নিরপেক্ষ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইঃ অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন

0

দিলীপ তালুকদারঃ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার। পরিচ্ছন্ন ও সুষ্ট ধারার রাজনীতির ত্যাগী ও সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে রাঙ্গুনিয়াতে বিএনপির একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব কুতুব উদ্দিন বাহার। রাজনীতির পাশাপাশি জড়িত আছেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনেক সংগঠনের সাথে। রাঙ্গুনিয়াতে দীর্ঘদিন যাবত রাজনীতি করে আসছেন মানুষ গড়ার এই কারিগর।

রাঙ্গুনিয়া-৭ আসন অর্থাৎ রাঙ্গুনিয়া থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে জাতীয় সংসদ সদস্যের জন্য প্রার্থী হবেন। দলের দুঃসময়ের কান্ডারী হিসেবে দলীয় হাই কমান্ডও অবগত বাহার একজন ক্লিন ইমেজের রাজনীতির ধারক বাহক।

সিটি নিউজ বিডিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কুতুব উদ্দিন বাহার বলেন, রাঙ্গুনিয়াতে ওপেন কোন দলীয় মিছিল, সভা, সমাবেশ করতে পারছিনা। স্বাভাবিকভাবে যে গতিতে রাজনৈতিক তৎপরতা বা কর্মসূচী পালনসহ কর্মকান্ড চালানোর কথা আমরা তা করতে পারিনা। দলীয় ব্যানারে আমাদের প্রোগ্রাম করতে দিচ্ছেনা।

কিছুদিন আগে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ড জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী পালনের জন্য ফুল দিতে রাঙ্গুনিয়াতে শহীদ জিয়ার প্রথম মাজারে যেতে পারিনি। ছাত্রলীগ, যুবলীগের ছেলেরা বাঁধা দিয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের ছেলেদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। দলীয় কোন কর্মকান্ড এখন করতে পারছিনা। তারপরেও ২০০৮ সালে সালাউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচন করে চলে আসার পর রাঙ্গুনিয়াতে উনি আর যাননি।

২০০৮ সালের পর থেকে আমি রাজনীতির কর্মকান্ড সুশৃংখলভাবে ও সুষ্ঠধারায় স্বপ্রনোদিত হয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে যে শুন্যতা বিরাজ করছিল বিএনপিতে তা পূরণ করার চেষ্টা করেছি। যতটুকু নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও দলীয় নেতাকর্মীদের সংগঠিত ও খোঁজ খবর নেওয়া। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা আইনগতভাবে মোকাবেলাসহ মনোবল চাঙ্গা রাখতে কাজ করেছি।

২০১৩-১৪ সালে দলীয় কর্মকান্ড ও কর্মসূচীতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে মামলা হামলা শিকার হয়েছেন। তখন তাদের পাশে দাঁড়নো থেকে শুরু করে আইনগত সহায়তায় কাজ করেছি। এখনও আমি দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে আছি। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেও নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি। রাজনৈতিক কর্মকান্ড যেহেতু করতে পারছিনা, সেহেতু আমি প্রতিদিন রাঙ্গুনিয়াতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছি।

সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে দলীয় কর্মকান্ড করছি। কুতুব উদ্দিন বাহার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে রাঙ্গুনিয়া থেকে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও সংগঠক অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বলেন, বিগত সাড়ে নয় বছরের আওয়ামীলীগের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে দেয়া হয়নি। আওয়ামীলীগ ১ম দফা ক্ষমতায় এসে কিছুটা লিবারেল ছিল।

কিন্তু পরে তারা হার্ডলাইনে চলে যায়। এখন বলতে গেলে বিরোধী কোন মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। এখানে একদলীয় শাসন, নির্যাতন, নিত্য ব্যাপার। আমাদের দলীয় মাত্র ৫/৬ জন এক জায়গায় বসে চা খাবে, পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায়।

রাঙ্গুনিয়াতে এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তা হবেই। জনগনের ট্যাক্সের টাকায় কাজ করতে হবে। আমার টাকা দিয়ে, আমার উন্নয়ন হচ্ছে। রাস্তাঘাট, কালভার্ট এগুলো হবেই-এটার

ধারাবাহিকতা সরকারের দায়িত্ব। এখন দেশে উন্নয়নের নামে কোন কোন ক্ষেত্রে হরিলুট হচ্ছে। রাস্তাঘাটের যে করুণ চিত্র তা আপনিও দেখছেন। ১ কোটি টাকা যেখানে বাজেট সেখানে ২০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। অবশিষ্ট টাকা দলীয় নেতাকর্মীদের ও ঠিকাদারের পকেটে যাচ্ছে। এটাই উন্নয়নের চিত্র। এটা রাস্তাঘাটের উন্নয়ন নাকি দলীয় উন্নয়ন কোনটা বলবেন।

যারা বা যাদের চালচুলো ছিলনা তারা এখন গাড়ীবাড়ী ও প্রচুর ধন সম্পদের মালিক। অবৈধ অর্থের পাহাড় করেছে কারা- তার চিত্র আপনাদের কাছেও আছে। তিনি বলেন, নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে না হয়, তাহলে সুষ্ঠ নির্বাচন কিভাবে সম্ভব বলেন? আপনি আমাকে সাঁতার কাঁটতে বললেন, কিন্তু আমার হাতপা বেঁধে যদি পানিতে নামিয়ে দেন তাতে কি সম্ভব?

আপনি আমারে কোন সুযোগ দেবেন না। লেভেল প্লেইং মাঠ হবেনা। আমি নির্বাচন নিয়ে যদি প্রচার-প্রচারণা চালাতে না পারি। পোষ্টার যদি লাগাতে না পারি, দলীয় কর্মকান্ড যদি করতে না পারি তাহলে সে নির্বাচনে কিভাবে আমরা যাব। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া এটা দলীয় হাই কমান্ডে সিদ্ধান্ত হবে। ২০১৮ সালে এক তরফা নির্বাচন হবে না। বিএনপির দাবী, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবী সরাকারের কাছে। এই দাবীগুলো আদায় করেই আমরা নির্বাচনে যাবো।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.