চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির লাইন লিকেজ,পানিবাহিত রোগে প্রাণহানির সম্ভাবনা

0

সিটি নিউজ ডেস্ক,চট্টগ্রাম : হালিশহরে পানির লাইনে লিকেজ ও বাসা-বাড়ীর সোয়ারেজ এর জন্য সেফটি ট্যাঙ্ক না থাকায় পানির লাইনের সাথে যুক্ত হয়ে ড্রেনেজে মিলেছে। আর এ কারনে গত বছর পুরো হালিশহর জুড়ে ডায়ারিয়া ও জন্ডিস মহামারী আকারে ছড়ালেও চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিটিকর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে বাসা-বাড়ীর মলমূত্র সরাসরি ড্রেনেজের সাথে যুক্ত হয়ে পুরো পরিবেশ যেমন দুষিত করছে, বাতাস কুলষিত, দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে আছে, জলাবদ্ধতায় সমস্ত সড়কগুলি তলিয়ে গিয়ে মাটির সাথে মিশে আছে, ধুলাবালি ও আবর্জনায় পুরো হালিশহর যেন আবর্জনার স্তুপ, তেমনি হালিশহরে আবারও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব হয়ে প্রাণহানির সমুহ সম্ভাবনা দেখা দিলেও প্রশাসনের নির্বিকারে ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে হালিশহরবাসীকে চরম দুর্দশা থেকে মুক্তি দানের দাবি জানিয়েছেন।

ধুমপান ও তামাক পণ্য সেবন যেমন মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমিন অনিরাপদ ও ভেজাল খাদ্য মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং জীনবরক্ষাকারী ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ির কারনে জীবন বাঁচাতে কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই মানুষের জীবন বাঁচানো, পরিবেশ দূষণরোধ, নির্মল বায়ু, নিরাপদ সুপেয় পানি নিশ্চিত করা না হলে মহাহারী ডায়রিয়া ও জন্ডিস পুনরায় প্রাণঘাতি ও ভয়ংকর হতে পারে। কিন্তু প্রশাসনের দায়িত্বশীল লোকজনের খামখেয়ালীপনায় যেন জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে না উঠে সে বিষয়ে যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত না হলে সত্যিকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

শনিবার ২০ এপ্রিল নগরীর হালিশহর ওব্যাট আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৬নং উত্তর হালিশরহর ক্যাব ওয়ার্ড কমিটির ওরিয়েন্টেশনে বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত দাবি জানান। ক্যাম্পইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস’র সহায়তায় পিপলস জুবিল্যান্ট এনগেজমেন্ট ফর টোবাকো ফ্রি চিটাগাং সিটি প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের আয়োজনে ওরিয়েন্টেশনে সভাপতিত্ব করেন ক্যাব ২৬নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি এমদাদুল হক সৈকত। প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ওয়াসার পানি সরবরাহ কার্যক্রম বাড়লেও সরবরাহ লাইনে কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা মেরামতের দক্ষতায় ওয়াসার প্রকৌশল বিভাগ খুবই দুর্বল। ফলে কোনো পাইপলাইনের পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হলে পুরো এলাকার পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হয়। এছাড়া মেরামত কার্যক্রম ধীরগতির হওয়ায় ভোগান্তির মধ্যে পড়ে গ্রাহক।

আবু ইউসুফ সন্দিপীর সঞ্চালনায় ওরিয়েন্টেশনে প্রধান বক্তা ছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব আবুল হাসেম, উদ্বোধক ছিলেন সমাজ সেবক এস এম আজিজ, আলোচনায় অংশনেন ওব্যাট পরিচালক সোহের আক্তার খান, সমাজ কর্মী মোসাদ্দেক, বি ব্লক ব্যবসায়ী কল্যান পরিষদের সভাপতি মনির উদ্দীন কাউসার, ক্যাব ওয়ার্ড সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য সেলিম সাজ্জাদ, মওলানা আমজাদ হোসেন, জামাল চৌধুরী বিপ্লব, রফিকুল ইসলাম, দেলুয়ার হোসেন, মোশারফ মামুন, ফারজানা ইশরাত, এমএ হাসেম, আকাশ রিতা চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা, মোঃ চান, মোঃ এহসান, নুপুর আকতার, এস এম আনাস, বাপ্পি ও ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।

ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলামের মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় তামাক ও ধুমপানের বিজ্ঞাপন বন্ধে আইনী প্রতিকারের বিষয়ে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন এবং করনীয় নিয়ে আলোকপাত করেন। বক্তারা বলেন ধুমপান ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কোন উপকারিতা আজ পর্যন্ত আবিস্কার করতে না পারলেও সিগারেট কোম্পানী গুলি নানা প্রকার বিজ্ঞাপন, উপটোকন ও প্রণোদনা দিয়ে তরুনদেরকে বিড়ি সিগারেট এ আসক্ত করছে।

যার সর্বশেষ পরিনতি হচ্ছে একটি সম্ভাবনাময় জীবনের পরিসমাপ্তি। বিষয়গুলো জানার পরও মানুষ তামাকে আসক্ত হচ্ছে। নিজে ধুমপায়ী না হলেও পরিবারের অন্য ধুমপায়ীর কারনে পরোক্ষ ধুমপানের কারনে ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোট এখন মহামারী আকারে দাড়িয়েছে। কিন্তু ধুমপানের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ব হলেও হোটেল রেস্তোরায় প্রবেশ পথে ও মুদি দোকানে সারি সারি করে বিড়ি সিগারেট এর বিজ্ঞাপন, প্রদর্শণ ও বিক্রি, খুচরা ভাবে প্রত্যন্ত এলাকায় তামাক বিক্রি থেমে নেই। পরিবার ও সমাজে কয়েকজন প্রথমে তামাক সেবন শুরু করলেও পরবর্তীতে মহামারী আকারে এর বিস্তার ঘটে। সেকারনে তামাকজাত পণ্য ব্যবহার একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি, যার সর্বশেষ পরিনতি অকাল মৃত্যু।

তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণে ধুমপান বিরোধী আইনের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই ধারা বিধান লংঘন করলে অনুর্ধ ৩ মাস কারাদন্ড বা অনধিক ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবার বিধান থাকলেও আইন প্রয়োগের ঘটনা তেমন একটা দেখা যায় না। ফলে নগরজুড়ে ধুমপানের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা এমনকি প্রশাসন, আদালত, হাসপাতাল, ক্লিনিক, হোটেল-রেস্তোরায় প্রবেশ পথে ও মুদি দোকান, নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও ধুমপানের বিজ্ঞাপন ও বিক্রি মুক্ত নয়। তাই তামকমুক্ত, ক্লিন ও গ্রীন সিটি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সমাজ পরিবর্তনকামি মানুষগুলির প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.