বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ কালুরঘাট সেতুঃ জসিম উদ্দিন সিআইপি
গোলাম শরীফ টিটুঃঃ তারুন্য হল বর্ষার নদীর মত প্রকৃতির সুধাধারা। তারুণ্য ধারন করে সত্য প্রতিষ্ঠার প্রেরণা। ভেঙ্গে গড়ার আকাঙ্খা। ভবিষ্যত আলোহীন গহন কালোর অভিমুখে অগ্রসরমান। জাতির সংখ্যাঘরিষ্ট জনগোষ্ঠি তরুণ। এই কার্যক্রম, তরুণ সমাজটি চাইলে দেশকে পুরোটাই পাল্টে দিতে পারে। বিশ্বায়নের এই যুগে শক্তহাতে তরুণদের ধরতে হবে- কৃষি, শিক্ষা, শিল্প, সাংস্কৃতিক, শুদ্ধতম ভাবে এগিয়ে নেয়ার লাগাম। এমনই একজন তারুণ্য চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কৃতি সন্তান জসিম উদ্দিন সিআইপি।
প্রবাসী হলেও লাল সবুজের উড্ডীন পতাকার জীবন উড়াতে চান জসিম স্বপ্নযাত্রায় মুক্তির বার্তা ছড়িয়ে। প্রবাসে থাকলেও ঘন ঘন আসেন মাতৃভুমির টানে নিজের জন্মস্থানে। তবে প্রবাস থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর নেমেই মন বিষাদে ভরে উঠে যখন মনে পড়ে জরাজীর্ন ও দুর্বল কালুরঘাট সেতুতে দীর্ঘটন যানজটে আটকে থাকার দু:সহ স্মৃতি। তরুন শিল্পপতি, সমাজ সেবক জসিম উদ্দিন সিআইপি গত সপ্তাহে একান্ত সাক্ষাতকারে বলেন,’জীবন বহতা নদীর মত প্রবাহিত জীবন ও জীবিকার পথে।
আমাদের অর্থে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। দেশ সমৃদ্ধ হয়। অথচ প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা বোয়ালখালীতে গত এক দশকে সেতুটি করা হবা বলে বোয়ালখালীবাসীকে অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। এবার নির্বাচনের আগে সেতুর কাজ দৃশ্যমান যদি অগ্রগতি না হয় তবে হবে অত্যন্ত দু:খজনক ও বেদনাদায়ক। বোয়ালখালীর প্রানের দাবীর সঙ্গে কোন আপোশ চলতে পারে না। সরকার আসে সরকার যায় বোয়ালখালী সেতুর কারনে অনেক মুমর্ষ রোগী শহরে পৌঁছার আগেই সেতু পারাপার হওয়ার পুর্বেই জীবন দিতে হয়।
গর্ভবর্তী মহিলাকে গাড়ীতেই সন্তান প্রসবের ঘটনাও ঘটেছে। বোয়ালখালীবাসী একমাত্র যোগাযোগ ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ায় নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। বহদ্দার হাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত রাস্তার এক পাশে বন্ধ থাকায় দীর্ঘ যানজট নগরবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলছে’। ব্যবসায়ী ও প্রবাসী সংগঠক জসিম উদ্দিন সিআইপি বলেন,’ ১৯৩০ সালে শুধু রেল যোগাযোগের জন্য কালুরঘাট সেতুটি নির্মান করা হয়।
১৯৬২ সালে ৬৩৮ দশমিক ৫ মিটার দীর্ঘ এ সেতু সব ধরনের যান চলাচলেল জন্য উম্মুক্ত করা হয়। রেলওয়ের অন্যতম পুরনো এই সেতু দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি ভারী যানবাহন চলাচল করছে। গত এক দশকে কয়েক দফা মেরামত হলেও সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপুর্ন হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরই এ সেতুতে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলনও হয়েছে।
স্থানীয় মানুষের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পুরনো এ সেতু ভেঙ্গে নতুন একটি রেল সেতু নির্মানের পরিকল্পনা করে রেলপথ মন্ত্রনালয়। ১৫ বছর আগে নতুন এ সেতু নির্মানের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও সম্প্রতি বর্তমান সরকার কালুরঘাট সেতু নির্মানের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে এসেছে’। জসিম উদ্দিন সিআইপি বলেন,’ দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) এ সেতু নির্মানে অর্থ দেবে। এ জন্য বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিার মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋন সহায়তা চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
এর আওতায় ১১৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্নফুলী নদীর কালুরঘাট বোয়ালখালী অংশে রেললাইন কাম সড়কসেতু নির্মান করা হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে সেতু নির্মান কার্জ দৃশ্যমান হবে বলে জানা গেছে। বোয়ালখালীবাসীর একটাই কথা, সময়ের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া যাবে না, ১০ বছর কম সময় না। বোয়ালখালীর উন্নয়ন নিয়ে টাল বাহানা বন্ধ করতে হবে। যত সমীক্ষার প্রয়োজন আছে সব করেন। কিন্তু দ্রুত করেন। বোয়ালখালীবাসী উন্নয়ন বৈষম্যের স্বীকার, দায় এড়াতে পারতেন না বর্তমান সাংসদ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
জসিম উদ্দিন সিআইপি বলেন,’ মানুষ বাড়ছে। শহরে জমি বাড়ছে না। দ্রুত শহর সম্প্রসারন করা প্রয়োজন। কালুরঘাট সেতু হলে বোয়ালখালী গড়ে উঠবে একটি উপ-শহর হিসাবে। কালুরঘাট ইন্ডাষ্ট্রিয়াল এরিয়া বোয়ালখালী পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে। গড়ে উঠতে পারে লক্ষ লক্ষ মানুষের বাসস্থান। হাজারও সম্ভাবনা থাকার পরও একটি সেতুর কারনে পিছিয়ে পড়েছে বোয়ালখালী।