি বলেন, শিশুদের মেধা বিকাশের পাশাপাশি শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
আলোচনার শেষপ্রান্তে সভাপতি বর্ষীয়ান কবি, সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্ত তাঁর বক্তব্যে বলেন, শিশুদেরকে জীবন গঠনে লেখাপড়াকে অত্যাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, আজ অত্যন্ত ভালো লাগছে আমাদের দেশে এবং বিদেশে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখে আমাদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা নিজেদেরকে গড়ে তুলছে বেশ ঋদ্ধ সংস্কৃতির সাথে।
তিনি এই উৎসব সফল করার জন্য চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম চিলড্রেন ফিল্ম সোসাইটি ও উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এখানে উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে আরো ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ দিনব্যাপী এই উৎসবের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্মিত শিশু চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। আগামী ২৭ এপ্রিল ২০১৯ চট্টগ্রাম জেলা শিশু একাডেমিতে বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে উৎসবের পর্দা নামবে।