বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আইনি লড়াই করুন- তথ্যমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ, চট্টগ্রাম : বিএনপি, আপনাদের কি মনে আছে? আহসান উল্লাহ মাস্টার, কিবরিয়া সাহেবের হত্যাকান্ডের পর সংসদে একটি শোক প্রস্তাব আনতে চেয়েছিলাম আমরা। সেই শোক প্রস্তাব আনতে দেওয়া হয়নি। হাস্যরস করা হয়েছিল। সুতরাং রিজভী আহমেদকে অনুরোধ জানাবো, বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আপনারা আইনি লড়াই করুন। কিন্তু গত এক বছরে আপনারা যে লড়াই করেছেন এতে সাধারণ মানুষ মনে করে আপনাদের আন্তরিকতার অভাব আছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার ১০ ফেব্রুয়ারী বিকেলে এমএআজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে অমর একুশে বইমেলা চট্টগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে সকালবেলা দেখলাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি প্রকারান্তরে এটি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ কথা বলার মধ্য দিয়ে রিজভী আহমেদ ও বিএনপি দলগতভাবে আইন ও আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো তাঁকে (খালেদা জিয়া) শাস্তি দেয়নি। তাঁকে শাস্তি দিয়েছে আদালত। তাঁকে মুক্ত করতে হলে তো আদালতের মাধ্যমেই করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সেই এখতিয়ার তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেই।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রিজভী আহমেদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া নাকি অসুস্থ। তিনি তো আগে থেকেই অসুস্থ। আদালতে নিয়ে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার যে চেহারা আমরা টেলিভিশনে দেখলাম, এখানে কি আপনারা অসুস্থ’তার ছাপ দেখেছেন? বেগম খালেদা জিয়া ঠিক আগের মতই পরিপাটি, বেশভ’ষা। সানগ্লাস নিয়ে আদালতে হাজির হয়েছেন। অসুস্থার কোনো ছাপ আমরা বেগম খালেদা জিয়ার চেহারার মধ্যে দেখতে পাইনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রিজভী আহমেদ আরো কিছু কথা বলেছেন, যেগুলো অশোভন।

রাজনৈতিক ভব্যতা এবং শালীনতা তিনি বজায় রাখেননি। আমি রিজভী আহমেদের প্রতি অনুরোধ জানাবো, আপনাদের কি মনে আছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। তখন বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী। এবং সে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ আমাদের ২৪ জন নেতাকর্মী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন। পাঁচশ’র বেশী নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন। আমি নিজেও সেদিন গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলাম, অনেকদিন হাসপাতালে ছিলাম। এখনো আমরা শরীরে ৪০টি স্প্রিন্টার আছে।

তিনি বলেন, সেই হত্যাকান্ডের পর ঢাকায় প্রকাশ্যে দিবালোকে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে তৎকালীন সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হলো। আর এরপর যখন সংসদে এ নিয়ে কথা হলো তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগের মধ্যে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন।

এর আগে বিকেল ৫ টা ৮মিনিটে তথ্যমন্ত্রী জাতীয় পতাকা, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চসিকের পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন কলেজের ছাত্রীরা। পরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ফেস্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহায়তায় ১৯ দিনব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করেছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১০টি প্রকাশনা সংস্থার প্রায় দেড়শটি স্টল রয়েছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা। আরো বক্তব্য রাখেন বইমেলার আহবায়ক কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, বইমেলার যুগ্ম আহবায়ক মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, জামাল উদ্দিন, সদস্য সচিব সুমন বড়ুয়া প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.