গাইবান্ধায় ডায়রিয়ার তীব্র প্রকোপ

0

সিটিনিউজবিডি : জেলার সদর উপজেলা ও আশপাশ এলাকায় হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের ডাক্তারা হিমশিম খাচ্ছেন। বর্তমানে হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে ২০টি আসনের বিপরিতে ১০ গুণ রোগী বেশি ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় অনেকে মেঝে ও সিঁড়িতে রয়েছেন। এ ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার সকালে রোগীদের জন্য হাসপাতালের ফাঁকা জায়গায় আলাদাভাবে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প নির্মাণ করেছেন। অস্থায়ী ক্যাম্পে থেকেও ৫০ জনের অধিক রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে শিশু ও নারী-পুরুষসহ ১৭০ জন ডায়রিযায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শনিবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬০ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ১১০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি আছেন। তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী শহরের সাপ্লাই পানিকে দায়ী করেছেন।

স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত থেকে হঠাৎ করেই গাইবান্ধা শহরের থানাপাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলা শহরের খানকাহশরীফ, মহুরীপাড়া ও পশ্চিমপাড়ার অর্ধশতাধিক রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ছাড়া শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ১৯১ জন ভর্তি ছিলেন। শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ১১০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি আছেন। দুপুর পর্যন্ত আউটডোর থেকে ৪০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া বিভাগে জায়গা না হওয়ায় রোগীরা মেঝে ও সিঁড়িতে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগ ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে নতুন করে হাসপাতালের সামনের ফাঁকা জায়গায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে ৫০ জনের অধিক রোগী রয়েছেন।
পৌর মেয়র শামছুল আলম মুঠোফোনে পৌর শহরের সাপ্লাইয়ের পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, সাপ্লাইয়ের পানি নয়, অনেকে টিউবওয়েলের পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে হঠাৎ করে জেলা শহরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর, মহাখালী ঢাকা) থেকে ৮ সদস্যের একটি দল শুক্রবার রাতে গাইবান্ধার এসেছে। তারা ডায়রিয়ার কারণ অনুসন্ধান করছেন।

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘বুধবার থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ৩৩৬ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এদের মধ্যে অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ১১০ জন ভর্তি রয়েছেন। ডায়রিয়া পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ইন্টার্নি ডাক্তার, স্বেচ্ছাসেবক দল সর্বক্ষণিক কাজ করছে। ডায়রিয়া পরিস্থিতি ২-১ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি হওয়ায় ডাক্তারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ আছে। শনিবার সকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শতাধিক রোগীর মাঝে শুকনা খাবার ও পানি বিতরণ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে আসা (আইসিডিডিআরবি) একটি বিশেষ চিকিৎসা টিম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেছে। সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার কারণ কী।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.