চট্টগ্রামে ইভটিজার গ্রেফতার ছাত্রীর সাহসিকতায়

0

সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে কলেজ ছাত্রী ফারহেনা নওরীন রিকশায় চেপে বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে মোটর সাইকেল নিয়ে দুই বখাটে যুবক তাকে অনুসরণ শুরু করে। বিভিন্ন ধরনের অশালীন মন্তব্যের পর একপর্যায়ে তার ওড়না ধরেও টান দেয়। রিকশাওয়ালা, পথচারী অনেকে এই ঘটনা দেখেও ছিলেন নীরব দর্শক।

উত্যক্তের হাত থেকে বাঁচতে একটি বুদ্ধি কাজে লাগান নওরীন। রিকশায় বসেই মোবাইল বের করে বখাটেদের কাজকর্ম ভিডিও করতে শুরু করেন তিনি। এতে ভয় পেয়ে দুই বখাটে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

চট্টগ্রাম নগরে রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে এক কলেজছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের ঘটনার একটি ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে শনিবার ভোরে বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার তানভীর আহমেদ ছিদ্দিক (২৫) বাকলিয়া থানার মিয়া খান নগর বাইদ্দারটেক এলাকার আব্দুল হকের ছেলে।

ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, রিকশায় করে যাওয়ার পথে কালো শার্ট পরা দুই মোটরসাইকেল আরোহী ইভটিজিং করছিল এক কলেজছাত্রীকে। তখন তরুণীর সাহসী উচ্চারণ, ‘সাহস থাকলে দাঁড়াও। থাপ্পর দিয়ে তুলে ফেলবো দাঁত।’

গত ৬ মার্চ ঘটনার দিন ইভটিজিংয়ের সময় আশপাশের কেউ এগিয়ে আসেননি। তবে ভুক্তভোগী নিজেই ঘটনাটি তার মোবাইল ফোনের ভিডিও ক্যামেরায় তুলে রাখেন। পরে সেই ভিডিও পোস্ট করে দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সেই ভিডিওটি গত ৬ মার্চ ফেইসবুকে শেয়ার করে অপরাধীদের শণাক্ত করতে সবার সহযোগিতা চান কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। ফেইসবুকের সাহায্যে একপর্যায়ে অভিযুক্তদের পরিচয় পেয়েও যায় পুলিশ।

এরপর শনিবার ভোরে বাকলিয়া থানার মিয়া খান নগর বাইদ্দারটেক এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত তানভীরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পাশাপাশি তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়।

বিষয়টি জানাতে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী ফারহেনা নওরীন। ইভটিজারকে গ্রেফতার করায় পু্লিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন সরকারি সিটি কলেজের এ শিক্ষার্থী।

কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ফারহেনা নওরীনের প্রচণ্ড সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। এভাবেই সমাজের প্রতিটি মেয়ে যদি বখাটেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, তবে ইভটিজিং দ্রুতই বন্ধ হয়ে যাবে।

ফারহেনা নওরীন বলেন, কদমতলী এলাকা থেকে রিকশা করে মাদারবাড়ি বাসায় ফিরছিলাম সেদিন। পথে বখাটেরা প্রথমে আমার ওড়না ধরে টান দেয়। পরে রিকশার সামনে গিয়ে অশ্লীল ভাষায় কথা বলে। তখন আমি প্রতিবাদ করে তাদের থাপ্পড় দিব বলি। পরে যখন ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে ভিডিও করি তারা বুঝতে পেরে চলে যায়।

ইভটিজিংসহ সকল অন্যায় মুখ বুজে সহ্য না করে প্রতিবাদ করতে অন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নওরীন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.