নির্মাণাধীন ভবন পরিচ্ছন্নতার তদারকীতে ভ্রাম্যমান আদালত 

0

সিটি নিউজঃ নগরীর নির্মাণাধীন ভবন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আছে কিনা তা তদারকীর জন্য চসিক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। এই সমস্ত ভবন সমূহের ছাদ ,কার্নিশ ,রিজার্ভার ,ফুলের টব ,ছাদবাগানে পানি জমে থাকলে সংগে সংগে জরিমানা করা হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই অভিযান শুরু হবে তিনি সভায় জানান।

আজ রবিবার (৪ জুলাই) দুপুরে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে এক সমন্বয় সভা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন সভাপতিত্ব করেন। সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমেদ,বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়া ,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন , চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা ,প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সেলিম আকতার চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, হাসান মুরাদ বিপ্লব , মোহাম্মদ জাবেদ ,সিটি মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম ও চসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী প্রমুখ।

সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রামে এই পর্যন্ত ২৬৩ জন ডেঙ্গ রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার সময়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসবে , সেখানে কারও ডেঙ্গু হয়ে থাকলে তা এখানে ছড়াতে পারে । এটি আশাংকার কথা । আমাদের রাত দিন বিভেদ নেই । চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন তার রুটিন মাপিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরো বলেন ডেঙ্গু রোগে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অনেক আগে থেকে নগরবাসীকে সচেতন করতে কাজ শুরু করেছে। চট্টগ্রামের দৈনিক পত্রিকায় সমূহে একাধিক বার বিজ্ঞাপন প্রচার ,ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাইকিং , ঘরে ঘরে লিফলেট বিলি , বিনামূল্যে নগরস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি এবং চসিক জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাচ্ছি। কিটস শেষ হওয়ায় দু”দিন বন্ধ আছে। সোমবার থেকে আবার চালু হবে। এই কিটস চসিকের নিজস্ব অর্থায়নে ক্রয় করা হয় এবং হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগ যতদিন থাকবে ততদিন এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন ঘরে যদি এডিস মশা থাকে তাহলে বাইরে নিরাপদ রেখে কোনো লাভ নেই । আমরা সকলে নিজের কর্মস্থল ,বাড়ি – ঘর ও আঙ্গিনা নিয়মিত পরিস্কার রাখলে ডেঙ্গু রোধ করা সম্ভব হবে ।এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন এডিস মশা রোধে প্রতিটি ওয়ার্ডে নাল -নর্দমায় লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। এই কার্যক্রম আরো জোরদার করতে ফগার মেশিন ও ওষুধ কেনা হচ্ছে । আমাদের যে ওষুধ আছে তা শতভাগ কার্যকর বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, মসজিদে বয়ানে মুসল্লিদের সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছি। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নাগরিকদের পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সন্তানদের পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, ১ হাজার জ্বরের রোগীর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত মাত্র ২ জন। সিবিসি পরীক্ষার মাধ্যমেও নিশ্চিত হওয়া যায়। কিট যখন প্রয়োজন সরকার নিশ্চিত করবে। হা-হুতাশের দরকার নেই। মানুষের মন যাতে না ভাঙে। পোলিওমুক্ত দেশ গড়েছি, ডেঙ্গুমুক্ত দেশও গড়বো। আগাম বর্ষার কারণে এবার পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। চমেক হাসপাতালে কোনো ডেঙ্গু রোগী মারা যায়নি।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মহসিন উদ্দীন বলেন, ডেঙ্গু রোগের কারণ মশা। মশা জন্মানোর কারণ আমরা নিজেরা। আমাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব। সব ডেঙ্গু ভয়াবহ নয়। কিটের সরবরাহ কম হওয়ায় সবার জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষার দরকার নেই। বর্তমানে চমেকে ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে । এতে ৫০ শতাংশ রোগী চট্টগ্রামে আক্রান্ত হয়েছে। বাকিরা বাইরে আক্রান্ত হয়েছে। তাই ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে দরকার মিডিয়ার সহযোগিতা। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, দেশে চসিকই প্রথম সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডেঙ্গু রোগ পরীক্ষা চালু করেছে। ১ হাজার রোগীর মধ্যে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি। এর মধ্যে ৮০ ভাগ রোগীই ঢাকা ফেরত।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.