যে কোনো মূল্যে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবেঃ দুদক চেয়ারম্যান

0

কারেন্ট টাইমসঃ চট্টগ্রামে সারপ্রাইজিং ভিজিটে এসে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এর চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। হঠাৎ করে চট্টগ্রাম মহানগরীর বেশকিছু বিদ্যালয়ে হানা দেন তিনি। আর এ সময় বেশিরভাগ স্কুলেই শিক্ষকদের অনুপস্থিত পেয়েছেন তিনি।

আজ রবিবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছে ৯টা ১৫ মিনিটেই দুদক চেয়ারম্যান হাজির হন নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা গেছে, তাঁর কাছে অভিযোগ যায় যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না।

তিনি নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলের সময়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের বাইরে দেখে বিস্মিত তখনই ঢুকে পড়েন স্কুলের ভিতর। সেখানে তিনি দেখেন, স্কুলের আটজন শিক্ষকের মধ্যে একমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত, বাকি সাতজন শিক্ষকই অনুপস্থিত। ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের আশে-পাশে আচার-চানাচুর খেয়ে অলস সময় পার করছে।

এসময় অভিভাবকরা দুদক চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যে কোনো মূল্যে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ডবিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে। তারপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতিসাধন করবেন বা করার চেষ্টা করবেন এমন কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

ইকবাল মাহমুদ এরপর সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন শিক্ষক অনুপস্থিত। এদের অনুপস্থিতির কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষ দুদক চেয়ারম্যানকে জানাতে পারেননি। দুদক চেয়ারম্যান ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির তালিকা পরীক্ষা করে দেখেন, আগের দিন যেসব শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল তাদের অনেককেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার রবিবার বেলা ১০টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রোল কল করা হয়নি। এ বিষয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

দুদক চেয়ারম্যান আকস্মিক পরিদর্শনে যান শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অবহিত হয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান। তবে নবম শ্রেণিতে এক বা একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ২ হাজার টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করানোর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, এটা অনৈতিক। শিক্ষা ক্ষেত্রে অনৈতিকতার কোনো স্থান থাকতে পারে না।

চট্টগ্রামের অভিভাবকরা বলছেন নিয়মিত স্কুল কলেজ পরিদর্শন করা শিক্ষাবোর্ড বা জেলা প্রশাসনের কাজ। কিন্তু তারা সে কাজ করছেন না। তারা যদি নিয়মিত পরিদর্শন করতো তাহলে স্কুল গুলোর এ হাল হতো না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.