মহিউদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে শোকাহত এলাকাবাসীর মানববন্ধন

0

নিজস্ব প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম :  হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গত ২৬ মার্চ প্রকাশ্য দিবালোকে খুনী ইকবাল গং কর্তৃক নৃশংসভাবে ৩৮নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন মহিদ হত্যার প্রতিবাদে শোকাহত এলাকাবাসীর ব্যানারে জামালখানস্থ প্রেস ক্লাব চত্বরে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি সোমবার ২ এপ্রিল বিকাল ৩টা থেকে পালন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে একাত্মা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাবেক কমিশনার নুরুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুল ইসলাম, হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ৩৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এম. হাসান মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ হাসান, ৩৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শফিউল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ সদস্য শেখ নাছির আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি।

সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী হাসান মুন্নার পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, হাজী মো. সালামত আলী, মহিউদ্দিন মহিদ এর পরিবারের পক্ষে চাচা মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী মঈনু, মহিউদ্দিন মহিদ এর সহধর্মিনী মিসেস পিংকি, বোন মিসেস হীরা, নারী নেত্রী গুলনাহার, রুবি আকতার ও শারমিন আকতার।

উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সদস্য নেছার আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন দেলু, হাজী মো. ইব্রাহিম, কাজী রাজেশ ইমরান, হোসেন সরোয়ার্দী, ৩৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সালাহ উদ্দিন, মো. কামরুল হোসেন, জাহিদুল আলম মিন্টু, মো. হানিফ, মনজুরুল আলম, এলেম উদ্দিন, মহানগর যুবলীগ নেতা আশরাফুল গণি, ফারহান উদ্দিন জাহেদ, জহির উদ্দিন সুমন, রাশেদ চৌধুরী, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান রুমি, ১৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক মো. সেলিম উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম, মুজিবুল হক, ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন রশিদ আলম, আলহাজ্ব জাবেদ হোসেন, ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ, যুবনেতা ইয়াছিন ভূইয়া, মো. নুরুজ্জামান, মো. হোসেন, মো. নজরুল, মো. আশরাফ উদ্দিন আকাশ, মো. শাহনেওয়াজ, মো. নাঈম উদ্দিন, মো. আরিফ প্রমুখ।

মাববন্ধনে মো. নুরুল আলম বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যুবক মহিউদ্দিন মহিদকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে হাজী ইকবাল গং এর সাঙ্গপাঙ্গরা।

যেখানে মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত বিদ্যালয় এবং শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে খ্যাতি রয়েছে সেখানে রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে আওয়ামীলীগের নামধারী হাজী ইকবাল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তিনি হাজী ইকবাল সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, সৌদি আরব থেকে মানুষের টাকা আত্মাসাৎ করে, বাংলাদেশে আত্মগোপন করে, কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি উক্ত সৌদি প্রবাসী নগরীর মাদরাবাড়ি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে দীর্ঘ ১১ মাস জেলের ঘানি টানতে হয়েছিল।

শুধু তাই নয়, ঐ পাওনাদারকে পাওনা টাকা ফেরত দিবে বলে বিভিন্ন চলছাতুরী করে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করেও পরবর্তীতে কোন টাকা ফেরত দেয়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাজী ইকবালের বাবা মো. আলী আকবর মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। বাংলাদেশের ১ দফার প্রবক্তা এম.এ আজিজকে ঐ আলী আকবর গং সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বেধড় মারধর করে রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল এবং তারা ভেবেছিল এম. এ আজিজ আর বেঁচে নেই। এই ভেবে তারা চলে গিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বংশপরস্পরায় হাজী ইকবাল গং এলাকায় মদ, জুয়া ও ইয়াবার ব্যবসা সহ এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। যাহা প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জানা ছিল।

কিন্তু আওয়ামীলীগের খোলসে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তার অপকর্ম চলাতে থাকে এবং ঢাকতে থাকে। কিন্তু এলাকার প্রতিবাদী যুবক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার মাঠকর্মী হয়ে ঐ হাজী ইকবাল গংদের অপকর্মে এলাকাবাসীকে নিয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ সৃষ্টি করলে সন্ত্রাসী বাহিনী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ৩ দফা হত্যা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মহিউদ্দিন মহিদ এলাকার একজন প্রিয়পাত্র হওয়া সেসব হুমকি-ধমকি এবং হত্যাচেষ্টা উপেক্ষা করে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মার্চ দিবালোকে হাজী ইকবাল গং নির্মমভাবে হত্যা করে মহিউদ্দিন মহিদকে।

দীর্ঘ ৮দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও প্রধান আসামী হাজী ইকবালসহ অন্যান্য আসামী ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। প্রশ্ন থেকে যায়, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা হাজী ইকবালগংদের গ্রেফতার করতে বাধা কোথায়? কিন্তু এলাকাবাসীর অব্যাহত আন্দোলনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী খুনীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন এলাকাবাসী।

আজ জামালখান প্রেসক্লাব সম্মুখে মানববন্ধনে মূল লক্ষ্য হচ্ছে জাতির বিবেক ফটো সাংবাদিক, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া সাংবাদিক ও অন্যান্য শ্রেণী- পেশার সর্বস্তরের মানুষের কাছে আকুল আবেদনের প্রেক্ষিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়। তাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইন মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাতে সবিনয়ে অনুরোধ জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.