খুনী হাজি ইকবাল এতদিন কোথায় ছিলেন?

0

দিলীপ তালুকদারঃ চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর এলাকায় চাঞ্চল্যকর যুবলীগকর্মী মো. মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি হাজি ইকবাল এতদিন কোথায় ছিলেন? এমন প্রশ্ন নগরীর সর্বত্র। পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করতে পারলেন না। অনেকেই বলছেন পুলিশ মোটা অংকের টাকা খেয়ে তাকে গ্রেফতার করেনি।

একটি নিভরযোগ্য সূত্র জনায়, যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিনকে হত্যা করার পর ঢাকায় গিয়ে গা ঢাকা দেন হাজি ইকবাল গংরা। সেখানে পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশী অভিযানে ৪ জন ধরা পড়লেও হাজি ইকবাল পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সেখানেই পুলিশের সাথে একটি দফারফা হওয়ায় হাজি ইকবাল গ্রেফতার হয়নি। অন্য একটি সূত্র জানায়, মোটা অংকের টাকা লেনদেন হয়েছে।

তাই দীর্ঘ ৬ মাস পুলিশ হাজী ইকবালের ধারে কাছেও যায়নি। অবশেষে হাজি ইকবালকে পুলিশ গ্রেফতারের জন্য খুঁজে না পেলেও তিনি সদর্পে পুলিশের সামনে দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মহিউদ্দীন মুরাদের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মহিউদ্দীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি হাজি ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। গত ২২ জুলাই যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দীন হত্যায় হাজি ইকবালসহ ২০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয় বন্দর থানা পুলিশ। এতে প্রধান আসামী হাজি ইকবাল।

অভিযোগপত্রে হাজি ইকবালের ভাই মুরাদ, বিপ্লব, ডিউক, আজাদ, শেখ মহিউদ্দিন, মাহিব, আজগর, জিসানসহ মোট ২০ জনকে আসামি করা হয়। আসামীদের মধ্যে ১০ আসামী কারাগারে বাকী ১০ জনকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। গত ২৬ মার্চ নগরের সল্টগোলা ক্রসিংয়ের মেহের আফজাল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি সভা চলাকালীন প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে যুবলীগকর্মী মো. মহিউদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। জানা যায়, নগরীর দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান মুরাদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাসানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন নিহত মহিউদ্দিন।

যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও কোন পদে ছিলেন না। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভাসমাবেশে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন মহিউদ্দিন। একই এলাকায় তাদের বিরোধী গ্রুপে ছিলেন জাতীয় নির্বাচনে বন্দর আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতা হাজি ইকবাল।

যিনি ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে নগরীর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘হায় মুজিব হায় মুজিব’ মাতমে নিজের শরীর থেকে কথিত রক্ত ঝড়ানোর চেষ্টায় জিঞ্জির চাকু দিয়ে আঘাত করে শিয়াদের মতো মাতম করে আলোচনায় আসেন। এতে অবশ্য দল এবং সাধারণ মানুষের কাছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, হালিশহর এলাকায় তার রয়েছে নিজস্ব এক সন্ত্রাসী বাহিনী। এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, জুয়া সব অপকর্মের সাথে সরাসরি জড়িত।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.