দক্ষিণ চট্টগ্রামে সাড়ে ৭শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে ৪টি ব্রিজ

0

নিজস্ব প্রতিবেদক, চন্দনাইশ : সাড়ে ৭শ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া ইন্দ্রপুল, চন্দনাইশের বরগুনী, দোহাজারী শঙ্খ ও চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে ৪টি ব্রিজ। জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ক্রস বর্ডার নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (সিবিআরএনআইপি) প্যাকেজ-সি-এর আওতায় ৪টি ছোট থেকে মিডিয়াম সাইজের সেতুসহ সংযুক্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে গত ২২ নভেম্বর’ ১৮ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্পেক্ট্রা,সিআর-২৪ বি যৌথভাবে কাজ পেয়ে ইতিমধ্যে প্রতিটি সেতুর নির্মাণ কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোহাজারী শঙ্খ ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে সেতুটি নির্মাণের লক্ষ্যে একটি স্পেইন স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। সংশি¬ষ্টদের মতে এ সেতুগুলি গার্ডার সেতু হিসেবে নির্মাণ করা হবে। দোহাজারী সেতুতে ৫টি স্পেইনের উপর ২ লাইন করে ৩ ভাগে বিভক্ত করে গার্ডার বসিয়ে সেতু নির্মাণ করা হবে। যা আগামী ২১ নভেম্বর ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ইতিমধ্যে এ সকল সেতুগুলো নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কের উভয় পাশের জায়গা অবৈধ দখলদারদের থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন।

সে সাথে প্রয়োজনীয় জায়গা অধিগ্রহণের কাজও এগিয়ে চলছে বলে জানা যায়। এ সেতুগুলি নির্মাণ হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হওয়ার পাশাপাশি সড়কের দু’পাশের মানুষের জীবন যাত্রায় আসবে স্বচ্ছলতার। পর্যটন নগরী কক্সবাজার, বান্দরবানের সাথে সড়ক যোগাযোগ আরো সহজতর হবে। ফলে এসব এলাকার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে স্বচ্ছলতার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। সেতুগুলো নির্মাণের পাশাপাশি সরকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে ৪ লাইনে রূপান্তরিত করার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।

এদিকে সেতুগুলোর উভয় পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিজস্ব জায়গায় নির্মাণাধীন বসতঘর ও দোকানপাঠ স্থানীয়রা নিজেরাই সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। তবে এসকল স্থাপনার মালিকরা তাদের ক্ষতিপুরনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। তারা বলেন, ইতিমধ্যে সরেজমিনে সরকারি ভাবে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এর আওতায় ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার এ সকল সেতুগুলো প্রয়োজনের তাগিদে ৬ লাইনে উন্নীত করেছেন। সে সাথে পিজিভিলিটি স্টাডি ও সয়েল টেষ্টের মাধ্যমে সেতুগুলো নির্মাণের জন্য সাড়ে ৭’শ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। জাইকা ও বাংলাদেশ সরকার যৌথ উদ্যোগে এ সেতুগুলো নির্মাণ করবে। আগামী ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে সেতুগুলো নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনকালে মহাসড়ককে ৪ লাইনে উন্নীতকরণের ঘোষণা দেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী কর্ণফুলী ট্যানেলের খনন কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুনরায় শিকলবাহা ক্রসিং থেকে মহসড়কের কাজ শুরু করার কথা বলেন। এরই অংশ হিসেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কের বেদখল জমি উদ্ধারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। চলতি বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ শুরু হয়। একইভাবে সড়কের ৪ টি সেতু ৬ লাইনে নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শিকলবাহা ক্রসিং থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৫৯ কি:মি: এবং কক্সবাজার লিং রোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৭৬ কি:মি: সহ ২’শ ৩৫ কি:মি: সড়ক ৪ লাইন হবে। সে লক্ষ্যে এ সড়কে দখলদারদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এডিবির অর্থায়নে সুইডিস কনসালটেন্ট নামে একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠান মহা সড়ক ৪ লাইনে উন্নীতকরণ কাজের জরিপ করেন। সে সময় প্রকল্প ব্যয় নির্ধারন পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে।

উল্লেখ্য যে, শাহ আমানত সেতুর উভয়প্রান্তে সংযোগ সড়ক ৪ ও ৬ লাইনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। নির্মিত সেতুর প্রকল্পের উদ্বৃত্ত ২’শ ৭০ কোটি ১১ লক্ষ টাকায় সেতু উভয় প্রান্তে ৮ কি:মি: সড়ক ৬ লাইনে ও মইজ্যারটেক থেকে আনোয়ারা ক্রসিং পর্যন্ত ৩ কি:মি: ৪ লাইন সড়ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.