এক মুক্তিযোদ্ধাকে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ
সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে যুদ্ধাহত এক মুক্তিযোদ্ধা তার পরিবারকে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ করেছেন। এব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা পেয়ার মোহাম্মদ অভিযোগ করে বলেন, তাঁর ১৭ সদস্যের পরিবার নিয়ে আজ খোলা আকাশের নীচে জীবন যাপন করছেন। সন্ত্রাসী ও ভূমিদর্স্যুরা ভুয়া দলিল সৃজনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবহার করে এক তাকে বসত ভিটা বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করেছে। ফলে তাঁরা আজ বিপন্ন ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বসত ভিটা ছাড়া করার প্রয়াসে ঘর-বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট করে জালিয়ে দেয়। মিথ্যা ও হত্যা মামলা জড়িয়ে নিয়মিত হয়রানী করছে। বিষয়টি দেশ জাতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী/স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় প্রশানকে জানাতে ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব হলে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা পেয়ার মোহাম্মদ লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, নিজের বসত ভিটা থেকে তারা এখন উচ্ছেদ। বাব দাদার ভিটা থেকে উচ্ছেদ করেছে ১০/১২ জনের সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু দল। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিজের জীবনের করুন কাহিনী বর্ণনা করেন মুক্তিযোদ্ধা পেয়ার মোহাম্মদ। কর্ণফুলী উপজেলার ৬নং ওয়ার্ড চরলক্ষ্যা গোপালপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা।
অসহায় পরিবার পরিজন নিয়ে এই আকুল আবেদনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী/স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রীর কাছে এই আবেদন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছি। ছেলে, সন্তান, ভাই-বোন নিয়ে আমি প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সাথে বসবাস। তারা যে কোন মুহুর্তে আমার পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করতে পারে।
বিগত ২০১৫ সালে ১৭ আগস্টে ঐ সন্ত্রাসীরা বাড়ি ঘর লুট করে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে দেয় আমার পরিবারকে। তা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর মাননীয় ভূমিমন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি মহোদয়কে অবগত করলে তিনি স্থানীয় থানা প্রশাসনকে নির্দেশ দিলে বসতভিটা ফিরে ফেলেও সন্ত্রাসীরা বাড়ি ঘর ভাঙ্গচুর করে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়ায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে- কর্ণফুলী থানা ১২/০৫/২০১৫, কর্ণফুলী থানা সি.আর মামলা-২৭ নং ২০১৭, কর্ণফুলী সি.আর-৩৯/২০১৮ আদালত ২৬০ নং মিছ মামলা ১০০৯ কর্ণফুলী থানাতে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়ের হলেও স্থানীয় প্রশাসন অদৃশ্য কারণে আমাকে সহযোগিতা না করে সন্ত্রাসী ও ভূমিদর্স্যুদের সহযোগিতা করছে। আমার ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, ভাই-বোন পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। যে হাতে দেশের জন্য অস্ত্র নিয়ে মানুষ ও মানবতার মুক্তি চেয়েছিলাম সেই প্রিয় বাংলাদেশে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন দিয়ে প্রমাণ করবো প্রিয় দেশ ও প্রশাসন একজন মুক্তিযোদ্ধার জন্য কিছু করেনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা পেয়ার মোহাম্মদ, নুরুল আলম, শাহ সুলতান, সাজেদা বেগম, নাসিমা বেগম, জাহানারা বেগম, রেজিয়া বেগম, রবিউল হোসেন, ফয়েজুল আলম, মঈনুল আলম, দিদারুল আলম, সাঈদ, সাহিদা আক্তার প্রমুখ।