মিন্নিকে আইনি সহায়তা দেওয়া সরকারের দায়িত্বঃ সালমা আলী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ মিন্নিকে আইনগত সহায়তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব বলে উল্লেখ করে মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী বিবিসি’কে বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কারো পক্ষে, বিশেষ করে কোন আসামীর পক্ষে, আইনজীবী নিয়োগ দেয়া না থাকলে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকাকে গ্রেফতারের পর গতকাল (বুধবার) আদালতে নেয়া হলে তার পক্ষে কোন আইনজীবী লড়তে রাজী হননি। আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেনের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের চাপে বরগুনার কোন আইনজীবী তার মেয়ের পক্ষে লড়তে রাজী হননি।

বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু মোজাম্মেল হোসেনের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মোজাম্মেল হোসেন আইনজীবী পাওয়ার বিষয়ে তাদের সাথে কোন যোগাযোগই করেননি।

এই প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী বলেন, কোন কারণে একজন নাগরিক আইনগত সহায়তা না পেলে তার জন্য আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, এই বিষয়টি যেরকম আমাদের সংবিধানে আছে, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের অনেক জাজমেন্টে রয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক আইনের অনেক ধারাতেও স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এরকম ক্ষেত্রে অভিযুক্ত হিসেবে একজন নারী থাকলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে বলে মন্তব্য করেন সালমা আলী। এই মানবাধিকার আইনজীবী বলেন, আমাদের সমাজে এরকম ক্ষেত্রে নারীদের অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। যেমন ধর্ষণের একজন ভিকটিমকেও নিজের প্রমাণ করতে হয় যে সে ধর্ষিত হয়েছে এবং বিচার চলাকালীন সময় তাকে দোষারোপ করার প্রবণতাও দেখা যায়।

তবে বরগুনার মত অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণ নারী আইনজীবী না থাকা এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলা শহরগুলোর মত সেখানেও আইনজীবীদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাপক হওয়ায় আয়শা সিদ্দিকার জন্য আইনজীবী পাওয়ার বিষয়টি কঠিন হচ্ছে বলে মনে করেন সালমা আলী। তিনি আরও বলেন, বরগুনার মত ছোট শহরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে অনেক সময় চাইলেও সাহস করে এগিয়ে আসেন না অনেক আইনজীবী।

সালমা আলী আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে একজন ব্যক্তির পক্ষে আইনজীবী নিয়োজিত না থাকলে তার ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে। তিনি বলেন, একটা মামলার ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্য শুনে, বিভিন্ন প্রমাণ পর্যালোচনা করে, দুই পক্ষের সব ধরণের বক্তব্য আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হন বিচারক।

এরকম একটি মামলার ক্ষেত্রে আয়শা সিদ্দিকার পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকলে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য বা স্বচ্ছ বিচার হিসেবে গৃহীত হবে না বলে মনে করেন তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.