ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সম্ভবঃ ডা. মিনহাজ

0

জুবায়ের সিদ্দিকীঃঃ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভার রামপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান। স্কুলজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ন-আহবায়ক (১৯৮৩-৮৪) ও ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৮৪-৮৫), সরকারী মহসিন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক, মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য (১৯৮৭-৯০), সাবেক যুগ্ন সম্পাদক ছাত্রলীগ, সিলেট জেলা শাখা (১৯৯৩-৯৪), সাবেক সভাপতি ছাত্রলীগ ওসমানী মেডিকেল কলেজ (১৯৯৪-৯৫), সাবেক সদস্য ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি (১৯৯২-৯৫) ও সাবেক সদস্য বিএমএ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল (১৯৯৭-২০০০) এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মিনহাজুর রহমান ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট ছিলেন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ছিলেন।

এ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতণা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উজ্জীবিত ডা. নিমহাজ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং দলীয় কর্মসুচী বাস্তবায়নে সোচ্চার ছিলেন। একই সাথে চট্টগ্রামের জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন তৃনমুল ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে আসছেন। তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৯৫ সালে এমবিবিএস এবং ২০০২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিষয়ে এম.ফিল ডিগ্রী লাভ করেন ।

সাবেক ছাত্রনেতা ও মেধাবী চিকিৎসক ডা. মিনহাজ ২০০৪ সালে ইন্ডিয়ান কলেজ অব মেডিকেল আলট্রাসাউন্ট, মুম্বাই কতৃক প্রদত্ত ফেলোশীপ গ্রহন, ২০০৫ সালে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব মেডিকেল আল্ট্রাসাউন্ট ইন মেডিসিন বায়োলজীর সদস্য লাভ করেন। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সংগঠক ও চিকিৎসক ডা. মিনহাজুর রহমানের গবেষণালব্দ প্রকাশনা ছাড়াও দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে তার প্রায় ১৭ টি প্রকাশনা প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা, সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠনে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত তিনি।

সাতকানিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং ও কেরানীর হাট জামেউল উলুম ইসলামীয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা সাতকানিয়া চট্টগ্রামের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং উত্তর সাতকানিয়া জাফর আহমদ চৌধুরী কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তিনি। নগরীর নাসিরাবাদে অবস্থিত অর্কিডস স্কুল এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ছাড়াও সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ কিডনী ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের আজীবন সদস্য তিনি। সেবা ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, প্রিমিয়ার হসপিটাল, সাউথ পয়েন্ট হসপিটাল আগ্রাবাদ ও বেবী কেয়ার (এন আই সি ইউ) প্রবর্তক মোড় চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি।

ব্যক্তিগত জীবনে দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক তিনি। তার স্ত্রী ডা. জেবীন চৌধুরী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক (আর.পি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এলাকায় তৃনমুল নেতাকর্মীদের সঙ্গে।

তিনি সিটি নিউজ বিডি ডট কমকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন,’ ১৯৮২ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে যাত্রা শুরু হয়ে আজ অবধি রাজপথে আছি। সাতকানিয়াতে ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংকটময় সময়ে আওয়ামী লীগের প্লাটফরম থেকে যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে জামাত শিবিরের তান্ডব মোকাবেলা করেছি। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা নির্বাচনী এজেন্টের ফরমে দস্তখত করতে অনিচ্ছুক এবং অনেকে এলাকায়ও যাননি।

এমনকি ভোটের দিন ভোট দিতেও যাননি। সে সময় দলের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তার প্রাধান নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলাম। নিজের ত্যাগ ও শ্রমের বিনিময়ে আমি দলীয় প্রার্থীকে জয়লাভ করিয়েছি। তিনি বলেন,’ নিরবচ্ছিন্নভাবে দলের তৃনমুল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা ও সুখে-দু:খে পাশে দাঁড়ানোর কারনে আমার প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। ডা. মিনহাজ বলেন,’ ২০১৬ সালে সাতকানিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়লাভ করাতে প্রধান সমন্বয়কারীর ভুমিকা পালন করেছি আমি। পৌরসভা নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থীকে জয়লাভ করাতে সক্ষম হয়েছি’।

দলের জন্য প্রতিটি পরীক্ষায় আমি উর্ত্তীর্ন হয়েছি। তিনি বলেন,’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই এই আসন দলকে উপহার দিতে পারব। আমার অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে সক্ষম হব। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সমাজ সেবক ও সংগঠক ডা. মিনহাজ বলেন,’ ২০০৯ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি হিসেবে আমাদের এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদ ছিলেন চেমন আরা তৈয়ব। তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন আমি উনার পক্ষে উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডগুলো দেখাশোনা করেছি।

সেই পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ আমলে সাতকানিয়াতে উন্নয়ণের সুচনা হয়েছে। সাতকানিয়া একটি অবহেলিত জনপদ। রাস্তাঘাটের অবকাঠামোগত অবস্থা ঠিক ছিল না। স্কুল-কলেজের কোন উন্নয়ন ছিল না। আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম। আমাদের সুযোগ ছিল কিন্তু সে সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। ২০০৯ সাল থেকে এমপি চেমন আরা তৈয়বের নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়নের সুচনাতে নেতৃত্ব ছিল আমার। পরবর্তীতে বর্তমান সংসদ সদস্যের প্রধার নির্বাচনী এজেন্ট ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য, উপজেলা শিক্ষা কমিটি সহ সাতকানিয়া মহিলা কলেজ ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলাম।

সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে উন্নয়ন কর্মকান্ডে জড়িত ছিলাম। যেমন সাতকানিয়া রাস্তার মাথা থেকে বাঁশখালীর গুনাগরী সড়ক। সে সড়কে এখন ডাবল লেইনের কাজ চলছে। চুনতি হয়ে শাহ ছাহেবের নামে সড়ক, ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশখালী সড়কে সংযোগ হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট ছোট রাস্তাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। পৌরসভার রাস্তাগুলো এখন পীছ করা হয়েছে।

২টি স্কুল সরকারীকরন হয়েছে। স্কুল কজেলের ভবন তৈরী হয়েছে অসংখ্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদিনের বাড়ি এই সাতকানিয়াতে। উনার কাছে যখন যা চেয়েছি আমরা পেয়েছি। স্কুলের ভবন চেয়েছি, ভবন পেয়েছি। রাস্তাঘাটের জন্য উন্নয়ন সহায়তা লাভ করেছি। যখন যে কাজে উনার কাছে গিয়েছি তখন সে কাজগুলো সহজতর হয়েছে। তিনি বলেন,’ সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় এখন যে উন্নয়নের কাজগুলো চলছে তা সমাপ্ত করতে আওয়ামী লীগকে জনগন অবশ্যই সুযোগ দেবেন।

পিছিয়ে পড়া উপজেলা সাতকানিয়া-লোহাগাড়াকে উন্নয়নে সামনে নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সংগঠক ও সমাজ সেবক ডা. মিনহাজ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,’ সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় বর্তমান সংসদ সদস্যের সাথে নেতাকর্মী ও জনগনের দুরত্ব বেড়েছে। তিনি নিজস্ব বলয় তৈরী করেছেন। যে বলয়ের সাথে আওয়ামী লীগের তৃনমুল নেতাকর্মীদের সম্পর্ক নেই। নির্বাচনে দলের এমন প্রার্থী প্রয়োজন, যার উপর নেতাকর্মীরা আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারবেন। তাইলে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সম্ভব।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.