আলোকবর্তিকা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ

0

এড. সালাহ্উদ্দিন আহমদ চৌধুরী লিপু :: জননেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ রাজনীতিতে পর্দাপন করেন তার পিতা মরহুম আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরীর রাজনৈতিক আদর্শ ধারন করে। তাই তিনি আদর্শিক চেতনার পথিকৃত। পরিচ্ছন্ন,সৎ নির্ভিক ও সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি ইতিপূর্বে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি ১৯৬৯ সালের ১৮ মার্চ বীর প্রসবিনী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী বিধৌত আনোয়ারা উপজেলাধীন হাইলধর গ্রামে বনেদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেশে মাধ্যমিক স্তর সাফল্যের সাথে সমাপ্তি করে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি দিয়ে তথায় হতে তিনি ব্যবসা প্রশাসন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে পাঠ চুকিয়ে তিনি ১৯৯১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করে ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে পড়েন এবং ব্যবসায়ী নেতা হয়ে উঠেন।

ফলশ্রুতিতে তিনি ২০০৫-০৬, ২০০৭-০৮ তিন মেয়াদে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্টিজ লিমিটেডের সভাপতি এবং তার পিতার প্রতিষ্ঠিত দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইউসিবি ব্যাংকের চেয়াম্যান ও আরামিট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। মন্ত্রীত্ব লাভের পর তিনি তাদের প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের চেয়াম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলে তার সহধর্মিনি মিসেস রুখমিলা জামান চৌধুরী উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়াম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী জননেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ পিতার সাহচার্যে ১৯৯১ সালের পর হতে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তার পিতার মৃত্যুর পর তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে আবির্ভাব হন। তিনি একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান। ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর তার পিতা মরহুম আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরীর মৃত্যুর পর ভূতপূর্ব চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) সংসদীয় আসন শূন্য হলে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ হতে মনোনয়ন প্রাপ্ত হয়ে তিনি ২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারি উপ-নির্বাচনে এবং পুনরায় দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি হতে ০৭ জানুয়ারি পর্যন্ত অত্যন্ত সুনাম ও সততার সাথে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং সততার পুর“ষ্কার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের ০৭ জানুয়ারি তাকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করে পুরুস্কৃত করেন।

তিনি বর্তমানে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহি কমিটি (একনেক) এর সদস্য। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন ব্যক্তি। নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে গত ২২ মার্চ তুর“স্কের ইস্তাবুলে অনুষ্ঠিত ওআইসির জরুরী বৈঠকে ভূমিমন্ত্রী ৫ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। সম্প্রতি তিনি রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়া গেলে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি বিরোধ বিষয়ে রাশিয়া সরকার বাংলাদেশকে সহযোগিতা বলে তাকে আশ্বাস প্রদান করেন। তাছাড়া তিনি ২০১২-১৬ মেয়াদে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ভূমিমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষনা করেছেন। তিনি চট্টগ্রামে ও ঢাকায় সাংবাদিক সন্মেলনে বলেছেন, “শেখ হাসিনা সততার পুর“ষ্কার হিসেবে আমাকে মন্ত্রী করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়কে আমি যেকোন মূল্যে দুর্নীতি মুক্ত করবো। নিজেও দুর্নীতির উর্ধ্বে থাকতে চাই। ভূমি মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতা আওতায় এনে জনগণের সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়বো। কোন সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দেবো না। প্রতিশ্র“তি পুরণে আমি অঙ্গীরাবদ্ধ। আমি এই মন্ত্রণালয়কে টপ ফাইভে নিয়ে যেতে চাই। এক বছরের মধ্যে দৃশ্যমান উন্নতি হবে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে এখান থেকে যাবো না। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই, আমি এসেছি সন্মানের জন্য। দুর্নীতি যেদিন আমাকে স্পর্শ করবে, সেদিন আমার শেষদিন।”

বিভিন্ন ভুমি অফিসে তার সারপ্রাইজ ভিজিট প্রশংসিত হয়েছে। হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত করতে অতীতের ন্যায় সারপ্রাইজ ভিজিট অব্যাহত থাকবে বলে তিনি বলেছেন। দুর্নীতি রোধে গত ১২ জানুয়ারি তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিবরণী জমা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন ৫টি দপ্তর ও ৬৪টি জেলায় কর্মরত ১৭,২০৮ জন কর্মচারির হিসাব বিবরণী দাখিল করেছেন।

ভূমি মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনে কার্যক্রম জটিলতা নিরসনে ভূমিমন্ত্রী নানা উদ্যেগ নিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর দুর্নীতি, অনিয়ম হয়রানি রোধে ভূমি সংক্রান্তে আমুল পরিবর্তন এনেছেন। যা সরকার ও জনগণের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। ভূমি হুকুম দখল সংক্রান্তে জনগণের হয়রানি লাঘবের নিমিত্তে তিনি সংস্কার এনেছেন। যেমন ইতিপূর্বে ভূমিহুকুম দখলের ক্ষতিপুরণের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হলেও এখন চেকের মাধ্যমে তা পরিশোধ করছেন। তিনি ভূমি প্রশাসনের কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি গত ২৭ ফেব্র“য়ারি সচিবালযে “হাতের মুঠোয় খতিয়ান” নামক ্একটি আ্যাপস অবমুক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এই আ্যাপসের মাধ্যমে পাঁচ মিনিটের মাধ্যমে আর,এস খতিয়ান খতিয়ানের কপি সহজে পাওয়া যাবে।

অনলাইনে প্রায় ৩২ হাজার মৌজার ১ কোটি ৪৬ লাখ আর,এস খতিয়ান আপলোড করা হয়েছে। অবিশিষ্ট খতিয়ানগুলো ক্রমান্বয়ে যুক্ত করা হবে। আর,এস কে সিষ্টেম ও ডিডিআর এর মাধ্যমে সি,এস, এস,এ আর,এস খতিয়ান অনলাইনে সরবরাহের পরিপত্র জারি করেছেন। জনগণকে দ্রুত সময়ে সেবা প্রদানে বর্তমেিন ৩০২টি উপজেলায় ই-মেডিটেশন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ভূমিমন্ত্রী গত ১২ ফেব্রুয়ারী সমগ্র ঢাকা জেলার শত ভাগ ই-নামজারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এছাড়া ভূমি ও আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন নিবন্ধন পরিদপ্তরের (সাব রেজিষ্ট্রার অফিস নিয়ন্ত্রক) উন্নয়ন কার্যের সমন্বয় করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যেগ মন্ত্রী গ্রহণ করেছেন।

জানা যায়, মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি পুরণের লক্ষ্যে পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা তিন মেয়াদে সাজিয়েছেন মেয়াদের দেড় বছর স্বল্প, পরবর্তী দেড় বছর মধ্য ও শেষ দুই বছর দীর্ঘ মেয়াদী। তিনি একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া জনগণের দুর্ভোগ লাঘব ও দুনীতি রোধে প্রতিটি ভূমি অফিসে ভয়েস রেকর্ডিং সমৃদ্ধ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যেগ গ্রহণ করেছেন। তার পরবর্তী কার্যক্রম হলো জর“রি সেবা প্রদানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে হট লাইন স্থাপন, জুলাই মাসের মধ্যে ই-নামজারি সমগ্র দেশে পুরোদমে চালুকরণ, সেবা দাতাদের দক্ষ করতে ওয়ার্কশপ আয়োজন, দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবহিত করণ কার্যক্রম, ভূমি অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কর্মসূচি, অন্যান্য সেবা ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুর“ করা, অনলাইনে খতিয়ান সেবা চালু করণ, আরও উল্লেখযোগ্য চলমান প্রকল্প হলো ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়, ভুমি আইন ও বিধি সংস্কার কার্যক্রম, উপজেলা ইউনিয়ন অফিস নির্মাণ ও মেরামত,ভূমি রেকর্ড আধুনিকরণ তথা স্বল্প সময়ে সংক্রান্ত সেবা প্রদান।

আনোয়ারার ইতিহাসে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ প্রথম মন্ত্রী। তাই তিনি অনন্তকাল আনোয়ারায় ইতিহাস হয়ে থাকবেন। তিনি পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ায় আনোয়ারা-কর্ণফুলী তথা দক্ষিণাঞ্চলবাসির প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি পূর্ণতা পেয়েছে। তিনি আনোয়ারা-কর্ণফুলী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসির জন্য আর্শীবাদ ও গৌরব। পশ্চাৎপদ আনোয়ারা-কর্ণফুলি জনপদ দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। অতীতে তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি কিন্তু ভূমিমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে । চলছে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। নব দিগন্তের সূচনা হয়েছে। মন্ত্রীর কল্যাণে শিল্পায়ন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার বিশাল দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। ভূমিমন্ত্রীর মাধ্যমে আগামীতে আনোয়ারা হবে সমৃদ্ধশালী আনোয়ারা। এতদাঞ্চলের উন্নয়নে সরকার আনোয়ারাকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সমস্ত আনোয়ারাকে অর্থনৈতিক অঞ্চল-১ ও ২ হিসেবে পরিচিহ্নিত করেছে সরকার। ৭৭৪ একর জমির উপর অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি স্থাপন করবে অর্থনৈতিক অঞ্চল-১,২ গহিরা ও চার মৌজায় জাহাজ নির্মাণ শিল্প, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্যসামগ্রী, ফার্নেস ও সিমেন্ট শিল্পকে প্রাধান্য দিয়ে ৩৭১টি শিল্প কারখানা।এটি বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হবে।

তাছাড়া নির্মিত হবে বিদ্যুৎ সাব- ষ্টেশন, এলএনজি টার্মিনাল, বর্জ্যশোধনাগার। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কতৃপক্ষ (বেজা) নির্মাণ করবে ২০ তলা বিশিষ্ট ভবন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। আনোয়ারায় নয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩.৪ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্য দেশের প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণাধীন রয়েছে। যা আনোয়ারা ও চট্টগ্রামকে এক সুতোয় গাঁথবে। টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে ১৫ মেগাওয়াট ও অপর প্রান্তে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সাব-ষ্টেশন নির্মিত হবে। গ্যাস সংকট নিরসনে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘন মিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মহেশখালি এলএনজি গ্যাস টার্মিনাল হতে আনোয়ারার উপর দিয়ে যাওয়া গ্যাস সঞ্চালন লাইনের সাব-ষ্টেশন আনোয়ারাতে স্থাপন হয়েছে।

পাউবি ২৫০ কোটি ব্যয়ে আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপকূলে ৬৪.৫ কিঃ মিঃ বেঁধিবাধ পুণঃনির্মাণ ও সুরক্ষার কাজ করছে। ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিঃ মিঃ দীর্ঘ পারকি সমুদ্র সৈকত আধুনিকায়ন করার নানা উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। সেজন্য ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণও করা হয়েছে। ১৮৯ কোটি ৪৮ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী-টইটং আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম অচিরেই শুর“ হবে। এশিয়ান হাইওয়ে হবে আনোয়ারার মধ্যে দিয়ে। গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি নির্মাণ করবে সরকার হাট বাজারে চার তলা বিশিষ্ট ১০ হাজার বর্গফুটের আধুনিক মার্কেট। আনোয়ারা উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের জন্য বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে। আনোয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলেজ ও আনোয়ারা বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করেছেন।

তিনি আনোয়ারাকে ৯০% এলাকাকে বিদ্যুাতায়ন করেছেন। স্থাপন করেছেন ফায়ার সার্ভিস এন্ড ডিফেন্স, নতুন আনোয়ারা থানা কমপ্লেক্স, থানা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণের জন্য ইতিমধ্যে ৫ তলা বিশিষ্ট দালান দরপত্র হয়েছে। সে আদিকাল হতে ঝুঁকিপূর্ণ আনোয়ারা সদরের সেতু তিনিই নতুনভাবে নির্মাণ করেছেন, এখন জনগণ সুফল ভোগ করছেন। আনোয়ারা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এখন আনোয়ারা সদরের অনতিদূরে সিংহরায় স্থাপিত জরাজীর্ণ অপর বেলি ব্রীজটি ভেঙ্গে স্থায়ী সেতু নিমার্ণের কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে। ইতিপূর্বে স্থাপিত হয়েছে মেরিন শিপ ইয়ার্ড, কোরিয়ান ই,পি,জেড, কাফকো, সিইউএফএল, ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট (ডিএপি)। তিনি একক প্রচেষ্টায় কর্ণফুলিকে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করেন।

কর্ণফুলী উপজেলায় এ আলম গ্র“প সহ অন্যান্য কোম্পানি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। কর্ণফুলি উপজেলার ওয়াই জংশন হতে কর্ণফুলি সেতু পর্যন্ত সিএনজি চালিত অটো রিকশা চলাচলে সরকারে নির্দেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি সিএনজি চালক ও যাত্রিদের কষ্ট লাঘবের জন্য তিনি সে নিষেধাজ্ঞা এক আদেশে প্রত্যাহার করলে এখন অনায়সে সিএনজি চলাচল করছে। সংসদীয় এলাকার অনেক সেতু,কার্লভার্ট নির্মাণ ও সড়ক,উপ-সড়ক তিনি পাকাকরণ করেছেন। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি একাডেমিক ভবন দিয়ে উন্নয়ন করেছেন। তার সাহসি পদক্ষেপে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে সরকারি অবৈধ সম্পত্তি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আশাকরি ভুমিমন্ত্রী এতদাঞ্চলের উন্নয়নে আরো বিশাল ভূমিকা রাখবেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর পিতা চট্টগ্রামের অভিভাবক, চট্টল শার্দুল, বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর ও বিশ্বস্ত ছিলেন। আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু দলের ক্রান্তিকালে তিনি দিক নির্দেশনা দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সংবিধান প্রণেতার মধ্যে অন্যতম। তাঁর অবদান ইতিহাসের পাতায় অনন্তকাল স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সাল হতে আমৃত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে অধিষ্টিত ছিলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, ৭৭ জাতি চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট, দি ফেডারেশন বাংলাদেশ অব চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্টিজের ও দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্টিজের সভাপতি, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইউসিবি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, খ্যাতিমান শিল্পপতি ছিলেন। দেশীয় পরিমন্ডলের বাইরেও বিশ্ব পরিমন্ডলে তার খ্যাতি ছিল ব্যাপক। তিনি ভূতপূর্ব চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া) সংসদীয় আসন হতে ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ গণ পরিষদের সদস্য ও ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। জনাব জাবেদের চাচা মরহুম বশির“জ্জামান চৌধুরী অবিভক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। অপর চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বশরুজ্জামান চৌধুরী মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ।

দানবীর সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পিতার মতো মানুষের জন্য নিজেকে উদারভাবে উজাড় করে দিয়েছেন। মানব সেবাকে তিনি মহান ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। তিনি একজন অত্যন্ত পরোপকারী ব্যক্তি। তার পিতার মতো তিনি গরীব, দুঃখী মানুষকে সব সময় দু’হাত বিলিয়ে দান করেন। তিনি অনেক হতদরিদ্র রোগিকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে জীবন রক্ষা করেছেন। তার কলমের খোঁছায় অনেকে চাকরি মেলেছে। তিনি প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে আসেন এবং সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার ও শনিবার শহরের বাসভবন সকলের জন্য অবারিত থাকে। সেখানে দলীয় নেতা কর্মী ও সাধারণ জনগণ তার সাথে খোলামনে কথা বলেন এবং মানুষের যে কোন সমস্যা তিনি সাধ্যমত সমাধান করার চেষ্টা করেন। তিনি নিয়মিত নামাজ আদায় করেন এবং সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার তার সংসদীয় এলাকা এলাকার কোন না কোন জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন, সেখানে এবং এলাকার দুঃখী মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা শুনেন এবং তা লাঘবের চেষ্টা করেন এবং তিনি এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী, মিষ্টিভাষী, সদালাপী ও নিরহংকারী ব্যক্তি। তার ব্যবহারে যে কোন লোক মুগ্ধ হয়ে পারেন না। নেতৃত্ব দেয়ার মতো যথেষ্ট গুণাগুণ তার মধ্যে রয়েছে।

তিনি একজন উদার রাজনৈতিক নেতা। তার প্রতি মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা রয়েছে। দলীয় নেতা কর্মীদের তিনি খুব ভালোবাসেন। তার সবচেয়ে বড় গুণ হলো এলাকার দিনমজুর হতে বিত্তবান যে কোন সমস্যা, অভিযোগ বা অন্যান্য বিষয়ে তার মোবাইলে বা সরাসরি নিঃসংকোচে কথা বলতে পারেন। তিনি অন্যায়কে কখনও প্রশ্রয় দেননি। তিনি একজন ন্যায় বিচারকও বটে। মানুষ তার কাছে ন্যায় বিচার পান।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ তিনি ১ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ ভ্রমণ করেছেন। তা ছাড়া তিনি দেশ বিদেশে বিভিন্ন পুরুষ্কার লাভ করেন। তিনি একজন সৎ, নির্ভিক, আদর্শবান ও নির্লোভ ব্যক্তি। দুর্নীতি,স্বজনপ্রীতি বিন্দুমাত্র তাকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। মন্ত্রী হিসেবে তার জন্য সরকারি বাসভবন ও গাড়ি বরাদ্দ থাকলেও তিনি সে সরকারি বাসভবন ও গাড়ি বরাদ্দ না নিয়ে নিজ গাড়িতে চলাফেরা ও নিজ বাসভবনে বসবাস করেন। তিনি সরকার হতে তিনি কোন বেতন ভাতা গ্রহণ করেন না। ভুূমিমন্ত্রী ভূমি মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনকে সংস্কারের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার সদিচ্ছা ও আন্তরিকতাকে স্বাগত জানাই। কামনা করি সাফল্য। ভূমি প্রশাসনে দুর্নীতি শতাব্দী প্রাচীন, কিন্তু তা দূর করার কার্যটি কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। পরিশেষে একটি স্বর্ণযুগের আলোকবার্তিকা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের জন্য শুভ কামনা।

লেখক :- রাজনীতিক, কলামিষ্ট ও সংগঠক।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.