পটিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য খেজুর রস

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধিঃ  প্রতি বছর অগ্রহায়ন মাস শুরু হয়ে পৌষ-মাঘ এ তিন মাস শীতের ভরা মৌসুমে চট্টগ্রামের পটিয়ায় খেজুর গাছ থেকে প্রচুর রস আহরণ করে থাকে খেজুর গাছিরা। যা নিয়ে তারা মেতে উঠে নবান্ন উৎসবে। তৈরি করে বিভিন্ন রকমারী পিঠাপুলি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে খেজুর গাছ শূন্য হয়ে পড়ায় পর্যাপ্ত রসের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। ফলে বাঙালীর হাজার বছরের ঐতিহ্যের খেজুর গাছের রস মিশ্রিত পিঠা উৎসব থেকে যেন হারিয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। ফলে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও গাছ সংকটের ফলে উৎপাদনকারীরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছে না বলে পটিয়ার কেচিয়া পাড়ার খেজুর গাছের রস আহরনে নিয়োজিত গেজুর গাছি শিবু প্রসাদ চক্রবর্তী জানান।

প্রতি বছর শীতের শুরুতে বিগত ৩০ বছর ধরে আমি এলাকার ১৫০টি খেজুর গাছ থেকে রস আহরন করে তা বাজারে বিক্রয় করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন আমার এলাকায় গাছ কমতে কমতে ৪০/৫০ টিতে এসে ঠেকেছে। আগে আমি এ রস বিক্রয় করে সংসার চালাতাম। এখন গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় রস আহরন করতে পারছি না। ফলে অন্য পেশায়ও মনযোগী হতে হচ্ছে।

পটিয়ায় রসের জন্য থানা হাট বাজারে আসা ডেঙ্গাপাড়ার মো. আইয়ুব আলী চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর পৌষ মাস এবং মাঘ মাসে নতুন ধান আসলে আমরা খেজুরের রস দিয়ে ভাপা পিঠা সহ রকমারী পিঠা ঘরে তৈরী করে থাকি। এমনকি আমরা কাচা রসও খেয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের গ্রাম সহ অন্যান্য গ্রামেও খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আমরা এখন প্রয়োজনমত রস পাচ্ছি না।

ফলে গ্রাম বাংলার সব মানুষের রসনার তৃপ্তি এখন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। এ রসনা তৃপ্তির অংশ খেজুর গাছের রসের চাহিদা পূরণে বেশী বেশী খেজুর গাছ রোপনের জন্য কৃষি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মো. মঈন উদ্দিন বলেন, যেভাবে খেজুর গাছ এবং তাল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে সেভাবে রোপন হচ্ছে না। যদি এগুলো রোপিত হয় শুধু রস নয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও মানুষ রক্ষা পাবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.