কক্সবাজারে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকের বসতভিটা দখলে হামলা

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজারঃ  বর্বর কায়দায় ও অমানবিক ভাবে কক্সবাজার সদরের খুরুস্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল কুদ্দুছের স্বত্ত্বদখলীয় বসতভিটা দখল করে জোরপূবক স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় একদল দুর্বৃত্ত সশস্ত্র অবস্থায় হামলার ঘটনায় ১ জন আহতও হয়েছে।

খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করে জমি দখলের ঘটনা সত্যতা পান। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর দ্বিতীয় দফায় হামলা চালায় ও অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের অবরোদ্ধ করে রাখেন দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সকালে ও বিকালে কক্সবাজার সদর উপজেলা খুরুস্কুল ইউনিয়নের কাউয়ার পাড়ায় এঘটনা ঘটেছে। একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকের পরিবারের উপর ও বসতভিটায় এধরনের অমানবিক ঘটনায় পুরো এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।

জানা গেছে, খুরুশকুল কাউয়ার পাড়ার মৃত মোহাম্মদ কালু মিয়া ছেলে ও খুরুস্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল কুদ্দুছ স্বত্ত্বদখলীয় ৩১ শতক জমিতে দীর্ঘদিন বসতবাড়ি নির্মাণ ও কাচা দোকান ঘর নির্মাণ করে ভোগ দখলে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওই জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভুমিগ্রাসী চক্রের লোভ পড়ে। র্দুলোভেবশিভুত হয়ে একই এলাকার ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন মিনুর তিন ছেলে সোহেল, রমজান আলী ও কোরবান আলী নামের ভুমি জবর দখলকারী পরস্পর যোগসাজসে তাদের জমি দাবী করে জবর দখল করার চেষ্টা চালায়।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল কুদ্দুছ জানান, এরই ধারবাহিকতায় ওই ভুমিদস্যু চক্র গত ১১ ফেব্রুয়ারী ৪টার দিকে ৮/১০ জনের দুর্বৃত্তদল অবৈধ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অশালিন গালমন্দ ও হুমকি ধমকি প্রদর্শন করে তার বসতবাড়ির ঘেরা-টেংরা ভাংচুর করে অনধিকার প্রবেশ এবং বসতভিটাতে সীমানা ওয়াল নির্মাণ করার জন্য ইট, বালি, সিমেন্ট সহ নির্মাণ সামগ্রী মজুদ করে। কিন্তু তাদের বাঁধার মুখেওইদিন কোনরূপ ওয়াল নির্মাণের কাজ করতে পারেনি।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আরো জানান, মঙ্গলবার ১২ ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টার সময় স্থানীয় মেম্বার রিয়াজ উদ্দিন মিনুর ছেলে সোহেলের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া অশ্লীল গালি-গালাজ ও হুমকি ধমকি দিয়ে ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করার চেষ্টা করে। এতে অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষ আবদুল কুদ্দুছ ও তার ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন বাঁধা দিলে দুর্বৃত্তরা মামুনকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি হামলা করে। এসময় দুর্বৃত্তরা ওই শিক্ষকেও অশালীন গালমন্দ করে ও হামলা করতে উদ্যত হয় বলে জানান ওই শিক্ষক।

এঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল কুদ্দুছ বাদী হয়ে ১২ ডিসেম্বর ওই ইউপি সদস্য খুরুশকুল কাউয়ার পাড়ার রিয়াজ উদ্দিন মিনুর ছেলে সোহেল, রমজান আলী ও কোরবান আলী এবং একই এলাকার মৃত শাহআলম ছেলে নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন।

আরো জানা গেছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরির্দশক সনৎ বড়–য়ার নের্তৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করে। এসময় অবৈধভাবে বসতভিটা দখল করে স্থাপনা নির্মাণের সত্যতা পান তিনি। এছাড়াও জমির বিরোধ মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন এবং সন্ধ্যায় উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় শালিশী বৈঠকের কথাও জানিয়ে দেন এসআই সনৎ।

এদিকে, বেলা সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই দুবৃর্ত্তদল পুনরায় ধারালো কিরিচ ও অবৈধ অস্ত্রসশস্ত্র নিয়ে মহড়া চালায়, নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করে, পানির লাইন কেটে দেয় ও দ্বিতীয় দফায় হামলা চালিয়ে আবদুল্লাহ আল মামুনকে আহত করে। তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সুত্র জানিয়েছেন, উক্ত জমি নিয়ে ইতোপূর্বে বিভিন্ন ব্যক্তিরা দখলের চেষ্টা চালালে এনিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে, জেলা আইনজীবি অফিসে একাধিকবার শালিস বৈঠক ও আইনগত মতামত দেন মাষ্টার আবদুল কুদ্দুছেরন পক্ষে। এরপরেও কয়েকজন প্রভাবশালী মহলের ইন্দনে এধরনের নেক্কার জনক ঘটনা ঘটছে বলে জানা যায়।

অবৈধ জবরদখলের ঘটনায় বর্তমানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হতাহত ও আইন-শৃংখলার চরম অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.