কক্সবাজারে এক দর্জির বিরুদ্ধে দু’দিনে তিন মামলা

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীনঃ কক্সবাজার শহরের স্টেডিয়ামপাড়ায় বসতবাড়ী দখলের জন্য এক টেইলারিং মাস্টারের (দর্জি) বিরুদ্ধে দুইদিনে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সব মামলার আসামি দর্জি নুরুল হকের নিকটাত্মীয় ইয়াবা ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বাপ্পি নামের এক ব্যক্তি শাশুড়ী, তার স্ত্রী ও বোন বাদী হয়ে আদালতে পৃথক মামলাগুলো দায়ের করেন।

দুইদিনে তিনটি মামলার পৃথক ঘটনাস্থলও দেখানো হয়েছে। আদালত মামলাগুরো তদন্তের জন্য পিবিআই, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ড বাসিন্দা বাঁচা মিয়ার ছেলে টেইলার্স মাস্টার (দর্জি) নুরুল হক এলাকায় একটি টেইলার্স দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। পাশ্ববর্তী তার নিকটতম আত্মীয় রেজাউল হকের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বাপ্পি ওই দর্জি নুরুল হকের বসতবাড়ি একাধিক বার দখলের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এরআগেও বসতবাড়ি দখল করতে গিয়ে নুরুল হক ও তার স্ত্রী হামলার শিকার হন। একাধিকবার হালমা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছিল নুরুল হক ও তার স্ত্রীকে। এঘটনায় মামলাও হয় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে।

এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত ইয়াবা কারবারী হারুন অর রশিদ বাপ্পির স্ত্রী জান্নাত আরা বাদী হয়ে তাকে গত ২২ এপ্রিল মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে গত ২৮ এপ্রিল কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর-৮৮৬/ ২০১৯।

এ মামলায় টেইলার্স মাস্টার নুরুল হককে এক নম্বর আসামি ও তার স্ত্রী হাসিনা বেগমকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে একই দিন (২২ এপ্রিল ) ইয়াবা কারবারবীর হারুন অর রশিদ বাপ্পির বোন বাদী হয়ে মর্জিনা আক্তার (স্বামী নুরুল হাকিম মনি) কে সন্ধ্যা ৭ টার সময় তার বসতবাড়িতে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টাসহ শালীনতা হানির অভিযোগ তুলে গত ২৮ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নাম্বার-১ কক্সবাজার আদালতে দর্জি নুরুল হককে প্রধান এবং একমাত্র আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার সিপি মামলা নাম্বার- ১৭০/২০০১৯ । আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

অপরদিকে, ২৮ এপ্রিল রাত আনুমানিক ৯ ঘটিকার সময় কক্সবাজার শহরের জলিলের দোকান সংলগ্ন আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী রাস্তার কর্নারে বাপ্পির শাশুড়ী আমেনা বেগম (স্বামী মৃত শাহ আলম স্টেডিয়াম পাড়া রশিদ কলোনি ভাড়া বাসা) কে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ তুলে বাদী হয়ে গত ২৯ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত নাম্বার-১ কক্সবাজারে একটি মামলা দায়ের করেন।

সিপি মামলা নাম্বার-১৭৩/২০১৯ দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলায়ও দর্জি নুরুল হককে প্রধান ও একমাত্র আসামী করা হয়। এসব মামলা দায়ের পর টেইলার্স মাস্টার নুরুল হকের পরিবার চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর আতঙ্কের মধ্যে পড়ে গেছে। একই দিনে ২ টি ঘটনা দেখিয়ে ও একদিন পর আরও একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে একনাগাড়ে তিনটি মামলা দায়ের নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে এধরনের মিথ্যা মামলাগুলো সুষ্টু তদন্তের জন্য দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, হারুন অর রশিদ বাপ্পী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। ইতোপূর্বে চট্টগ্রামেও ইয়াবা সহ আটক হয়েছিল বাপ্পী। তার নানার বাড়ি টেকনাফের সাবরাং এলাকায়। ইয়াবার টাকা গড়েছে স্টেডিয়ামপাড়ায় দুইতলার বাড়ি। তার মা সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের পাশে জনৈক মাস্টারের ভাড়া বাসায় থাকে। সেখান থেকে বাপ্পীর মা ও আত্মীয় স্বজন মিলে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার কারবার করে আসছে বলে জানা গেছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.