রোহিঙ্গাদের দেখতে এলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে এবং মিয়ানমার প্রত্যাখ্যাত এই মানুষগুলোর দুর্দশার কথা নিজের মুখে শুনতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম তিন দিনের সফরের তৃতীয় দিনে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন।

আজ সোমবার (২ জুলাই) মহাসচিব কক্সবাজার বিমান বন্দরে পৌঁছলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, আর আর আর সি (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুল কালাম আজাদ জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতারেস ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমকে স্বাগত জানান ।

বেলা ৯ ঘটিকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোটেল সায়মন এ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে মহাসচিবকে ব্রিফিং করেন। এসময় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম উপস্থিত ছিলেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার নাগরিকদের আশ্রয়, চিকিৎসাসহ সবধরনের সহায়তা দিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

গত ১৩ এপ্রিল ২০১৮ মিয়ানমারের সাথে সমঝোতা স্মারক ( এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়েছে।

উখিয়ায় কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চান। এসময় এক রোহিঙ্গা বলেন, আমার সাত সন্তান ছিল । চারটি মেয়ে, তিনটি ছেলে। সেনাবাহিনী আমার চোখের সামনে চারটি মেয়েকে আঁছড়িয়ে মেরেছে, আমার স্ত্রীকে যৌন নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, এমতাবস্থায় অন্য তিন ছেলে পালিয়ে যায়।

আমিও রোজার শেষের দিকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসি। আজ পর্যন্ত আমার তিন ছেলের সন্ধান পাইনি। এভাবে সেনাবহিনীর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে বলেন, আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার বিচার চাই এবং নাগরিক অধিকার নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই।

অন্য এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, আমার মেয়ে আটমাসের গর্ভবতী ছিল সেনাবাহিনী তার স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে যৌন নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের উপযুক্ত বিচার চাই।

জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট কুতুপালং এক্সটেনশন ক্যাম্প, লম্বাসিয়া নারীবান্ধব সেবা কেন্দ্র, কুতুপালং ডি-৪ এ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। প্রেস ব্রিফিং এ মহাসচিব বলেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘ খুবই আন্তরিক।

তিনি বলেন রোহিঙ্গাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি জাতিসংঘ কৃতজ্ঞ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গা ইস্যুতে সন্তোষজনক অর্থসহ সবধরনের সহায়তা দেওয়া এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা।

বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮ শত ৮০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং আরো ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।

জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া খানেম, ইউএনএইচসিআর এর নির্বাহী পরিচালক কেভিন এলেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।খবর পিআইডি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.