রাইফা হত্যা মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে ম্যাক্স হাসপাতাল

0

গোলাম সরওয়ার, সিটি নিউজ :  চট্টগ্রামের মেহেদীবাগে অবস্থিত ম্যাক্স হাসপাতালে গত বছর ২৯ জুন ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় রাইফার মৃত্যু হয়।অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বাঁচাতে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের( বিএমএ) নেতাদের একটি অংশ ও ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভিন্ন খাতে নেয়ার নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ক্ষমতা ও টাকার জোরে সবকিছু নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

রাইফার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার(২৮জুন) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান এসব অভিযোগ করেন।

রাইফার বাবা দৈনিক সমকালের সিনিয়ির প্রতিবেদক রুবেল খান এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় রোগী মারা যাওয়া অব্যাহত থাকলে চিকিৎসা সেক্টরে সংকটের তৈরী হবে। সাধারণ মানুষ আস্থা হারাবে ডাক্তারদের ওপর। বিএমএন্ডডিসির গড়িমসি বন্ধ ও অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবী জানান তিনি।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সংবাদ সম্মেলন থেকে শনিবার(২৯ জুন) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিক-জনতার সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, গতবছরের ১৮ জুলাই ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসায় অবহেলায় মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগ এনে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় এজাহার দায়ের করেন রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান। দু’দিন পর এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলায় ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্র দেব ও ম্যাক্স হাসাপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খানকে আসামি করা হয়। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছেন চকবাজার থানার ওসি (তদন্ত) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী। এ মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে ।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফেড়ারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য রুবেল খান বলেন,গতবছরের ২৮ জুন বিকেলে কল দেয়ার পর ডা.বিধান এসেছিলেন পরদিন ২৯ জুন দুপুরে। ডা. বিধানের অবহেলার আর কি প্রমাণ প্রয়োজন ? তদন্ত প্রতিবেদনের তৃতীয় নম্বর পর্যবেক্ষণে রাইফার গলা ও বুকের এক্সরে ফিল্ম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমার সহযোগিরা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে সিএমএম কোর্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি ডায়েরি করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকৃত সত্য হলো, ম্যাক্স হাসপাতালের ৫ম তলায় ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা, সুমন তালুকদারের পরামর্শে গত বছরের ২৮ জুন রাতে ওই হাসপাতালেই রাইফার গলা ও বুকের এক্সরে করা হয় । সঙ্গে সঙ্গেই এক্সরে ফ্লিম নিয়ে ডা. সুমনকে দেখানো হয় । সেটি দেখে ডা, সুমন জানান রাইফার বুকে ও গলায় কোনো সমস্যা নেই ।

রুবেল খান আরো বলেন, পরদিন ডা. বিধান যখন ম্যাক্স হাসপাতালের ৭০২ নম্বর কেবিনে রাইফাকে দেখতে আসেন তখন তাকে রাইফার এক্সরে ফ্লিম দেখানো হয়। ডা. বিধানও জানান রাইফার গলা ও বুকে কোন সমস্যা দেখা যাচ্ছেনা ।অথচ রাইফার মৃত্যুর পর ওই এক্সরে ফ্লিম দেখে একজন ডাক্তার বলেন এক্সরে ফিল্মে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে রাইফার থাম সীন পজেটিভ রোগ হয়েছিল। যা সামান্য চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয়ে যেতো।তাকে অযথা এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহিসন কাজী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো- অপারেটিভ সোসাইটি লি: এর চেয়ারাম্যান স্বপন মল্লিক,সিইউজের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব, নির্বাহী সদস্য উত্তম সেনগুপ্ত প্রমূখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.