সচিবালয় ক্লিনিকে এডিসের লার্ভা !

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : আমি আজ আমার অসুস্থতা অর্থাৎ জ্বর, পাতলা পায়খানা ও শরীর ব্যথার চিকিৎসার জন্য কর্মস্থল বাংলাদেশ সচিবালয়ের ৯ নম্বর ভবনের ক্লিনিকে গেলাম। সাথে ছিল ছোটমেয়েও, তার চোখের সমস্যা। তার চশমা পরিবর্তনের জন্য ডাক্তার পরামর্শ লিখে দেয়ার পর আমি নিজের চিকিৎসার জন্য ৭ নং কক্ষে সিরিয়ালে দাঁড়ালাম।

চেয়ারে বসতে গেলে দেখি পাশের চেয়ারে একটি খালি বালতি। ক্লিনিকের একজন কর্মচারী এসে চেয়ারে বসতে মানা করলেন এবং আরেকটা চেয়ারে জমা কিছু পানির ঢাকনা খুললেন। তার ও লোকজনের কথাবার্তায় বুঝলাম, সেই পানিতে এডিস মশার লার্ভা আছে।

তখন চেয়ারের ওপরে দেয়ালে তাকিয়ে একটি পানির ফিল্টার আবিস্কার করলাম। ৭ নং রুমের একজন ডাক্তার এসিআই এরোসেল নিয়ে সেই পানিতে অনেকবার স্প্রে করতে-করতে বলতে থাকেন, ‘দেখি মরে কি না?’

আমি তখন অতি উৎসাহী হয়ে পানির দিকে তাকিয়ে দেখি, অনেকগুলো লার্ভা লাফাচ্ছে। আমিও জীবনে এডিসের লার্ভা দেখিনি। বাসীপানিতে যেমন পোকা হয় এবং তিড়িংবিড়িং লাফায়, দেখতে তেমনই। আমি ডাক্তারকে বললাম, ‘এই অ্যারোসোল তো আমিও ব্যবহার করি, তাই আমিও দেখতে চাই লার্ভা মরে কি না।’ মেয়েকেও ডেকে এনে দেখালাম এবং ফিল্টারের নিচে জমা পানি থেকে সাবধান করলাম।

আমার ডাক পড়ায় ডাক্তারের চেম্বারে ঢোকার কিছুক্ষণ পর স্প্রেকারী ডাক্তারও সেই চেম্বারে এসে বসলেন। তারা দুজন ডাক্তার একই চেম্বারে বসেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, লার্ভাগুলো কি মরল?

‘নাহ’, তিনি হতাশার সুরে বললেন।

‘তাহলে কী করলেন?’- জিজ্ঞেস করলাম।

অ্যারোসোলে না মরায় আমরাই মেরে ফেললাম।

কীভাবে মারলেন বলেন তো, আমরাও পেলে যাতে মারতে পারি।

‘কাগজ দিয়ে ঘষেই মেরেছি’

পাশের আরেকজন রোগী বললেন, পানিতে লার্ভা বেড়ে উঠলেও এভাবে মারলেও মরে না। আপাত মৃত লার্ভা ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে তাপ দিলেই শুধু মরে। তখন সেই ডাক্তার আমার ব্যবস্থাপত্র লিখতে ব্যস্ত ডাক্তারকে বলতে থাকেন, আমাদের তো মশা কামড়ালো, এখন কী হবে?

সচিবালয়ের মত এলাকায় আবার ক্লিনিক বা হাসপাতালেই যদি লার্ভা থাকে, তাহলে আমরা কতটা অরক্ষিত ভাববার বিষয়। আমি ডেঙ্গুর টেস্ট করতে চাইলেও ডাক্তার বললেন, এখানে সে ব্যবস্থা নেই। তাহলে সচিবালয়ের লোকদের ডেঙ্গু হলে উপায় কী?

লেখক: মৎস্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.