দোহাজারীতে বেপরোয়া সন্ত্রাসী, মাদক কারবারী, ভূমিদস্যু-নির্বিকার পুলিশ

0

দোহাজারী প্রতিনিধিঃ  চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী কুখ্যাত অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে দোহাজারী এলাকা। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত সন্ত্রাস ও জবরদখলের শিকার হলেও পুলিশ এবং প্রশাসন নির্বিকার। এ সুযোগে বেররোয়া সন্ত্রাসীরা দখল করে নিচ্ছে মানুষের জায়গা জমি, পৈত্রিক ভিটেবাড়ি। চালাচ্ছে মাদক বাণিজ্য। বিশেষ করে দোহাজারী পৌরসভার ফুলতলা এলাকায় চলছে ইয়াবা, মদ, গাঁজা বিক্রি, সেবন। জুয়া খেলার নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে এলাকাটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার দোহাজারী পৌরসভার ফুলতলা এলাকায় অধ্যাপক মিনহাজুল হুদার পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা মরণ নেশা ইয়াবা সেবনের আখড়ায় পরিণত করেছে। প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে তাদের স্বশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। প্রতি রাতে মাদক সেবনের পাশাপাশি তারা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে উক্ত সম্পত্তির চারদিকে। ভূমির প্রকৃত মালিক অধ্যাপক মিনহাজুল হুদা এসব মাদক সেবীদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজ পৈত্রিক দখলীয় সম্পত্তির উপর মাননীয় আদালতে মিস মামলা নং ১৫৮০/১৮ দায়ের করেন ও সম্পত্তির উপর মাননীয় আদালত হতে ১৪৫ ধারা জারি করেন।

তিনি এই প্রতিবেদককে জানান ‘মূলত আমাদের সম্পত্তি দখল করে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে নাছির তালুকদার প্রকাশ নাছির উদ্দীন, মোঃ শাহজাহান, আবুল কালাম, চন্দন কান্তি নাথ, হায়দার আলী নামক সন্ত্রাসী ও তাদের দোসররা। দীর্ঘদিন তাদের মৌখিকভাবে নিষেধ করলেও সন্ত্রাসীরা কোন কর্ণপাত করছে না। বর্তমানে তারা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখলের সকল অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সম্পত্তির উপর আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত ১৪৫ ধারা জারি করেন।’ এ ব্যাপারে চন্দনাইশ থানার দায়িত্বরত মামলার আই.ও জনাব এস. আই. সোলেমান বলেন, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।

পক্ষান্তরে বাদী পক্ষের তীব্র অভিযোগ প্রতিরাতেই অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে নাছির উদ্দীন, সন্ত্রাসী শাহজাহান ও তার দোসররা পাশাপাশি প্রতি রাতেই জমে উঠে নেশার রমরমা আনন্দ ফূর্তি উৎসব। স্থানীয় মানুষ বলছেন, সব কিছু দেখে মনে হয় যেন তাদের কর্মকান্ডগুলোর পিছনে কোন এক অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। তাছাড়াও অবৈধ টাকার জোরে যেকোন কিছু করতে তারা পিছ পা হন না। তাইতো ১৪৫ ধারা চলমান থাকার পরও বার বার সম্পত্তির উপর আক্রমণের চেষ্টা করছে।

সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের প্রশ্ন আমরা কোথায় বাস করছি? আদালতের নির্দেশ ১৪৫ ধারা ভঙ্গ করার মত এত বড় দুঃসাহস কোথায় পায় তারা? আদালত প্রকৃত বিচারের মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছে কিন্ত তা কঠোরভাবে পালনের দায়িত্ব কার? আপনারাই বলেন আমরা কোথায় যাব? জবর দখলতো এক প্রকারের সন্ত্রাসী কার্যাবলী। তাহলে কি প্রশাসন সন্ত্রাসকে উৎসাহিত করছে, জবর দখলের সুযোগ করে দিয়ে, আদালতের ১৪৫ ধারার বিপরীতে?

জানা যায়, দোহাজারী দেওয়ানহাট পদ্মপুকুর পাড়ের মৃত জেবল মুল্লুক প্রকাশ জুম্মার পুত্র সন্ত্রাসী শাহজাহান, সাতবাড়িয়া হাছনদন্ডীর মৃত বাদশা তালুকদার প্রকাশ বাদশা মিয়ার পুত্র নাছির তালুকদার প্রকাশ সন্ত্রাসী নাছির উদ্দিন, দোহাজারীর বানেশ্বর নাথের পুত্র সন্ত্রাসী চন্দন কান্তি নাথ, সাতবাড়িয়া হাছনদন্ডীর মৃত আনু মিয়ার পুত্র সন্ত্রাসী হায়দার আলী, দোহাজারী দেওয়ানহাট পদ্মপুকুর পাড়ের স্বঘোষিত মেজর মৃত তাজুল মুল্লুকের পুত্র সন্ত্রাসী সেলিম, সামসু, করিম। এই সন্ত্রাসীরা মানুষের সম্পদ জবরদখলকারী ও সন্ত্রাসী গ্রুপ। তাদের অত্যাচারে সাধারণ ও শান্তিপ্রিয় মানুষ শংকিত। এদের আইনের আওতায় আনা না হলে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলতে থাকবে। তাই সাধারণ মানুষের একটাই দাবী তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক।

ভূক্তভোগী সাংবাদিক কামরুল হুদা এ প্রতিবেদককে জানান, আমার পৈত্রিক সম্পত্তি তামাদিকাল থেকে আমরা দখল ভোগ করে আসছি। এই সম্পত্তি আমার পিতা এক ব্যক্তি থেকে ক্রয় করেছিলেন, তিনি মারা যাওয়ার পর তার পুত্র কন্যারা তাদের নামে নামজারী করেন। আমরাও তাদের নামজারির বিরুদ্ধে সংশোধনের জন্য চন্দনাইশ এসি ল্যান্ড অফিসে যোগাযোগ করে সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এরিমধ্যে সন্ত্রাসীরা আইনের কোন তোয়াক্কা না করে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে এলাকায় এখন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম রেখেছে। আমরা এ সমস্ত সন্ত্রাসীদের আগ্রাসন থেকে বাঁচার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাস্তক্ষেপ কামনা করছি।

চন্দনাইশ থানা ওসি কেশব চক্রবর্তী জানান, বিষয়টি শুনেছি, আমরা ব্যাবস্থা নিচ্ছি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জানান, দোহাজারীতে মাদক বিক্রি-সেবন’র অভিযোগটি জেলা প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.