খাগড়াছড়ি রামগড়ের সড়কগুলোতে ভোগান্তি

0

শ্যামল রুদ্র, রামগড় (খাগড়াছড়ি) : রামগড়-ফেনী সড়কের বাগান বাজার পাকা সেতু ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। অত্যন্ত বিপজ্জ্বনক অবস্থায় রয়েছে বর্তমানে। যেকোন সময় বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় এই সড়কের এটি সহ আরও কয়েকটি সেতুর অবস্থাও শোচনীয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কংক্রিট,পিচ,বালু উঠে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলছে। চলমান বর্ষায় পরিস্থিতি আর খারাপ হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত হয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে (খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়ক) রাস্তার ওপর বড় ধরনের খাদ সৃষ্টি হয়ে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটছে। মাদ্রাসার সামনের রামগড়-ফেনী সড়কেরও একই অবস্থা, পিচ ঢালাই করা সড়কের শোচনীয় পরিস্থিতিতে জনগণ অবর্ননীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

যান বাহন চলাচলে মারাত্বক সমস্যা হচ্ছে। এখানে বড় গর্ত হয়ে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি ব্যাংকের সামনে থেকে বাজার পর্যন্ত সড়কের অবস্থা এখন নাজুক। হেয়াকো,বালুটিলা ও কয়লা বাজার এলাকায় সড়কের অবস্থাও এতটা ভালো নয়। বৃষ্টিতে পানি জমে জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। বাগানবাজার,কয়লাবাজার ও ভাঙ্গাটাওয়ার এলাকায় সেতুর অবস্থা খুব খারাপ। বাগান বাজারে সেতুর পিলারের গোড়ায় ধস নেমেছে, কয়লা বাজারের সেতুতে জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। সোনাইপুল নির্মীয়মান সেতুর পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে।

অন্যদিকে, রামগড়ের অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গজর্নতলী যেতে কবরস্থান সংলগ্ন সড়কটি কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। মানুষ পা‘য়ে হেটে বহু কষ্টে যাতায়ত করছে। রাস্তা সংস্কারের কারণে চলমান বর্ষায় এলাকাবাসী ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। জরুরী মেরামতের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয় গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।

স্থানীয় কাউন্সিলর বিষ্ঞ দত্ত জানান, কাজ অনেকটাই এগিয়েছে, মাটি ফেললেই হয়ে যাবে। জগন্নাথ পাড়া সড়কটিও ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এর বাইরে রামগড়-পিলাক সড়কে টিলা ধসে যানবাহন চলাচল করতে বিঘ্ন ঘটছে। বাজার এলাকা থেকে ইউএনও অফিস‘র সামনের রাস্তাটিও নানা স্থানে গর্ত। বল্টুরাম হয়ে খেদাছড়া পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশ এক কথায় শোচনীয়। সরেজমিন সড়কের বিভিন্ন স্থানে টিলা ধসের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা মান্নান বিডিআর এর বাগানের ধসটি বেশ বড় ধরনের। ওই এলাকার বাসিন্ধা তরুনত্রিপুরা, লালু ত্রিপুরা ও ঝর্না কুরী জানান, কাশিবাড়ি ও সাহাব উদ্দিন মেম্বার এর বাগান সংলঘ্ন দুটি কালভার্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। গোড়ার মাটি ধসে গেছে। যানবাহন অতিকষ্টে চলাচল করছে।

রামগড়-ফেনী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারন সম্পাদক মো.ইব্রাহীম জানান, রাস্তার বিভিন্ন অংশে ইটের কংক্রিট, পিচ, বালু উঠে গেছে। কয়েক যুগের পুরোনো বেইলি সেতুর অবস্থা নাজুক। নাটবল্টু খুলে পাটাতন নড়বড়ে হয়ে গেছে। সেতুর ওপর গাড়ি উঠলে কটমট আওয়াজে কেঁপে ওঠে। জাপানী উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) প্রতিনিধি সুদীপ্ত চাকমা এই প্রতিবেদককে বলেন,সেতুগুলো অনেক পুরোনো। মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে গেছে বহু আগেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সীমাবদ্ধতার কারণে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো হয়। যে কারণে প্রায়ই সেতুর পাটাতন খুলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাস্তা ও সেতু পর্যায় ক্রমে চার লেইন এ উন্নিত করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ফেনী-খাগড়াছড়ি বাস মালিক সমিতির ব্যবস্থাপক সাধু চক্রবর্তী ও ইউনিয়ন নেতা মো. ইব্রাহীম জানান, রামগড়-খাগড়াছড়ি সড়কের নাকাপা বাজার থেকে জালিয়াপাড়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ভাঙ্গাচোরা সড়কে গাড়ি প্রায়ই বিকল হয়ে যায়। এতে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বৃদ্ধি পায়। সড়ক বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর রাস্তাা ও সেতু সংস্কারের দাবি জানিয়ে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

সড়কের বাগান বাজার পাকা সেতুটি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। পশ্চিম পাশের পিলারের গোড়ায় মাটি সরে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ লাল পতাকা টানিয়ে রেখেছে। সেতুর মাঝ বরাবর প্রায় এক ফুটের মত দেবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে পিচ-কংক্রিটের প্রলেপ দিয়ে কোনভাবে কাজ সাড়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ছোটন দে, সুধীর বনিক ও মো. জাকির হোসেন বলেন, এখানে ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.