ওয়ানডেতে ইতিহাসে ভারতের লজ্জাজনক হার
স্পোর্টস ডেস্কঃ ওয়ানডেতে ইতিহাসে ভারতের সবচেয়ে লজ্জাজনক হার বলতে পারেন। ১১ জন ঝানু ঝানু ব্যাটসম্যান মিলে রান করেছে মাত্র ৯২। তাও টিম ইন্ডিয়ার মতো একটা দলের।
প্রথিবীর অন্যান্য দেশের কম রানের রেকর্ড হয়তো আরো কম আছে। কিন্তু ভারতের মতো একটা দলের কাছ থেকে এটা কখনোই আশা করেননি সমর্থকরা।
মূলত এ ম্যাচে ব্যাটসম্যানরাই সব শেষ করে দিয়েছেন। বোলারদের আসলে লড়াই করার মতো উপায় ছিল না। ৯২ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারত ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হারল বড় ব্যবধানেই। হ্যামিল্টনে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেটা ৮ উইকেট আর ২১২ বল হাতে রেখে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। বলের হিসেবে ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হার এটি। যদিও প্রথম তিন ম্যাচ হেরে যাওয়ায় কেন উইলিয়ামসনের দল পিছিয়ে আছে ৩-১ ব্যবধানে।
লক্ষ্য মাত্র ৯৩ রানের। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের তাই তেমন কষ্ট করতে হলো না। ৩৯ রানের মধ্যে মার্টিন গাপটিল (১৪) আর কেন উইলিয়ামসনকে (১১) তুলে নিয়ে ভারতকে অবশ্য কিছুটা আশা দেখিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু সেই আশার নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছেন হেনরি নিকোলস আর রস টেলর। তৃতীয় উইকেটে ৫০ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো জুটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তারা। নিকোলস ৪২ বলে ৩০ আর টেলর মাত্র ২৫ বলে অপরাজিত থাকেন ৩৭ রানে।
এর আগে, বিরাট কোহলিবিহীন ভারতকে ৩০.৫ ওভারে ৯২ রানেই গুটিয়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের জন্য ভারতের আলাদা সুনাম আছে, সেই ব্যাটিংটাই লজ্জায় ফেলেছে তাদের। কিউই বোলারদের তোপে ভারতের কোনো ব্যাটসম্যান বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি। দলের সর্বোচ্চ ইনিংসটি দশ নাম্বার ব্যাটসম্যান ইয়ুজবেন্দ্র চাহালের!
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ দেখেশুনে করেছিল ভারত। ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শেখর ধাওয়ান আর রোহিত শর্মা তুলেন ২১ রান। ১৩ রান করে ধাওয়ান ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হওয়ার পরই যেন মড়ক লেগে যায় ভারতীয় ইনিংসে।
ট্রেন্ট বোল্ট আর কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম মিলে রীতিমত টুঁটি চেপে ধরেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। ৩৩ রানের মধ্যে ৫টি আর ৫৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে চোখে সর্ষেফুল দেখছিল সফরকারিরা। চাহাল আর কুলদ্বীপ যাদবের ২৫ রানের জুটিতে কিছুটা লজ্জা এড়ায় তারা।
কুলদ্বীপ করেন ১৫ রান, চাহাল অপরাজিত ছিলেন ১৮ রানে। এছাড়া হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। বাকিরা সবাই দশের নিচে সাজঘরে ফিরেছেন।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে বিধ্বংসী ট্রেন্ট বোল্ট ১০ ওভারে মাত্র ২১ রানে নেন ৫টি উইকেট। ২৬ রান খরচায় ৩টি উইকেট কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের। একটি করে উইকেট নেন টোড অ্যাস্টল আর জিমি নিশাম।
এর আগে ২০১০ সালে ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০৯ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে হেরেছিল ভারত, সেটিই ছিল এতদিন পর্যন্ত বলের হিসেবে তাদের সবচেয়ে বড় হার।
এছাড়া এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই দুই বছর পর (২০১২) হাম্বানটোটায় ৯ উইকেট আর ১৮১ বল বাকি থাকতে হেরে যায় ম্যান ইন ব্লুরা। বলের হিসেবে ভারতের সবচেয়ে বড় হারের তালিকায় সেটি তৃতীয়।
অবাক করার বিষয় হলো, রানের হিসেবে ভারতের সবচেয়ে বড় হারটিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। শারজায় ২০০ সালে লঙ্কানদের কাছে ২৪৫ রানে হেরেছিল ভারত। এছাড়া ২০১৫ সালে ঘরের মাঠ মুম্বাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২১৪ রানে হারের রেকর্ড আছে তাদের। আর ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনিতে ২০৮ রানের পরাজয় ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের হিসেবে তৃতীয় বড় হার।