নুসরাত হত্যাঃ ৫ আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চার্জশীট গ্রহণ

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ চাঞ্চল্যকর ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানির জন্য আসামিদের ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রিজন ভ্যানে করে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা মধ্য দিয়ে তাদেরকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

বাদীর নারাজি না থাকায় আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন। মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ২১ আসামির মধ্যে ৫ আসামিকে অব্যাহতি দেন। আগামী ২০ জুন অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।

এছাড়া চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ৭ জনের জামিন চাওয়া হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, বাদীর আপত্তি না থাকায় আজকে আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেছে।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন- সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম।

এছাড়া ৭ জন আসামির জামিন চাওয়া হয়েছে। আদালত বাদী ও আসামি এবং সরকার পক্ষের শুনানি শুনে সকল আসামির জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আগামী ২০ জুন এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য্য করেছেন।

চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়াম লীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামলাটি তদারকী করছেন। আশাকরি শীঘ্রই ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেপ্তার হবেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু বলেন, যারা ছাদে নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছিলো সেই ৬ জন ছাড়া বাকী ১০ জনকে একই গ্রাউন্ডে জামিন দেয়া উচিত ছিলো।

আদালত সূত্র জানায়, খুবই স্পর্শকাতর এ মামলার অভিযোগপত্র ও প্রায় ৮০৮ পৃষ্ঠার সামগ্রিক নথিটি গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

আদালত সূত্রের তথ্য মতে, সেদিন অভিযোগপত্রসহ কেস ডকেট (সার্বিক নথি) জমা দিলেও বিচারক অভিযোগপত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুন উর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। এরপর গত ৩০ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আসামিদের হাজির করা হলেও বিচারক সেদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি না করে ১০ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে হত্যার উদ্দেশ্যে গত ৪ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ১২ এপ্রিল মামলাটি পিবিআইতে পাঠানো হয়। পুলিশ ও পিবিআই এ ঘটনায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গত ২৮ মে আদালতে ১৬ জনের ফাঁসির আবেদন করে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.