কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ রেখে চিকিৎসকদের নৈরাজ্য 

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজারঃ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা থামছেই না। দিনদিন সাধারণ মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ দানা বাঁধছে। ৫দিন পর চিকিৎসা সেবা সচল হওয়ার পরও চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের মাঝে ঘটেছে আরো একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনা।

সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ঘটেছে আরো এক বড় অপ্রীতিকর ঘটনা। চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনের মধ্যে সংঘটিত এই এই ঘটনার জের ধরে আবারো দুই ঘন্টা চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখে চিকিৎসকেরা। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ঘোষণা দিয়েই চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখা হয়। শুধু তাই নয়; ওই রোগীর স্বজনকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, রোগীর স্বজন ও সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, এক শিশু রোগীর চিকিৎসা দেয়াকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে হাসপাতালে বহি: বিভাগের চিকিৎসক আনিসুর রহমানের সাথে কক্সবাজার শহরের রুমালিয়াছড়া এলাকার বাসিন্দা রোগীর স্বজন আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্স নামে এক ব্যক্তির কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এঘটনার জের ধরে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জড়ো হয়ে আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্সকে মারধর করে আটকে রাখে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।

হাসপাতাল র্কর্তৃপক্ষের দাবি, আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্স আনিসুর রহমান, জামসেদসহ তিন চিকিৎসকে মারধর করেছে। তাই তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে আটক আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্স এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্স জানান, তার স্বজন এক শিশু রোগীর চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে তিনি বহি:বিভাগের দায়িত্বরত ডা. আনিসুল হোসেনের চেম্বারের যান। এতে শুরুতেই রেগে যান ডা. আনিস। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে পরিস্থিতি তিক্ততার পর্যায়ে চলে যায়। সাথে সাথে ডা. আনিস খবর দিয়ে ১৫/২০জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে তার চেম্বারে নিয়ে আসেন।

এসেই কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্সকে মারতে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাকে ওই কক্ষ ও কক্ষের বাইরে কিল, ঘুষিসহ ব্যাপক মারধর করে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। মারধর করে আটকে রেখে পুলিশ গেলে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

এদিকে এই ঘটনার সাথে সাথে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয় বলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা অভিযোগ করেন। সরেজমিনের গিয়েও তার সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা যায়, চিকিৎসা বন্ধ রেখে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা হাসপাতালে বাইরে অবস্থান করছেন।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দরজা তালাবদ্ধ দেখা যায়। দরজায় টাঙানো হয়েছে চিকিৎসা বন্ধের নোটিশ। খবর পেয়ে বেশ ক’জন সাংবাদিক হাসপাতালে যান। সাংবাদিকেরা গেলে তাদের কাছে ঘটনা বর্ণনা দেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিধান পাল। তিনি তার বক্তব্য পেশ করেন। তবে তিনি দাবি করেন চিকিৎসা সেবা বন্ধ করা হয়নি।

এসময় সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে সাংবাদিকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তবে হাসপাতাল সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। সাংবাদিককের সাথে ওই বৈঠকের পর খুলে দেয়া হয় জরুরী বিভাগ।

সাধারণ লোকজন বলছেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ইতিবাচক। কিন্তু এটিকে পুঁজি করে চিকিৎসকেরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এটা সকলের জন্য অশনি সংকেত এবং আশঙ্কাজনক। এতে সমাধান কোনোভাবেই আসবে না। বরং অপ্রীতিকর ঘটনা বার বার ঘটে যাবে। তার জন্য ইন্টার্ন ও বদমেজাজি চিকিৎসকদের লাগাম টানতে হবে।

আটক আবদুল্লাহ এমডি ম্যাক্স’র বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান ও চিকিৎসকের হামলার অভিযোগ এনে হাসপাতালের পক্ষ থেকে মামলা প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিধান পাল। এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দীন খন্দরকার জানান, হাসপাতাল

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.