চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক অর্ধশতাধিক মহাবিপদ বাঁক যানজট

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়কে বাঁকে বাঁকে অর্ধশতাধিক স্পটে বাঁক থাকায় মহাবিপদ যানযটে ভোগান্তিতে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে দূর পাল্লার বাসসহ বিভিন্ন ছোট-বড় যানবাহনগুলো। এছাড়াও এ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক হাট বাজার থাকায় প্রতিনিয়ত বাসসহ চলাচলরত যানবাহনগুলো যানজটের কবলে পড়ায় যাত্রীদেরকে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। ফলে পটিয়া-দোহাজারী, সাতকানিয়া, কেরানী হাট, আমিরাবাদ ও চকরিয়া পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা।

জানা যায়, চট্টগ্রাম-পটিয়া থেকে লোহাগাড়ার চুনতি পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে কমপক্ষে ৫১টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। সড়কের দু’পাশে রয়েছে অনেকগুলো হাট বাজার। এ হাটবাজারে যানজটের কারণে বিভিন্ন সময়ে এ মহাসড়কের পটিয়ার শান্তির হাট, কলেজ বাজার, বাদামতল, মনসা চৌমুহনী, ভেল্লাপাড়া, মুন্সেফ বাজার, থানার মোড়, ডাকবাংলো, বাস স্ট্যান্ড, পোস্ট অফিস মোড়, ভাইয়ার দিঘীর পাড়, চন্দনাইশের রৌশন হাট, বাগিচা হাট, দোহাজারী বাজার, সাতকানিয়ার কেরানীহাট ও লোহাগাড়ার, আমিরাবাদ, তেয়ারী হাট ও বটতলীতে প্রায়ই যানজট চরম আকার ধারণ করে এবং সড়ক দূর্ঘটনায় অনেকে নিহতসহ সহস্রাধিক লোক গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে দুঃখ-কষ্টের জীবন যাপন করছেন ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির পটিয়া মইজ্জার টেক, পটিয়া-আনোয়ারা ক্রসিং, মনসার টেক, বাদামতল টেক, পাইরোল, গৈড়লার টেক, আমজুরহাট, পটিয়া পোস্ট অফিস, আদালত গেইট মোড়, থানার মোড়, ডাকবাংলোর মোড়, বাস ষ্টেশন, কমলমুন্সির হাট মিলে ২০টি পয়েন্টে এবং চন্দনাইশ থেকে লোহাগাড়ার চুনতি পর্যন্ত ২০টির অধিক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে।

চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর শাহ্ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাশ থেকে লোহাগাড়া উপজেলা সদর পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটার দূরত্বের ২০টি পয়েন্টে সড়কের দু’পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে গাড়ির স্ট্যান্ড, গ্যারেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর ৯টি পয়েন্টে বসে নিয়মিত হাটবাজার। এ অংশের সড়কে ৫১টি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও ৩০টি স্থানে অপরিকল্পিত স্পিডব্রেকার রয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়ায় যাত্রী সাধারণকে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়।

পটিয়ার শান্তির হাট এলাকা হচ্ছে যানজটে নাকাল একটি এলাকা। এখানে প্রতিদিন এমন কোন গাড়ি নেই, ২৫ থেকে ৩০ মিনিট যানজট কবলে পড়তে হয়। প্রশাসন মহাসড়ক থেকে বাজার উচ্ছেদ করলেও এখন সেখানে সিএনজি স্টেশনসহ ভ্রাম্যমান বিভিন্ন বিক্রেতা তাদের পন্য বিক্রি করায় যানজট চরম আকার ধারণ করেছে। এর থেকে উত্তোরণ করতে হলে এখানে ওভার ব্রিজ করা একান্ত জরুরী।
গাড়ির চালক আবদুল মান্নান জানান, মহাসড়কের দু’পাশে অনেক হাট বাজার ও অসংখ্য দোকানপাট, গাড়ির স্ট্যান্ড ও গ্যারেজ গড়ে উঠেছে।

এছাড়াও সড়কে এত বেশি আঁকা-বাঁকা বাঁকে প্রতিনিয়ত অত্যন্ত ঝুঁকির নিয়েই আমাদের গাড়ি চালাতে হয়। ফলে আমরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে স্থানে পৌঁছাতে পারিনা। বিশেষ করে পটিয়ার পাইরোল, গৈড়লা, ভাইয়ার দিঘীর পাড় এবং বাদামতল, এলাকা খুবই ঝূঁকিপূর্ণ। এখানে প্রতিদিন দূর্ঘটনা ঘটে। পটিয়া বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতা মো. ইয়াছিন বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এতোবেশি আঁকা-বাঁকা বাঁক রয়েছে যা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়। দু’পাশে দোকানপাট গড়ে উঠার কারণে যানজট ও দুর্ঘটনা লেগেই আছে।

দোহাজারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে। এর আওতায় শীঘ্রই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ভেল্লা পাড়া থেকে ৪ লেনের কাজ শুরু হলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো ঠিক করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.