মোদির বিরুদ্ধে একাট্টা ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গণ
সিটি নিউজ ডেস্ক : ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মোদির দল বিজেপিকে ভোট না দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সে দেশের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকরা। ভোটারদের প্রতি তাদের আহ্বান ধর্মান্ধতা, ঘৃণা এবং উদাসীনতাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করুন। একই দাবি করেছেন ৬০০ জনেরও বেশি থিয়েটার কর্মী এবং ১শ জন পরিচালক।
বিজেপি ও তার সহযোগী দলগুলিকে বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে আবেদন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন কলকাতার বিশিষ্ট কবি শঙ্খ ঘোষ এবং সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন-সহ সাহিত্যিক অঙ্গণের আরো অনেকে। ভারতে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সংস্কৃতি জগতের ব্যক্তিত্বদের এভাবে সরাসরি ভোট না দেওয়ার এমন আহ্বান সাম্প্রতিক কালে বিরল।
কবি শঙ্খ ঘোষসহ শিল্প সাংস্কৃতিক অঙ্গণের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শুক্রবার একটি বিবৃতি বলেন, বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল। এই দলের উত্থান এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরে দেশের সার্বিক অবস্থার চূড়ান্ত অবক্ষয় হয়েছে। বেকারত্ব, কৃষকমৃত্যু, মূল্যবৃদ্ধি এবং ধর্মীয় হানাহানি ও জাতিগত বিদ্বেষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাই দেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে তাদের আবেদন ‘আগামী লোকসভা নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট বিজেপি ও তার সঙ্গী রাজনৈতিক দলগুলিকে বর্জন করুন’।
ফ্যাসিবাদী বিজেপি ও তার সহযোগীদের পরাস্ত করার আহ্বান জানিয়ে ১২ এপ্রিল কলকাতার মৌলালি থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত পদযাত্রারও ডাক দিয়েছেন এসব কবি সাহিত্যিকেরা।
শুধু কলকাতা নয়, মেদি বর্জনের ডাক এসেছে মুম্বাই থেকেও। সেখানকার চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনয় শিল্পীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং সকলের জন্য সরকার গড়তে বিজেপি ও তার শরিকদের বিরুদ্ধে ভোট দিন।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘দুর্বলতমের হাতে ক্ষমতা, সংহতি রক্ষা, পরিবেশ সুস্থ রাখা এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তার উন্মেষের জন্য ভোট দিন।’
১২টি ভাষায় প্রকাশিত এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন অমল পালেকর, অনুরাগ কাশ্যপ, লিলেট দুবে, নাসিরুদ্দিন শাহ, রত্না পাঠ শাহ, মহেশ দত্তানি, কঙ্কনা সেন শর্মার মত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরা।
ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এলেও হিন্দুত্বের জিগির তুলে গুন্ডামিকে প্রশ্রয় দেওয়া শুরু করেছে। পাঁচ বছর আগে যে ব্যক্তি জাতির রক্ষাকর্তা হিসেবে এসেছিলেন, তিনি তার নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের বেঁচে থাকা দুর্বিষহ করে তুলেছেন।’
এসব শিল্পী ও কুশলীদের ভাষায়,‘ভারত নামের ধারণাটাই আজ বিপন্ন। আজ হাসি, গান, নাচ সবই হুমকির মুখে। আমাদের সংবিধানও বিপন্ন। যে সব প্রতিষ্ঠানে যুক্তি, তর্ক, মতামত বিনিময়ের পরিসর ছিল, তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। প্রশ্ন করলে, মিথ্যের বিরুদ্ধে সরব হলে, সত্য বললে জাতীয়তাবাদ-বিরোধী বলে তকমা দেওয়া হচ্ছে।’
সূত্র: আনন্দবাজার