আহলে সুন্নাতের আল্লামা কাদেরী ও আল্লামা নুরুল মুনাওয়ার (র)’র স্মরণসভা

0

সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে সোমবার ২৪ জুন বিকেলে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আহলে সুন্নাতের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব আল্লামা আজিজুল হক আলকাদেরী (রহ.) এবং আল্লামা নুরুল মুনাওয়ার (র)’র স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, কীর্তিমানদের কেউ স্মরণ করুক আর নাই করুক। তাদের রেখে যাওয়া কর্মই তাঁদের বাঁচিয়ে রাখে। সফল ব্যক্তির জীবন চিত্র আলোচনা ও স্মরণের মাধ্যমে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালে আরো সফল ও কীর্তিমান ব্যক্তির জন্ম হয়।

অধ্যক্ষ আল্লামা আজিজুল হক আলকাদেরী (রহ.) ও অধ্যক্ষ আল্লামা সৈয়দ নুরুল মুনাওয়ার (রহ.) আজীবন দ্বীন ইসলামের খেদমত করেছেন। অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে ইসলামী জ্ঞান আহরণের সুযোগ করে দিয়েছেন। সূফিবাদি অহিংস মতাদর্শের উপর বিভিন্ন পুস্তক লিখে তারা সবসময় সত্য ও সুন্দরের পথ দেখিয়েছেন। তাই তাদের স্মরণ করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। একইভাবে স্মরণ করতে হবে, তাঁদের হায়াতে জিন্দেগির আন্দোলনের ইতিহাস। তাঁরা কখনও অন্যায়ের কাছে মাথানত করেনি। সুন্নিয়তকে সংরক্ষণ করতে যেভাবে সমসাময়িক ভ্রান্তমতবাদের মোকাবেলা করে গেছেন, ঠিক সেভাবে আমাদেরকেও বর্তমানে গর্জে ওঠা দেশ-জাতি বিরোধী জঙ্গিবাদ, সুন্নিয়তের বড় শত্রু শিয়াবাদ এবং কাগতিয়ার ভন্ডামি রুখে দিতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।

আহলে সুন্নাতের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এম এ মতিন বলেন, যে সাতজন শীর্ষ আলেমকে সামনে রেখে সেদিন ২০১৩ সনের ২০ এপ্রিলের স্মরণাতীতকালের বৃহত্তম সফল মহাসমাবেশ আয়োজিত হয়েছিল, সম্প্রতি তাঁদের দু’জন শত শত আলেমের শিক্ষাগুরু আল্লামা আজিজুল হক আল কাদেরী এবং আল্লামা সৈয়দ নুরুল মুনাওয়ার অল্প দিনের ব্যবধানে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন, যাঁদের অবদান সুন্নিজনতা কখনো ভুলে যেতে পারেনা। বক্তাগণ বলেন, ২০১৩ সালের একতা সুন্নিজামাতের শক্তিকে জাতিয়ভাবে জানান দিতে সক্ষম হয়েছিল, আজও দরকার ইস্পাত কঠিন এক্যবদ্ধ আন্দোলন। সুন্নিয়তকে রক্ষার জন্য এই ঐক্যের বিকল্প নাই, আর এ জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে সকলকে।

পীরে ত্বরিকত আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলা (ম.জি.আ)’র সভাপতিত্বে প্রফেসর সৈয়দ জালালুদ্দিন আল আজহারী ও অধ্যক্ষ আল্লামা ইসমাইল নোমানির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশাল স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন স্মরণ সভা প্রস্তুতি কমিটির সচিব আল্লামা নূর মোহাম্মদ আলকাদেরী। আহলে সুন্নাতের কর্মসূচি ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন, প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এম এ মতিন ও সদস্য সচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার।

ওলামা-মাশায়েখদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আল্লামা এম এ মান্নান, শায়খুল হাদিস আল্লামা সোলাইমান আনসারী, শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দীন আশরাফী, পীরে তরিকত ছাদেকুর রহমান হাশেমী, অধ্যক্ষ স. উ.ম আবদুস সামাদ, অধ্যক্ষ মুফতি হারুনুর রশিদ, শায়খুল হাদিস আল্লামা আশরাফুজ্জামান আলকাদেরী, শাহজাদা সৈয়দ মোহাম্মদ জুন্নুরাইন, অধ্যক্ষ আবু আহমদ জামেউল আখতার আশরাফী চৌধুরী, কাজী সোলাইমান চৌধুরী, আলহাজ¦ শাহাব উদ্দিন চৌধুরী পীরে তরিকত শহিদুল আলম শাহ, অধ্যক্ষ মুফতি শাহ আলম, অধ্যক্ষ শাহ খলিলুর রহমান নেজামী,অধ্যক্ষ বদিউল আলম রেজভী, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, মাওলানা জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ শাহজাদা শোয়াইব রেযা, অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন হাশেমী, অধ্যক্ষ তৈয়ব আলী, মুফতি জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ আবুল কালাম, ড. মতিউল ইসলাম, পীরে তরিকত কাজী সৈয়দ আতিকুল্লাহ, পীরে তরিকত সৈয়দ আসরারুল হক আনোয়ারী, পীরে তরিকত খাজা মুবারক আলী, পীরজাদা মতি মিয়া মনছুর, অধ্যক্ষ আহমদ হোসাইন আলকাদেরী, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আমিরী, অধ্যক্ষ জরিফ আলী আরমান, অধ্যক্ষ আহমদ রেজা, আল্লামা ফরিদুল আলম রেজভী, অধ্যক্ষ মাওলানা মফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ জমির উদ্দিন নেছারী, অধ্যক্ষ মাওলানা আতাউল মোস্তফা রেজভী, শাহজাদা সৈয়দ সফিউল আজম ইছাপুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সোলাইমান ফারুকী, মাওলানা ইকবাল কাদেরী, মাওলানা আশেকুর রহমান, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা আহমদ কবির রেজভী, মাওলানা এম এ মাবুদ, মাওলানা ওবাইদুল মোস্তফা কদমরসুলী, মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, কাজী তৌহিদুল আলম আলকাদেরী, মাওলানা শিব্বির আহমাদ ওসমানী, মুফতি কামাল উদ্দিন,মাওলানা ইউনুস তৈয়্যবী, মাওলানা আবুল হাশেম, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, মাওলানা আবদুল হাকিম, মাষ্টার আবুল হোসাইন, সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, জি.এম শাহাদত হোসাইন মানিক প্রমুখ।

বক্তাগণ আরো বলেন, নিজেদের শক্তিপ্রদর্শনের মাধ্যমে চিহ্নিত জঙ্গি প্রজননকারীরা কওমীরা আজ সরকারি সনদ ও সুবিধা নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সে কথা ভুলে গেলে চলবেনা। ১২ নভেম্বর ঢাকা সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের মহাসমাবেশে সুন্নি জনতাকে যেতে দেওয়া হলে, জঙ্গিবাদের দোসরদের চেয়ে যে সূফিবাদের অনুসারীদের শক্তি বেশি সেটা প্রমানিত হতো, বিধায় সেদিন আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলাম। তবে আমরা হতাশ নই। আবারো ঘুরে দাঁড়াব ইনশাআল্লাহ্। তবে এখন জরুরি হয়ে পড়েছে একের পর এক সুন্নি ওলামা-ছাত্র, জনতা নির্বিশেষে সর্বস্তরের প্রতিবাদীদের উপর জুলুম-নির্যাতনকারী ভন্ড কাগতিয়া পীরের উচ্ছেদের পাশাপাশি, বর্তমানে সুন্নি দরবারগুলোতে আহলে বাইতের প্রতি মহব্বতের ছলচাতুরিতে ইরানের টাকায় শিয়া মতবাদ প্রচারের জঘন্য ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে সুন্নিয়তের ময়দানকে বিভক্তি থেকে রক্ষা করা। এ জন্য ওলামা সমাজকে আল্লামা কাদেরী এবং আল্লামা নুরুল মুনাওয়ার হুজুরদের মত আপোষহীন সক্রিয় আন্দোলন করতে হবে।

স্মরণ সভায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি সমবেদনা ও আহতদের সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। এ মারাত্মক পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতিও আহ্বান জানান আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.