পাক-ভারত কূটনীতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত-চলছে প্রত্যাহার বহিস্কার 

0

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ  কাশ্মীর বিভাজন ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কূটৈনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করলো পাকিস্তান। চলছে কুটনৈতক চলছে প্রত্যাহার বহিস্কার।

আজ বুধবার (৭ আগষ্ট) বিকালে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় ইসলামাবাদ। অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় এই পদক্ষেপ নিল ইমরান খানের সরকার।

এদিকে নয়াদিল্লি থেকে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করেছে ভারত আর ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে পাকিস্তান। মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, কাশ্মীর ইস্যু সেটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে ইসলামাবাদে জাতীয় সুরক্ষা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৈঠকে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিল ও ভারতের একতরফা এবং বেআইনি পদক্ষেপ ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান-ভারত দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ের পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনএসসি।একই সঙ্গে আগামী ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস জম্মু-কাশ্মীরিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পালন করা হবে।

এদিকে কাশ্মীরের সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ ও একতরফা’ আখ্যা দিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। একই সঙ্গে ভারত সরকারের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সৌদি আরবের জেদ্দায় ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি দেশগুলোর কাশ্মীর বিষয়ে জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

পরে ওআইসির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সংস্থাটি ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং সেখানে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’ এর নিন্দা জানায়।

ওআইসির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সমীর বকর দিয়াবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরেশি ছাড়াও তুরস্ক, সৌদি আরব, আজারবাইজান এবং নাইজারের স্থায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত

জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই ধরনের পদক্ষেপে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছে দেশটি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ড. আহমেদ আল বান্না বলেন, রাজ্যের পুনর্গঠন স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করে উন্নতির লক্ষ্যে মূলত এটি করা হচ্ছে। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী এটি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।

এনডিটিভি বলছে, মুসলিম অধ্যুষিত আরব অঞ্চলের সংযুক্ত আরব আমিরাতের এমন প্রতিক্রিয়া নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

ভারতের মুসলিম নেতারা যখন বিতর্কিত এ বিলটির মাধ্যমে মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার অভিযোগ করছেন, সেই পরিপ্রেক্ষিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখছে বিজেপি সরকার।

গত সোমবার ভারত সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা (স্বায়ত্বশাসন) বাতিল করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানকে অবহিত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে সোমবার ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের একটি প্রস্তাব রাজ্যসভায় উত্থাপিত হয়। রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে আনা এই প্রস্তাবে পার্লামেন্টের ২৩৯ সদস্যের মধ্যে ১২৫ জন পক্ষে ভোট দেন; বিরোধিতা করে ভোট দেন ৬১ জন।

পার্লামেন্টে ওই প্রস্তাব পাস হয়ে যাওয়ার পর থেকে কাশ্মীরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ভারতের রাজ্যসভায় বাতিল হয়ে যাওয়ার পরপরই এটাকে বেআইনি বলে নিন্দা জানান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একই সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.