অনেক পুলিশ কষ্ট করে চলে-অনেকে ৫টি বাড়িও বানায়ঃ হাইকোর্ট

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ হাইকোর্ট বলেছেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) সব জায়গায় রাতে কোর্ট বসায়, এত সাহস কোথায় পায় তারা? নিজেরা বিচার বসায় কেমন করে, কোন সাহসে?  আদালত বলেন, অনেক পুলিশ কষ্ট করে দিনযাপন করে আর অনেকে চার থেকে পাঁচটা বাড়িও করে ফেলেন।

আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা মামলা না নেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন আদালত।আদালত বলেন, ১৩ হাজার পুলিশ থানায় বসে মামলার আগেই অভিযোগের সমঝোতা করে ফেলছে। এতে দুই পক্ষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে না। গোটা পুলিশ বিভাগের বদনাম হচ্ছে তাতে।

আদালত বলেন, থানা পুলিশ সুবিধা মতো মামলা দেয়। এছাড়া টাকা ছাড়া জিডিও হয় না বলে মন্তব্য করেন আদালত। আদালত আরও বলেন, অনেক পুলিশ কষ্ট করে দিনযাপন করে আর অনেকে চার থেকে পাঁচটা বাড়িও করে ফেলেন।

আদালতে রিট দায়ের করেন সাতক্ষীরার বাসিন্দা ফজলুর করিম। তার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শামসুল হক কাঞ্চন, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

পরে অ্যাডভোকেট শামসুল হক কাঞ্চন বলেন, জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউসুফ আলীসহ কিছু লোক সাতক্ষিরার শ্যামনগর থানার সোরা গ্রামের মো. ফজলুর করিমের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করে।

এসময় সময় তারা নগদ দুই লাখ টাকা, ৮০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি স্বর্ণের মালা ও ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে। যাওয়ার সময় তারা বাড়ির সীমানা প্রাচীরও ভেঙে ফেলে। কিন্তু ইউসুফ ও ইউসুফের সঙ্গে আসা ব্যক্তিরা ফজলুর করিমের বাড়িতে হামলা চালানোর সময় শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দিয়ে সাহায্য চাইলে ওসি জানান অন্য কাজে তিনি ব্যস্ত আছেন, পরে বিষয়টি দেখবেন।

এরপর ফজলুর করিম কালিগঞ্জ সার্কেলের এএসপিকে ফোনে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চাইলে শ্যামনগর থানার এএসআই ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু ততক্ষণে হামলাকারীরাও পালিয়ে যায়।

তখন ঘটনাস্থল থেকে এএসআই শ্যামনগর থানার ওসিকে ফোন করে বাদি ফজলুর করিমকে ফোন ধরিয়ে দেন ওসির সেঙ্গে কথা বলার জন্য। ওসি তখন ফোনে ফজলুর করিমকে বলেন, উপর মহলে নালিস করিস, তোর মামলা হবে না। কোর্টে মামলা কর। তখন ফজলুর করিমের বাবা অনুনয় বিনয় করলে ওসি বলেন, কাল সকালে আবার তদন্ত হবে। সে কথামত, শ্যামনগর থানার এসআই মরিুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে বলেন, মামলা হবে না। পারলে চেয়ারম্যানের সাথে বসে মীমাংসা করতে।

ফজলুর করিম সালিসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ করেন। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এসপি শ্যামনগর থানার ওসিকে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে লিখিত নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও ওসি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে এসে গত ৩ মার্চ রিট আবেদন করেন। এরপর ১০ মার্চ প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিতে মৌখিক নির্দেশ দেন আদালত।

আজ ফের এ বিষয়ে শুনানি শুরু হলে ঘটনার আংশিক সত্যতা আছে সহকারি অ্যাটর্নি জানালে আদালত তখন এ মন্তব্য করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন শামসুল হক কাঞ্চন। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.