মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ ছালামের বিদায়
গোলাম শরীফ টিটু,সিটি নিউজ : অবশেষে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বিদায় নিচ্ছেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জহিরুল আলম দোভাষ। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে নেয়া মেগাপ্রকল্প নিয়ে নানা চমক লাগানো বক্তব্য দিয়ে মানুষকে স্বপ্ন দেখালেও চরম ব্যর্থতা নিয়ে বিদায় নিলেন আবদুচ ছালাম। চট্টগ্রাম নগরীতে উড়াল সেতু নির্মাণ ও কয়েকটি সড়ক প্রশস্ত করা ছাড়া তেমন কিছুই দেখাতে পারেননি তিনি। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতায় তার উপর নগরীর নিম্নাঞ্চলের মানুষ খুব বিরক্ত।
তাদের মতে, সিডিএর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের অদুরদর্শি সিদ্ধান্ত ও অনভিজ্ঞতার খেসারত দিচ্ছে নগরবাসী। উড়াল সেতুগুলো তেমন কোন সুফল দিতে পারে নি। তবে আশার কথা চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নেয়া মেগ্রাপ্রকল্পের আওতায় এবার মহেশখালের উপর নির্মান করা হচ্ছে স্যুইচ গেট। প্রায় একশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় এই স্যুইচ গেটটি নির্মিত হলে নগরীর বন্দর, হালিশহর ও আগ্রাবাদ সহ বিস্তৃত এলাকায় জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান হবে বলে দাবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
সুত্র জানায়, সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও গত এক বছর ধরে শুরু করা যাচ্ছিল না অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন এই প্রকল্পের কাজ। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জায়গা না পাওয়ায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীকে জায়গা বুঝিয়ে দিতে পারছিল না। তবে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর গত মাসের শেষের দিকে চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৫ কাঠা জায়গা উদ্ধার করে সেনাবাহিনীকে বুঝিয়ে দেয়। ফলে সহসা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বহুল প্রত্যাশার এই স্যুইচ গেট নির্মানের কাজ শুরু হবে।
এমন তথ্য সংশ্লিষ্টদের। মেগাপ্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর মোট ৫৭টি খাল সংস্কার ও কয়েকটির মাটি উত্তোলনের কথা। একই সাথে জোয়ারের সময় সাগরের পানি যাতে শহরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি খালের মুখে টাইডাল রেগুলেটর বা স্যুইচ গেট নির্মান করা হচ্ছে।
এর মধ্যে মেগাপ্রকল্পের আওতায় ৫টি, আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় ২৩টি স্যুইচ গেট নির্মান করার কথা। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্যুইচ গেটটি নির্মিত হবে মহেশখালের উপর। নগরীর বৃহত্তর আগ্রাবাদ ও হালিশহর সহ বিস্তৃত এলাকার জনদুর্ভোগের জন্য বহুদিন ধরে দায়ী এই মহেশখাল। এর আগে বন্দরের টাকায় মহেশখালের উপর বাঁধ দিয়ে আগ্রাবাদ এলাকার জলাবদ্ধতা ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই বাঁধটি দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দেয়ায় পরবর্তীতে তা অপসারন করা হয়। ফলে আবারও আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকাসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চল আগের মতো জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়।
তবে বিশেষজ্ঞরা মত দেন, মহেশখালের উপর স্যুইচ গেট নির্মান এবং তা ঠিকভাবে পরিচালনা করা হলে বিস্তৃত এলাকা জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি জলাবদ্ধতা মুক্ত হবে। পরে মহেশষখালের উপর স্যুইচ গেট নির্মান করতে গেলে ভুমি নিয়ে জটিলতা তৈরী হয়। খালের এক পাড়ে ওয়াল থাকলেও অপর পাড়ের ভুমি বেশ কয়েকজন মানুষের কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছিল।
স্যুইচ গেটের প্রয়োজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ সেই ইজারা বাতিল করলেও ইজারাদাররা জায়গা ছাড়ছিল না। নানা ভাবে দোকান ঘর করে ব্যবসা বানিজ্য করছিল। ফলে জায়গার অভাবে স্যুইচ গেটের কাজ আটকে যায়। অবশেষে বন্দর কর্তৃপক্ষ বোর্ড মিটিং করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সিডিএ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে ৪০টির মতো কাঁচা, আধাপকা ও সেমিপাকা ঘর উচ্ছেদ করে ২৫ কাঠার মতো জায়গা দখলমুক্ত করা হয়। মেগাপ্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জি.কাজী কাদের নেওয়াজ জানান, প্রায় একশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হবে মহেশখালের স্যুইচ গেট। খালের মাঝখানে এবং দুই পাড়ে অন্তত একশ’ কাঠা জায়গার উপর এই স্যুইচ গেট নির্মান করা হবে। এই স্যুইচ গেট নির্মিত হলে নগরীর বিস্তৃত এলাকায় জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
আবদুস ছালাম ব্যর্থ নয় নগরীর জনগন ছালাম ভাইকে আরো বড় দ্বায়িত্বে দেখতে চাই কারণ একমাত্র নগরী সাধারণ জনগন তার মাঝেই দেখেছে নগরী উন্নয়নের ইচ্ছা আর বাকি সবাই নিজের উন্নয়নের চিন্তায় মগ্ন।
আশা রাখি ছালাম ভাই কে প্রধানমন্ত্রী আরো বড় দ্বায়িত্ব জন্য তৈরি করছেন তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও ছালাম ভাইকে অগ্রীম শুভেচ্ছা