সরকার বেগম জিয়াকে সবচেয়ে বেশী ভয় পায়

0

সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারী দলের কারসাজীতে গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত। গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আওয়ামীলীগ ও সরকার বেগম জিয়াকে সবচেয়ে বেশী ভয় পায়। বাংলাদেশের জনগণ এখন আওয়ামী লীগের সাথে নেই। তারা সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পুলিশ দলে পরিণত হয়েছে। তাই তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য গণতন্ত্রকে নিঃশেষ করে ফেলছে।

তিনি বুধবার ৩০ মে শহীদ জিয়ার ৩৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

এতে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, গণতন্ত্র যেখানে বন্দি, সেখানে নির্বাচনের প্রশ্নই আসে না। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি ভেবে থাকেন, সাজানো প্রশাসন ও পুলিশ দিয়ে আরেকটি ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করবেন, সেটা ভুল করবেন। দেশের মানুষ তা কখনোই হতে দিবে না। বেগম জিয়াকে আইনী লড়াইয়ে মুক্ত করা যাবে না, আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অচিরেই এ অনির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে দেশকে রক্ষা করতে হবে। ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে অবৈধ সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে। একেক সময় একেক নাটক মঞ্চস্থ করছে। জনগণ এই নাটক বুঝে গেছে। তাই সবাই বিএনপির কাতারে সামিল হয়েছে। জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি আগামীতে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটাবে।
ইফতার মাহফিলে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ডা. শাহাদাত হোসেনের মাধ্যমে টেলিফোনে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আজ কথা বলার অধিকার নেই। সরকার দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের টাকা লুটপাট করেছে।

প্রশ্ন ফাঁস ও নকলের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের মানুষ তাদের আস্থার প্রতীক বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আরো সুদৃঢ় করে ইস্পাতের মত কঠিন রূপ দিতে হবে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের ঐক্যই পারে বেগম জিয়াকে মুক্ত করে আনতে। বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণের সমর্থন এবং ঐক্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়ান সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জিসহ কূটনৈতিক, পেশাজীবি, সাংবাদিকবৃন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ২০ দলীয় জোটের শরীক দল কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ইব্রাহিম বলেছেন, কোন স্বৈরাচারী সরকারের পতন আন্দোলন ছাড়া হয়নি। আন্দোলন শুরু করলে, গণঅভ্যুত্থান হয়ে যাবে। জনগণই রাস্তায় নেমে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাবে। চট্টগ্রাম থেকেই এই আন্দোলন শুরু হবে। চট্টগ্রাম আজকে যেটা চিন্তা করে সারা বাংলাদেশ তা একদিন পরে জানে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যেভাবে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে তাতে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা কমে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় নিরাপত্তা ও বিচারহীনতার কারণে সমাজে অস্থিরতার সৃষ্টি হচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বেগম জিয়া সারা জীবন গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। কোনো ষড়যন্ত্রের সাথে তিনি আপোষ করেননি। বর্তমান ক্ষমতাশীনরা বিগত ১১ বছর যাবত শহীদ জিয়ার হাতে গড়া দল বিএনপিকে ভাঙ্গার নানামূখী ষড়যন্ত্রে চেষ্টা করেছে। তাতে সফল না হয়ে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে বেগম জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়ে বিএনপিকে দুর্বল ও নেতৃত্ব শূন্য করে আর একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়।

তাদের সেই স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় অসার পর থেকে সারাদেশে ৭৮ হাজার মামলায় ১৮ লক্ষ’রও বেশি নেতা কর্মীকে আসামী করেছেন। বহু নেতা গুম, খুন ও পুঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন। এত নির্যাতনের পরও একজন নেতা কর্মী বিএনপি ছেড়ে যায়নি। হাজারো নির্যাতন সহ্য করে এখনো বুক ফুলিয়ে স্লোগান ধরে’’ আমার নেত্রী আমার মা, বন্দি রাখতে দিব না’’।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, সরকার বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সভা সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের সভা সমাবেশের কর্মসূচি দিলেই সরকর ভীত হয়ে উঠে। তাই পতনের আগে সরকার বিরোধী দলের উপর মরণ কামড় দিচ্ছে। শেষ চেষ্টা করছে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে। এই সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া আবারো ৫ জানুয়ারী মার্কা আর একটি একতরফা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু সেইটি দেশের জনগণ হতে দেবে না।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জালাল উদ্দিন মজুমদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান।

এ সময় ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চবি শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, নগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এম এ আজিজ, মো. মিয়া ভোলা, সবুক্তগীন সিদ্দিকী মক্কী, শেখ মহিউদ্দিন, এনামুল হক এনাম, এম এ হালিম, ইসহাক কাদের চৌধুরী, নাজিমুর রহমান, সৈয়দ আহমদ, হারুন জামান, মাহবুব আলম, মনিরুল ইসলাম ইউসুফ, শফিকুর রহমান স্বপন, মোহাম্মদ বাবর মিয়া, জাহেদুর করিম কচি, নবাব খান, শেখ নুরুল্লা বাহার, ২০ দলীয় জোট নেতা অধ্যাপক নুরুল আমিন, মুক্তিযোদ্ধা মো. ইলিয়াছ, আবদুর রহমান, ওসমান গণি সিকদার, আবু মোজাফ্ফর মো. আনাছ, আলাউদ্দিন আলী, আনোয়ার সাদেক, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আবদুল মন্নান, জাহাঙ্গির আলম দুলাল, আনোয়ার হোসেন লিপু, আবুল হাসেম, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, গাজী মো. সিরাজউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর আলম মঞ্জু, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন মবিন প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.